বান্দরবানে ত্রিপুরাপল্লিতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় গ্রেপ্তার ৪
বান্দরবানের লামা উপজেলার টংঙ্গ্যা ঝিরিপাড়ায় বসবাসকারী খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের ত্রিপুরাপল্লিতে গভীর রাতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন।
বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) সকালে লামা উপজেলার সরই ইউনিয়নের টঙ্গা ঝিড়িপাড়ায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান। এ সময় পুলিশ সুপার মো. শহীদুল্লাহ কাউছার তার সঙ্গে ছিলেন।
পুলিশ সুপার মো. শহীদুল্লাহ কাউছার বলেন, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় গতকাল থেকে অভিযান পরিচালনা করে ইব্রাহিম, স্টিফেন ত্রিপুরা, মসৈনিয়া ত্রিপুরা ও যোয়াকিম ত্রিপুরা নামে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে আরও কারা জড়িত তা উদঘাটনে তাদের রিমান্ডের আবেদন করা হবে।
তিনি জানান, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত গুঙ্গামনি ত্রিপুরা বাদী হয়ে মামলা করেছেন। মামলায় ৭ জনকে আসামি করা হয়েছে। যাদের মধ্যে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাকে চাঞ্চল্যকর উল্লেখ করে পুলিশ সুপার বলেন, এখানে দুইটি পাড়া রয়েছে। টংঙ্গা ঝিড়ি ও সফি চন্দ্র পাড়ায় বসবাস করে ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের খ্রিস্টান ধর্মালম্বীরা। পূর্বে সফি চন্দ্রপাড়ার ইব্রাহীম নামে একজন এই জায়গার দেখাশোনা করতেন। পাশাপাশি সফি চন্দ্রপাড়ার ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের লোকজন সেখানে বসবাস ও দেখাশোনা করতেন। ৬ মাস আগে তারা এই জায়গা থেকে চলে গেলে টংঙ্গা ঝিরির ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের লোকজন এখানে বসবাস করতে শুরু করেন।
টংঙ্গা ঝিরির বাসিন্দা অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত গুঙ্গামনি ত্রিপুরা জানান, পূর্বে যারা এই জায়গায় ছিলেন তারা ঘরগুলো পুড়িয়ে দিয়েছেন। এর আগে বিভিন্ন সময়ে তারা চাঁদা দাবি করেন।
পুলিশ সুপার বলেন, গতকালের ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে অভিযানে নামে, স্থানীয়দের সাথে কথা বলে যে টুকু জানা গেছে তা হলো পূর্ব বিরোধিতা ও জায়গা জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।
জায়গা সম্পর্কিত বিরোধের বিষয়ে জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন বলেন, ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের দুইটি পাড়ায় বসবাসকারী জনসাধারণের মধ্যে বিরোধের জেরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটেছে। ঘটনাস্থল পুলিশের সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের বাগান বলে লোকমুখে প্রচলিত আছে। তবে এই সম্পর্কিত কোনো তথ্য, প্রমাণ ও নথি আমাদের হাতে আসেনি।
তিনি বলেন, জায়গা সম্পর্কিত মামলার কার্যক্রম শুরু হলে তখন জায়গার দখল বেদখল নিয়ে দুই পক্ষের মাঝে দ্বন্দ্ব শুরু হয়, তবে এ জন্য ঘর পোড়ানোর ঘটনা খুবই দুঃখজনক। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার জড়িতদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। ক্ষতিগ্রস্তদের প্রয়োজন হলে পুনর্বাসনের বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হবে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ হতে ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হয়েছে।
শহিদুল/আরএআর