গাইবান্ধার বাণিজ্য মেলা স্থগিতের আদেশ হাইকোর্টের
গাইবান্ধা স্বাধীনতা মাঠ প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া মাসব্যাপী কুটির শিল্প পণ্য ও পাটবস্ত্র মেলা-২০২৫ স্থগিতের আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পরিপত্রের আইন ভঙ্গ করে মেলা আয়োজনের বিরুদ্ধে এক রিট পিটিশন আমলে নিয়ে এই স্থগিতাদেশ দেন হাইকোর্ট। গাইবান্ধা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক এমরান কবির শামীম এই রিট পিটিশন দায়ের করেন।
আগামী ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত মাসব্যাপী গাইবান্ধা শহরের স্বাধীনতা প্রাঙ্গণে এই মেলা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক পরিপত্রে দেখা যায়, স্থানীয় ব্যবসায়ীদের বৃহত্তর সংগঠন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির অনাপত্তিপত্র সাপেক্ষে মেলার অনুমোদন দেয় জেলা প্রশাসন। কিন্তু আইন না মেনে মনগড়াভাবে আবু তালেব নামে এক ব্যক্তিকে এই অনুমতি দেওয়া হয়। যাতে করে ওই ঐতিহ্যবাহী সংগঠনটি ছাড়াও গাইবান্ধার বড় বড় ব্যবসায়িক সংগঠনের নেতারা হতাশ হন।
আরও পড়ুন
চেম্বার নেতারা বলছেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পরিপত্র না মেনে গায়ের জোড়ে আবু তালেব নামে এক ব্যক্তিকে মাসব্যাপী বাণিজ্য মেলা বসানোর অনুমতি দেওয়া হয়। এতে তারা ক্ষুব্ধ হয়ে হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করেন।
গত ১৭ ডিসেম্বর হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি শশাঙ্ক শেখর সরকার এবং বিচারপতি এ কে এম রবিউল হাসানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ শুনানি শেষে মেলা বসানোর সব কার্যক্রম স্থগিত করতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেন। আবেদনকারীর পক্ষে আদালতে যুক্তি তুলে ধরেন অ্যাডভোকেট বিএম মামুনুর রশীদ।
তিনি বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পরিপত্রকে উপেক্ষা করে গাইবান্ধার জেলা প্রশাসন আবু তালেব নামের এক ব্যক্তিকে মাসব্যাপী বাণিজ্য মেলা বসানোর অনুমতি দেয়। এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্ট বিভাগে স্থানীয় চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক এমরান কবীর শামীম একটি রিট পিটিশন দায়ের করেন। শুনানি শেষে আদালত মেলার সব কার্যক্রম স্থগিত করতে বিবাদীকে নির্দেশ দেন। এ সংক্রান্ত আপাতত একটি ল' সার্টিফিকেট বিবাদীদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
হাইকোর্টের স্থগিত আদেশ দ্রুত সময়ে পৌঁছে যাবে বলেও জানান অ্যাডভোকেট বিএম মামুনুর রশীদ।
রিট পিটিশনকারী চেম্বার পরিচালক এমরান কবীর শামীম বলেন, গাইবান্ধার ব্যবসায়ীদের কথা চিন্তা করে চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি প্রতি বছরই এই বাণিজ্য মেলার আয়োজন করে থাকে। কিন্তু ২০২৫ সালের মেলা বসানোর অনুমতি দেওয়া হয় সদর উপজেলার চকমামরোজপুর গ্রামের আবু তালেব নামের এক ব্যক্তিকে। বিষয়টি জেলা প্রশাসকের নজরে আনা হলেও তিনি কানে নেননি। পরে বাধ্য হয়ে হাইকোর্টের দারস্থ হয়েছি। সেখানে আমরা ন্যায়বিচার পেয়েছি।
এ বিষয়ে গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক চৌধুরী মোয়াজ্জম আহমদ বলেন, হাইকোর্ট থেকে মেলার কার্যক্রম স্থগিতাদেশের কাগজ এখনও হাতে পাইনি। আমি বাইরে ছিলাম। অফিসে এসেছে কিনা, জানা নেই। যদি হয়ে থাকে তবে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
রিপন আকন্দ/এমজে