বিএনপি কর্মীকে ৩ হত্যা মামলায় শেখ হাসিনার সঙ্গে আসামি করার অভিযোগ
বিএনপির রাজনীতি করার পাশাপাশি জুলাই বিপ্লবে অংশগ্রহণ করেও নাটোরের সিংড়া উপজেলার বাঁশবাড়িয়া এলাকার এনায়েত করিম রাঙ্গাকে শেখ হাসিনার সঙ্গে তিনটি হত্যা মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছে। জমি-সংক্রান্ত বিরোধে রাঙ্গার ভাতিজা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থী ফায়সাল আহম্মেদ এই মামলাগুলোতে অভিযুক্ত করেছেন বলে দাবি করেছেন রাঙ্গার স্ত্রী উম্মে সালমা পাপিয়া। একই সঙ্গে রাঙ্গাকে গ্রেপ্তারের পর পুলিশ তাকে দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী আখ্যায়িত করায় নিন্দা জানান পাপিয়া।
সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) দুপুরে নাটোর শহরের একটি রেস্তোরাঁয় সংবাদ সম্মেলনে উম্মে সালমা পাপিয়া বলেন, তার স্বামী রাঙ্গা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়া পরিষদের সাবেক আহ্বায়ক।
রাঙ্গার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশ নেওয়া ভিডিও দেখিয়ে তিনি বলেন, বিএনপির রাজনীতি করার কারণে আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন। তবে রাঙ্গার ভাই আবু জাহেদের সঙ্গে জমি-সংক্রান্ত বিরোধ চলছে। এই বিরোধে আবু জাহেদের ছেলে ঢাবি শিক্ষার্থী ও সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লার বন্ধু দাবি করা ফায়সাল আহম্মেদ চক্রান্ত করে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার তিনটি হত্যা মামলায় অভিযুক্ত করেন।
উম্মে সালমা পাপিয়া অভিযোগ করেন, ফায়সাল আহম্মেদ ছাত্রলীগের রাজনীতি করলেও দেশ নতুন করে স্বাধীন হওয়ার পর সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে তাদের ঢাকার বাড়িতে হুমকি দিয়েছেন। ফোনে তাদের শেখ হাসিনার সঙ্গে তার স্বামীকে মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দিয়েছেন। পাশাপাশি ফায়সাল আহম্মেদের বাবা আবু জাহেদ আওয়ামী লীগের নেতা। তার ইন্ধনে এই মামলাগুলোতে অভিযুক্ত করা হয় বলে দাবি করেন পাপিয়া। এই ঘটনার সঠিক তদন্তের দাবি করেন তিনি।
রাঙ্গার চাচাতো ভাই আব্দুল আজিজ বলেন, জমি-সংক্রান্ত বিরোধে তাদের পক্ষ নেওয়ায় তাকে হত্যা মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছে। তিনি কোনোদিনই ঢাকায় যাননি। অথচ ঢাকার সূত্রাপুরে ১৯ জুলাই ছাত্র আন্দোলনে নিহত সাগর হত্যা মামলায় তাকে ৫১ নম্বরে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তিনিও এই ঘটনার জন্য ফায়সাল আহম্মেদকে অভিযুক্ত করেন।
এনায়েত করিম রাঙ্গার বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করে সিংড়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আনোয়ারুল ইসলাম আনু বলেন, এনায়েত করিম রাঙ্গা বিএনপির একজন একনিষ্ঠ কর্মী। তিনি ব্যাবসায়িক কারণে ঢাকাতে থাকতেন। পারিবারিক জমি-সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে তার নিজের ভাতিজা, যে কিনা ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তিনি রাঙ্গাকে এসব মামলায় ফাঁসিয়েছেন বলে জেনেছি। এ নিয়ে সিংড়াতে বেশ আলোচনা-সমালোচনা চলছে। আমি এই ঘটনায় নিন্দা এবং সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানাই।
এসব বিষয় জানতে চাইলে অভিযোগ অস্বীকার করে ফায়সাল আহম্মেদ বলেন, আমি ছাত্রলীগের কোনো পদ-পদবিতে ছিলাম না। হলে থাকার জন্য ছাত্রলীগের রাজনীতিতে ইচ্ছার বিরুদ্ধে অনেককেই থাকা লাগতো। দেশের প্রয়োজনে আমিও ছাত্র আন্দোলনে জড়িয়ে পড়ি। ১৭ জুলাই সূর্যসেন হল থেকে তিনিই ছাত্রলীগমুক্ত করেছেন বলে জানান।
ফায়সাল আহমেদ আরও জানান, তিনি এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত না। তার চাচার সিকিউরিটি এজেন্সির ব্যবসা রয়েছে। তার কর্মীদের অর্থ আত্মসাৎসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। তার শত্রু অনেক। পারিবারিক শত্রুতার কারণে কেনো তাকে অভিযুক্ত করা হচ্ছে তার কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না বলে জানান তিনি।
গোলাম রাব্বানী/এএমকে