চোখ রাঙিয়ে আর বাংলাদেশকে শাসনের চিন্তা করিয়েন না
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর থেকে শুরু করে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত যেসব গুম, খুন, গণহত্যা হয়েছে সবকিছুর বিচার জনগণ চায়। আয়নাঘর, সেনা হত্যা, জামায়াত নেতাদের হত্যা, সবশেষ ছাত্র-জনতাকে গণহত্যার বিচার করতে হবে।
বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) খুলনার পাইকগাছার গদাইপুর ফুটবল মাঠে অনুষ্ঠিত পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ ভারতের কাছে দেশকে বন্ধক ও ইজারা দিয়েছিল। এই দেশের সবকিছু ভারতকে উজাড় করে দিয়েছে। তখনকার প্রধানমন্ত্রী (শেখ হাসিনা) বলেছিলেন, ভারতকে এত দিয়েছি যে ভারত সারা জীবন স্মরণ রাখবে। সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেছিলেন, দিলেন তো অনেক, এখন কি চাইবেন কিছু? তিনি উত্তর দিয়েছিলেন আমি প্রতিদান চাই না। দেশের সবকিছু তুলে দিয়ে তিনি বলছেন তিনি প্রতিদান চান না। আসলে তিনি প্রধানমন্ত্রী ছিলেন না, তিনি ছিলেন সেবাদাসী। এজন্য তিনি দাসত্বের শৃঙ্খলে বাংলাদেশের জনগণকে বন্দি করতে চেয়েছিলেন। আলহামদুলিল্লাহ আমাদের সন্তানদের নেতৃত্বে সেই শৃঙ্খল জাতি ভেঙে ফেলেছে। আর এই জাতির গলায় শৃঙ্খল পরানো যাবে না ইনশাল্লাহ।
ভারতের প্রতি স্পষ্ট বার্তা দিয়ে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আপনাদের প্রতিবেশী হিসেবে সম্মান করি, আপনারাও আমাদেরকে প্রতিবেশী হিসেবে সম্মান করতে শিখুন। ভারত থেকে চোখ রাঙিয়ে আর বাংলাদেশকে শাসনের চিন্তা করবেন না। বাংলাদেশের মানুষ এখন চোখে চোখ রেখে সাহস করে কথা বলার সাহস সঞ্চয় করেছে। যে দেশের মানুষ বুক খুলে দিয়ে ডানা মেলে বলতে পারে গুলি কর, সেই দেশের মানুষকে আর ভয় দেখাবেন না। অনুরোধ করবো আমরা শান্তিতে থাকি, সবাই শান্তিতে থাকুক। আমরা কারও অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করি না। আমাদের ব্যাপারে কেউ হস্তক্ষেপ করুক সেটাও আমরা চাই না। সেখান (ভারত) থেকে আমাদের জন্য অশান্তি সৃষ্টি করবেন না।
তিনি আরও বলেন, আগামীর বাংলাদেশ আমরা যুবকদের হাতে তুলে দিতে চাই। তারাই পারবে একটি শোষণ ও নির্যাতন মুক্ত এবং বৈষম্যহীন সমাজ গড়তে।
বিগত তিনটি নির্বাচন নিয়ে জামায়াতের আমির বলেন, এসব নির্বাচনে জনগণ ভোট দিতে পারেনি। আওয়ামী লীগ সরকার তাদের নিজেদের মতো করে প্রার্থী দিয়ে নিজেরা জয়ী হয়ে এ দেশ পরিচালনা করেছে।
২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচন নিয়ে তিনি আরও বলেন, ওই নির্বাচন ছিল আমি ও ডামির নির্বাচন, যা এই দেশের জনগণ কখনোই মেনে নেয়নি এবং আগামীতেও মেনে নেবে না।
এ সময় তিনি দলের নেতাকর্মীদের সকলকে সঙ্গে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।
উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা শাহীদুর রহমানের সভাপতিত্বে পথসভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি ও খুলনা অঞ্চলের পরিচালক মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক, সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ শাহ মুহাম্মদ রুহুল কুদ্দুস, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও খুলনা অঞ্চলের সহকারী পরিচালক মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও খুলনা জেলা আমির মাওলানা এমরান হুসাইন, সাতক্ষীরা জেলার আমির মাওলানা শহিদুল ইসলাম মুকুল।
মোহাম্মদ মিলন/এমজেইউ