গোয়ালন্দে একই স্থানে বিএনপির দুই গ্রুপের জনসভার ডাক, জনমনে আতঙ্ক
রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ পৌর শহরের প্রাণকেন্দ্র শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ফকির মহিউদ্দিন আনসার ক্লাব চত্বরে আগামী ৫ জানুয়ারি একই স্থানে বিএনপির দুই গ্রুপ জনসভার আহ্বান করায় জনমনে উদ্বেগ-উৎকন্ঠার সৃষ্টি হয়েছে।
গতকাল বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় উপজেলার রেলস্টেশন সংলগ্ন গোয়ালন্দ উপজেলা ও পৌর বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে জেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আসলাম সমর্থিত উপজেলা বিএনপি, পৌর ও অঙ্গ সংগঠনের নেতারা সংবাদ সম্মেলন করে জনসভার ঘোষণা দেন।
সংবাদ সম্মেলনে গোয়ালন্দ উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি আইয়ুব আলী, সাধারণ সম্পাদক মোশারফ আহম্মেদ ও পৌর বিএনপির সভাপতি আবুল কাশেম মন্ডল প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এর আগে গত ২০ ডিসেম্বর গোয়ালন্দ রেলস্টেশন এলাকায় বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয়ে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ফকির মহিউদ্দিন আনসার ক্লাব চত্বরে জনসভা আহ্বান করে প্রস্তুতি সভা করেন জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক এমপি খৈয়ম সমর্থিত নেতারা। এ জনসভায় অন্তত ২০ হাজার মানুষের সমাগম ঘটানোর ঘোষণা দিয়ে বক্তব্য রাখেন গোয়ালন্দ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি সুলতান নুর ইসলাম মুন্নু মোল্লা, উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবলু ও রাজবাড়ী জেলা বিএনপির উপদেষ্টা নাজিরুল ইসলাম তিতাস প্রমুখ।
তারা জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে রাজবাড়ী জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আলী নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়মের নাম ঘোষণা করেন।
এদিকে গতকাল বুধবার সংবাদ সম্মেলনে উপজেলা ও পৌর বিএনপির নেতারা ঘোষণা দিয়ে বলেন, আগামী ৫ জানুয়ারি খৈয়মের জনসভা প্রতিহত করা হবে। বিএনপি করতে হলে বেগম খালেদা জিয়া ও মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের অনুমোদিত জেলা ও উপজেলা বিএনপির নেতৃত্বে করতে হবে।
জনসভা প্রতিহতের বিষয়ে গোয়ালন্দ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি সুলতান নুর ইসলাম মুন্নু মোল্লা বলেন, আমরা কোনো সংঘাত চাই না। রাজনীতিকে রাজনীতি দিয়েই মোকাবিলা করব। নেতারা বসে পুনরায় সিদ্ধান্ত নেব। তবে আমাদের বিরুদ্ধে আজকে সংবাদ সম্মেলনে তারা বহু মিথ্যা ও উস্কানিমূলক বক্তব্য রেখেছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, আমরা অধিকাংশ নেতা জেলা ও উপজেলা বিএনপির বর্তমান ও সাবেক কমিটিতে বিদ্যমান আছি। উভয় কমিটির মেয়াদ বহু আগেই উত্তীর্ণ হয়ে গেছে। আমরা মেয়াদ উত্তীর্ণ সব কমিটি বিলুপ্ত করে দ্রুত সময়ের মধ্যে কাউন্সিল দাবি করছি।
স্থানীয়রা বলেন, একই জায়গায় একই সময়ে বিএনপির দুই গ্রুপের জনসভা ডাকায় আমরা আতঙ্কিত। একই জায়গায় বিএনপির খৈয়ম গ্রুপ ও আসলাম মিয়া গ্রুপ জনসভা ডেকেছে। দুই গ্রুপের একই জায়গায় জনসভা হলে মারামারি খুনোখুনি ও সংঘাত তৈরি হবে।
এ প্রসঙ্গে গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ রাকিবুল ইসলাম বলেন, একই স্থানে বিএনপির দুই গ্রুপের জনসভার কথা থাকলেও কোনো পক্ষই লিখিতভাবে তাদেরকে কিছু জানায়নি। বিষয়টি উদ্বেগজনক। এ নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে।
মীর সামসুজ্জামান সৌরভ/আরকে