রাতের আঁধারে ৫০ শতক জমির আলুর গাছ উপড়ে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা
রংপুরের পীরগাছায় পারিবারিক শত্রুতার জের ধরে রাতের আঁধারে ৫০ শতক জমির আলুর গাছ উপড়ে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা। বৃহস্পতিবার রাতের কোনো এক সময়ে উপজেলার পূর্ব মনুরছড়া (মিষ্টি পাড়া) গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত সেনা সার্জেন্ট আব্দুল হালিমের আলুর জমিতে এ ঘটনা ঘটে। শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) সকালে জমিতে গিয়ে দেখা যায় আলুর চারা তোলা।
এ ঘটনার পেছনে আপন ছোট ভাই, ভাতিজা ও কয়েকজন প্রতিবেশীর জড়িত থাকার বিষয়ে অভিযোগ করছেন ভুক্তভোগী আব্দুল হালিম। এতে প্রায় ৩ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতিসাধন হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে।
শুক্রবার সকালে সরেজমিনে উপজেলার পূর্ব মনুরছড়া (মিষ্টি পাড়া) গ্রামে আলু ক্ষেতে গিয়ে দেখা যায়, উপড়ে ফেলা আলুর গাছ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে আছে। ভুক্তভোগী হালিম মিয়া লাঠিতে ভর দিয়ে উপড়ে ফেলা আলুর গাছ হাতে নিয়ে হাউমাউ করে কাঁদছেন।
বিষয়টি জানাজানি হলে উৎসুক মানুষজন আলুর জমিতে ভিড় করেন। এ সময় তারাও ন্যাক্কারজনক ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
এ সময় হালিম মিয়া জানান, তার আপন ভাই রবিউল ইসলাম, ভাতিজা শাহীন, শিবলু, প্রতিবেশী কয়েকজনের সঙ্গে তার জমিজমা নিয়ে দীর্ঘদিন থেকে বিরোধ চলে আসছে। এ নিয়ে কয়েকটি মামলাও বিচারাধীন রয়েছে। ইতিপূর্বে তাকে আক্রমণ করে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে তার দুই পা ভেঙে দেওয়া হয়েছে। তিনি এখন পঙ্গু। লাঠিতে ভর দিয়ে চলাচল করেন।
হালিম মিয়ার স্ত্রী মাহমুদা বেগম জানান, চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার পর তারা জমি আবাদ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। তাদের ক্রয় করা ৫০ শতক জমিতে আলু লাগানো হয়েছে। বিরোধী পক্ষ ধারাবাহিকভাবে তাদের এই সর্বনাশ করেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন।
তার ছেলে মেহেদী হাসান বলেন, আমরা বিগত ৯ মাস এলাকা ছেড়ে পালিয়েছিলাম। পরে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি সহায়তায় বাড়িতে আসলেও আমার চাচারা সব সময় ক্ষতির চেষ্টা করছে। তারাই আমাদের আলু চারা তুলে ফেলেছে। আমরা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি।
এ সময় স্থানীয়রা বলেন, মানুষের সঙ্গে মানুষের শত্রুতা থাকতেই পারে। তাই বলে ফসলের সঙ্গে শত্রুতা দেখাতে হবে। যারাই এই ঘটনা ঘটিয়েছে, তারা ন্যাক্কারজনক কাজ করেছে। আমাো এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করছি।
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্তদের একজন রবিউল ইসলামের বাড়িতে গেলে তিনি বলেন, আমি একটি কোম্পানিতে চাকরি করি। আমি রাতে বাইরে ছিলাম। এ ঘটনার বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। আমাদের উভয়ের মাঝে মামলা-মোকদ্দমা ছিল। সেগুলো মীমাংসা হয়েছে। এখন কেউ যদি আমাদেরকে সন্দেহ করে তাহলে তো করার কিছু নাই।
জানতে চাইলে পীরগাছা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরে আলম সিদ্দিকী বলেন, অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ফরহাদুজ্জামান ফারুক/এএমকে