‘আমরা ব্যবসায়ীরা ভালো নেই’
চাঁপাইনবাবগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আব্দুল ওয়াহেদ বলেছেন, আমরা ব্যবসায়ীরা ভালো নেই। একদিকে ব্যাংক ইন্টারেস্ট চক্রবিধি হারে ২০ শতাংশ করে ব্যবসায়ীদের প্রদান করতে হচ্ছে। অপর দিকে ডলার ও অন্যান্য বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার অস্থিতিশীল থাকায় ব্যবসা-বাণিজ্যে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে।
শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুরে চেম্বার ভবনের সম্মেলন কক্ষে জেলার ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়ে এই মতবিনিময় এই কথা বলেন তিনি।
ওয়াহেদ আরও বলেন, সোনামসজিদ স্থলবন্দর থেকে বছরে প্রায় ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা সরকার রাজস্ব আদায় করলেও সোনামসজিদ-চাঁপাইনবাবগঞ্জ হাইওয়ে সড়কটি চার লেনে উন্নীত করা হচ্ছে না। এটি জেলাবাসীর দাবি থাকলেও শুধুমাত্র বর্তমান রাস্তার দুই পাশে ২ মিটার করে মোট ৪ মিটার বৃদ্ধি করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ফলে আমাদের দাবি উপেক্ষিত হয়েছে। এ বৃদ্ধির ফলে যানবাহন চলাচলে কোনো উপকার হবে না এবং দুর্ঘটনা রোধ করা সম্ভব হবে না।
সোনামসজিদ স্থলবন্দর নিয়ে চেম্বার সভাপতি বলেন, সোনামসজিদ স্থলবন্দরে ১৯৯২ সালের পরে কাস্টমস অবকাঠামো নির্মাণকাজ হয়নি বললেই চলে। আমরা ইতোমধ্যে জানতে পেরেছি সাসেক প্রকল্পের মাধ্যমে যে প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছিল তা বাস্তবায়নের কোনো অগ্রগতি নেই। আমরা সোনামসজিদ স্থলবন্দরের সাসেক প্রকল্পটি জরুরি ভিত্তিতে বাস্তবায়নের জোর দাবি জানাচ্ছি। এছাড়া স্থলবন্দর এরিয়ার মধ্যে একটি অগ্নিনির্বাপক কেন্দ্র ও ২০ বেড সংবলিত একটি হাসপাতাল করারও জোর দাবি জানাচ্ছি।
এছাড়া রেলপথে পণ্য নিয়ে আসা নিয়ে আব্দুল ওয়াহেদ বলেন, রেলপথে পণ্য আমদানি ও রপ্তানির ক্ষেত্রে প্রায় ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ মালামাল বহনের খরচ (ক্যারিং) কম হয়। আমরা তাই জেলার অন্যতম রহনপুর রেলবন্দরটি পূর্ণাঙ্গ রেলবন্দর প্রতিষ্ঠার জন্য দীর্ঘদিন থেকে দাবি জানিয়ে আসছি। কিন্তু সেটিও হচ্ছে না। রহনপুর রেলবন্দর পূর্ণাঙ্গভাবে চালু হলে নেপাল, ভুটানসহ ভারত থেকে পণ্য আনা নেওয়ার ক্ষেত্রে সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি পাবে এবং বর্তমান বাৎসরিক রাজস্ব আয় ২০০ কোটি থেকে ২০০০ কোটি টাকা বৃদ্ধি পাবে। এছাড়া অসংখ্য মানুষের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে।
জেলায় রপ্তানি অঞ্চল গঠনের দাবি করে আব্দুল ওয়াহেদ আরও বলেন, বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে ১০০টি রপ্তানি প্রক্রিয়া অঞ্চল করার জন্য সরকারের যে সিদ্ধান্ত রয়েছে তার মধ্যে আমরা চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার আমনুরা রেলওয়ে জংশন সংলগ্ন এলাকায় কৃষি রপ্তানি প্রক্রিয়া অঞ্চল করার দাবি জানিয়ে আসছি। আমনুরা রেলজংশন এলাকাটি এমন স্থানে অবস্থিত যেখানে চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, নওগাঁ, বগুড়া জেলার মূল রেলপথের মাধ্যমে ভারত, নেপাল ও ভুটান থেকে কাঁচামাল আমদানি ও আমাদের উৎপাদিত পণ্য রপ্তানিতে পরিবহন খরচ কম হবে। এটা হলে বিশ্ববাজারে আমরা অন্যান্য দেশের সঙ্গে প্রতিযোগিতামূলক বাজারে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় টিকে থাকতে পারব।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, সিনিয়র সহসভাপতি খায়রুল ইসলাম, সহসভাপতি আখতারুল ইসলাম রিমন, পরিচালক আব্দুল আওয়ালসহ অন্যরা। এর আগে চাঁপাইনবাবগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় নবনির্বাচিত কমিটির শপথগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।
আশিক আলী/আরকে