জয়পুরহাটে প্রিপেইড মিটার স্থাপনের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি
জয়পুরহাটে নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই পিএলসির (নেসকো) গ্রাহকদের বিদ্যুতের প্রিপেইড মিটার স্থাপনসংক্রান্ত সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
শনিবার (২১ ডিসেম্বর) বিকেলে জেলা শহরের জিরো পয়েন্টে ‘সচেতন নাগরিক সমাজ’ এর ব্যানারে দ্বিতীয়বারের মতো এ কর্মসূচি পালিত হয়। এর আগে একই দাবিতে গত বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) মানববন্ধন করেন তারা। কর্মসূচিতে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন, জেলার সচেতন নাগরিক সমাজের আহ্বায়ক লোকমান হোসেন, সদস্য সচিব ওবায়দুল্লাহ মুসা, সদস্য শাহাদাত হোসেন, সাবু হোসেন, আবু সায়েম প্রমুখ।
আরও পড়ুন
বক্তারা বলেন, প্রিপেইড মিটার লাগানোর প্রতিবাদে এর আগে মানববন্ধন করা হয়েছিল। এরপর নেসকোর প্রকৌশলীর সঙ্গে বসে বলা হয়েছিল, গ্রাহকদের সাথে আলোচনা করে এই মিটার স্থাপন করতে। কিন্তু তাো তা করছেন না। জোরপূর্বক, বিভিন্ন হুমকি দিয়ে প্রিপেইড মিটার লাগিয়ে দিচ্ছেন। প্রিপেইড মিটারে গ্রাহকদের সুবিধা হবে কি না, তা তারা কোন ভাবে জানাচ্ছেন না। কিন্তু আমরা ইতিমধ্যে জানতে পেরেছি, এই মিটারে গ্রাহকদের নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে। মিটার কার্ডে ব্যালেন্স উঠালে বিভিন্ন চার্জ কেটে নেওয়ার পর যা টাকা ওঠানো হবে সেখান থেকে অল্প কিছু টাকা থাকে। সেই টাকায় বিদ্যুৎ ব্যবহার করতে হবে। এই নানামুখী জটিলতা আমরা চাই না।
সচেতন নাগরিক সমাজের ওবায়দুল্লাহ মুসা বলেন, প্রিপেইড মিটার লাগানোর জন্য নাকি একটি কোম্পানিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রতি মাসে মিটার ভাড়া দিতে হবে, ডিমান্ড চার্জ দিতে হবে। এছাড়াও আরও কিছু চার্জ দিতে হবে। আবার ব্যালেন্সে টাকা ভরানোর সময় চার্জ দিতে হবে। মিটার ভাড়া কতদিন দিবো, তার কোনো সীমা নেই। আমাদের ডিজিটাল মিটার তারা নিয়ে যাবে, এটার টাকাও আমরা পাবো না। ইমার্জেন্সি ব্যালেন্স নিলে আবার সুদ দিতে হবে। ফেজ হিসেবে টাকার পরিমাণ বাড়বে। এসব কোনো বিষয়েই বিদ্যুতের কর্মকর্তারা আমাদের অবগত করছেন না। গ্রাহকদের সুবিধা-অসুবিধার কথা শুনছেন না। জোরপূর্বক হুমকির মাধ্যমে এই মিটার লাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আমরা এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানাই।
নেসকো সূত্রে জানা গেছে, নেসকোর অধীন জেলায় ৩৩ হাজারের বেশি গ্রাহক রয়েছে। গত ১০ ডিসেম্বর প্রিপেইড মিটার লাগানো শুরু হয়েছে। বর্তমানে থ্রি-ফেজ গ্রাহকদের প্রিপেইড মিটার লাগানো হচ্ছে। এই মিটার লাগানো হলে ইউনিট কম বা বেশি লেখা হলো কি না তার জন্য গ্রাহকরা অভিযোগ দিতে পারবেন না। গ্রাহকরা যা বিদ্যুৎ ব্যবহার করবেন, সেই মোতাবেক বিল ব্যালেন্স থেকে কাটা পড়বে।
জয়পুরহাট নেসকোর নির্বাহী প্রকৌশলী সুমন সূত্রধর জানিয়েছেন, প্রিপেইড মিটারে আবাসিক একজন গ্রাহক যে লোড ব্যবহার করবেন তার উপর রিচার্জে ৫ শতাংশ ভ্যাট, ডিমান্ড চার্জ লোডের সঙ্গে ৪২ গুণ করে যা আসবে তাই, মিটার রেন্ট (ভাড়া) ৪০ টাকা আর রিবেটসহ মোট চার্জ কেটে নেওয়া হবে। একইভাবে থ্রি-ফেজের ক্ষেত্রেও। তবে থ্রি-ফেজের ডিমান্ড চার্জ লোডের সাথে ৯০ গুণ করে যা আসবে তাই হবে। আর মিটার রেন্ট ২৫০ টাকা হবে। এক কথায় বর্তমানে যেভাবে বিল দেওয়া হচ্ছে, ঠিক তেমনভাবেই বিল রিচার্জ থেকে কাটা পড়বে।
চম্পক কুমার/এআইএস