২০২৫ সালের মধ্যেই নির্বাচন দিতে হবে : ডা. মোহাম্মদ তাহের
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক হতে হবে এবং সেটি ২০২৫ সালের মধ্যেই হতে হবে, প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন সম্ভব। যদি তারা আংশিক সংস্কার করে, আমরা মনে করি তিন থেকে ছয় মাসের মধ্যেই প্রয়োজনীয় সংস্কার সাধন করা সম্ভব। তারপর আগামী বছরের শেষের দিকে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, এটা জামায়াতে ইসলামীর দাবি।
শনিবার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে জামায়াতে ইসলামীর যুব সম্মেলনের প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ডা. তাহের বলেন, আমাদেরকে বলা হয় নারীর অধিকার থাকবে কি না? আমার পরিবারের নারীরা চাকরি করতে পারবে কি না? আপনারা জানেন, আমার স্ত্রী একজন প্রফেসর। আমার বড় মেয়ে ডাক্তার, দ্বিতীয় মেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং ছোট মেয়ে একজন আর্কিটেক্ট। তাহলে আমরা ক্ষমতায় এলে যদি চাকরি করা না যায়, তাহলে আমার পরিবার তো চাকরি করতে পারছে না। আসলে এটা আমাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার।
তিনি আরও বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে আরও একটি অপপ্রচার আছে যে, এই দেশে যদি জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় আসে তাহলে মাইনরিটির ওপর জুলুম হবে। এটাও একটি ডাহা মিথ্যা প্রচারণা। চৌদ্দগ্রামের হিন্দুরাই এর সাক্ষ্য দেবেন। আমি যখন এমপি ছিলাম তাদের ওপর কোনো জুলুম হয়েছে কি না। এই চৌদ্দগ্রাম বাজারে একটি মন্দির ছিল, আওয়ামী লীগ দখল করে রেখেছিল। আমি নিজে দাঁড়িয়ে তাদের মন্দির রক্ষা করে, চতুর্দিকে ওয়াল করে তাদের প্রটেক্ট করেছি। এখানকার হিন্দুদের যিনি সভাপতি, ভারতীয় একটি মিডিয়ার মাধ্যমে উনি এই ঘটনা বলেছেন এবং সাক্ষ্য দিয়েছেন। আমরা কারও ওপরই কোনো কিছু চাপিয়ে দেব না। প্রত্যেকেই তার ইচ্ছা অনুসারে অধিকার নিয়ে বাস করতে পারবেন। জামায়াতে ইসলামী একটি কল্যাণের রাষ্ট্র চায়। এই কল্যাণরাষ্ট্র মানেই হচ্ছে ন্যায়বিচার পাবেন, অধিকার পাবেন, ইজ্জত পাবেন। প্রত্যেকটি মানুষ দল-মত নির্বিশেষে ন্যায্য অধিকার ভোগ করতে পারবে, নির্ভয়ে-নির্দ্বিধায়। রাষ্ট্রের দায়িত্বই থাকবে মানুষের কাছে তার অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া।
জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির বলেন, বিগত ১৫ বছর অন্য দল করেছেন কিংবা যারা কোনো দলই করেননি, উভয়ই আওয়ামী লীগের হাতে নির্যাতিত হয়েছেন। আওয়ামী লীগ এক গ্রুপ আরেক গ্রুপের ওপর হামলা করেছে। এক গ্রুপ আরেক গ্রুপের লোককে হত্যা করেছে। শুধু আমার ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ কর্তৃক ৮ জন আওয়ামী লীগের কর্মী নিহত হয়েছে। যেখানে আওয়ামী লীগ আওয়ামী লীগকে হত্যা করে সেখানে অন্যান্য দলের লোকদের ওপর কী অত্যাচার হয়েছে সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। আমি কোনো হত্যাকাণ্ড চাই না। আপনারা যদি আমাকে নির্বাচিত করেন চৌদ্দগ্রামে কোনো হত্যাকাণ্ড হতে দেব না।
তিনি আরও বলেন, ইতিহাস বলে ফ্যাসিজম একবার বিদায় হলে আর কখনো ফিরে আসে না, এই দেশেও সেটা আর হবে না। তাই বিভ্রান্ত হওয়ার কোনো কারণ নেই।
এ সময় কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি ড. সরওয়ার উদ্দিন সিদ্দিকী, ঢাকা মহানগর উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি মু. ইয়াসিন আরাফাত, কুমিল্লা মহানগর জামায়াতের আমির কাজী দ্বীন মোহাম্মদ, চৌদ্দগ্রাম উপজেলা জামায়াতের আমির মু. মাহফুজুর রহমানসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
আরিফ আজগর/এমজেইউ