সাদপন্থিদের গ্রেপ্তারসহ ৫ দফা দাবি ইত্তেফাকুল উলামার
ইজতেমার ময়দানে ঘুমন্ত মানুষের ওপর সাদপন্থিদের বর্বর হামলার প্রতিবাদে ময়মনসিংহে মহাসমাবেশ করেছে বৃহত্তর ময়মনসিংহের আলেম-উলামাদের অরাজনৈতিক সংগঠন ইত্তেফাকুল উলামা মোমেনশাহী। এ সময় খুনি সাদপন্থিদের গ্রেপ্তারসহ ৫ দফা দাবি জানিয়ে ঘোষণাপত্র পাঠ করা হয়।
সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) দুপুর সোয়া ১টায় ময়মনসিংহ নগরীর ঐতিহ্যবাহী আঞ্জুমান ঈদগাহ মাঠে অনুষ্ঠিত মহাসামাবেশে এই ঘোষণাপত্র পাঠ করেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আবুল কালাম আজাদ।
ইত্তেফাকুল উলামা আয়োজিত এই মহাসমাবেশে হাজার হাজার আলেম, উলামা ও ধর্মপ্রাণ মানুষ দাবিগুলোর সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে স্লোগান দেন।
দাবিগুলো হল- খুনি সাদপন্থিদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে উপযুক্ত বিচার নিশ্চিত করতে হবে, দাওয়াত ও তাবলীগের মেহনত সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য খুনি সন্ত্রাসীদের কার্যক্রম স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ করতে হবে, ময়মনসিংহ বিভাগ থেকে যেসব সন্ত্রাসী টঙ্গীর নৃশংস হত্যাকাণ্ডে অংশগ্রহণে করেছে তাদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করতে হবে, কাকরাইল মসজিদ ও টঙ্গী ইজতেমা মাঠে সাদপন্থিদের সকল কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে হবে, দেশ অস্থিতিশীল করার সঙ্গে জড়িত সাদপন্থি গডফাদারদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে এবং মব জাস্টিস প্রতিরোধ করতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
এর আগে এদিন সকাল ১০টা থেকে নগরীর আঞ্জুমান ঈদগাহ মাঠে শুরু হওয়া এই মহাসমাবেশে দলে দলে মাদরাসার শিক্ষার্থী, আলেম-উলামা ও হাজার হাজার ধর্মপ্রাণ মানুষ জড়ো হতে শুরু করে। একপর্যায়ে মহাসমাবেশ মাঠ পূর্ণ হয়ে সামনের সড়কে ছড়িয়ে পড়ে মানুষের ব্যাপক উপস্থিতি।
মহাসমাবেশে মাওলানা আব্দুর রহমান হাফেজ্জীর সভাপতিত্বে মুফতি শরীফুর রহমানের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন আল্লামা খালেদ সাইফুল্লাহ সাদী, প্রফেসর হাফিজ উদ্দিন, প্রফেসর ডা. মামুন, ক্যাপ্টেন শফিক সালাউদ্দিন বাবু, মুফতি মুহিব্বুল্লাহ, মুফতি মাহাবুল্লাহ, মুফতি আব্দুল্লাহ আল মামুন, মাওলানা মঞ্জুরুল হক, মাওলানা মুহাম্মদ প্রমুখ।
এ সময় বক্তারা বলেন, সাদপন্থিরা ইসলামের কথা বলে সহজ-সরল মানুষদের বিপথগামী করছে। ইসলাম ও দাওয়াতে তাবলীগ নিয়ে বাইরের দেশের ইশারায় তারা ষড়যন্ত্র করে পরিকল্পিতভাবে বিবেদ সৃষ্টি করছে। এতে সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। আমরা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিচার চাই।
তারা আরও বলেন, দেশের সাধারণ ধর্মপ্রাণ মানুষ কোন একক ব্যক্তির অনুসরণ করে না। আমরা কোনো ব্যক্তিপন্থি নই। ইসলামের পথে আমরা হকপন্থি হিসেবে কাজ করতে চাই। ধর্ম ও দেশের যে কোনো পরিস্থিতিতে শুরায়ে নেজামে আলোচনা করেই আমরা কাজ করছি। আমরা আজকের এই মহাসমাবেশ থেকে মনে করি, ইজতেমা ময়দানে হত্যাকারীরা পার পেয়ে গেলে দেশে বিচারহীনতার সংস্কৃতি তৈরি হবে এবং মব জাস্টিস ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়বে। যার দায় বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার কোনভাবে এড়াতে পারবে না।
আমান উল্লাহ আকন্দ/আরএআর