বিজয় দিবসে বিনা টিকিটে ঘোরা যাবে শালবন বিহার ও ময়নামতি জাদুঘর
মহান বিজয় দিবসে বিনা টিকিটে কুমিল্লার ঐতিহাসিক প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন শালবন বিহার ও ময়নামতি জাদুঘর ঘোরার সুযোগ পাচ্ছেন দর্শনার্থীরা। রোববার (১৫ ডিসেম্বর) রাতে কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের নেজারত ডেপুটি কালেক্টর (এনডিসি) মো. ফরিদুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের কাস্টোডিয়ান মো. শাহীন আলমের বরাত দিয়ে এনডিসি ফরিদুল ইসলাম জানান, জেলা প্রশাসনের মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে শালবন বিহার ও ময়নামতি জাদুঘরে বিনা টিকিটেই প্রবেশ করতে পারবেন দর্শনার্থীরা। এদিন সকাল ৯টা থেকে দর্শনীয় স্থান দুটো উন্মুক্ত রাখা হবে।
শালবন বিহার ও ময়নামতি জাদুঘর সূত্রে জানা গেছে, ঐতিহাসিক প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন শালবন বিহার ও ময়নামতি জাদুঘরে সারা বছরই দর্শনার্থীরা ঘুরতে আসেন। বর্তমানে প্রাপ্তবয়স্কদের টিকিটের দাম ৩০ টাকা। ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য ১০ টাকা। আর পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত শিশুরা বিনা টিকিটে প্রবেশ করার সুযোগ পাচ্ছে। এ ছাড়া সার্কভুক্ত দেশের বিদেশি পর্যটকেরা ২০০ টাকা ও অন্যান্য দেশের পর্যটকেরা ৪০০ টাকায় এখানে প্রবেশ করতে পারছেন। শালবন বিহার ও ময়নামতি জাদুঘর ঘুরে দেখার জন্য একই পরিমাণ টাকায় আলাদাভাবে টিকিট কাটতে হয়।
কুমিল্লা প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের কাস্টোডিয়ান মো. শাহীন আলম বলেন, বিজয় দিবস ও স্বাধীনতা দিবসে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের নির্দেশনা বা সিদ্ধান্ত থাকে দর্শনার্থীদের বিনা টিকিটে প্রবেশের সুযোগ দেওয়ার জন্য। এবার অধিদপ্তরের সিদ্ধান্তের পাশাপাশি জেলা প্রশাসকও এ নিয়ে একটি রেজল্যুশন করেছেন। ১৬ ডিসেম্বর দর্শনার্থীদের কোলাহলে পুরো শালবন বিহার ও ময়নামতি জাদুঘর এলাকা মুখর থাকবে বলে আশা করছি।
কোটবাড়ীর ময়নামতি জাদুঘরের কাছেই শালবন বৌদ্ধবিহার। অষ্টম শতকে নির্মিত এই প্রত্ন সম্পদের অপরূপ সৌন্দর্য দেখতে শত শত পর্যটক প্রতিদিন ভিড় করেন। শীতের মৌসুমে দর্শনার্থী সমাগম বাড়ে। শালবন বিহার ছাড়া কোটবাড়ী ও এর আশপাশের এলাকায় রয়েছে নানা প্রত্ন সম্পদ। এসবের মধ্যে রূপবান মুড়া, কোটালিমুড়া, ইটাখলা মুড়া, আনন্দবিহার, ভোজবিহার, রানির বাংলো প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।
কুমিল্লা প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, শালবন বৌদ্ধবিহারের আয়তন ৩৭ একর। অমূল্য প্রত্ন সম্পদে সমৃদ্ধ স্থানটি আগে শালবন রাজার বাড়ি নামে পরিচিত ছিল। কিন্তু সেখানে ১৯৫৫ সালে খননের পর ৫৫০ ফুট এলাকাজুড়ে বিস্তৃত একটি বৌদ্ধ বিহারের ভূমি নকশা উন্মোচিত হয়। এতে ১১৫টি ভিক্ষু কক্ষ রয়েছে। লালমাই পাহাড় এলাকায় বিহারটির আশপাশে এক সময় শাল, গজারির ঘন বন ছিল। তাই বিহারটির নাম দেওয়া হয় শালবন বিহার। খননে প্রাপ্ত একটি পোড়ামাটির নিদর্শন থেকে জানা যায়, দেব বংশের চতুর্থ রাজা শ্রী ভবদেব খ্রিষ্টীয় অষ্টম শতকে এ বিহার নির্মাণ করেন। এ বিহার থেকে সংগৃহীত বিপুল পরিমাণ প্রত্ন সম্পদ ময়নামতি জাদুঘরে প্রদর্শিত হচ্ছে।
আরিফ আজগর/আরএআর