ভারত গরু বন্ধ করেছে বলে কি আমরা এখন গরু খাই না
নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, দুই দেশের ব্যবসা বাণিজ্যের সঙ্গে লাখ লাখ মানুষ জড়িত। রাজনৈতিক অবরোধ বিভিন্ন সময়ে দুই পাশেই হয়ে থাকে। এ কারণে ২/১ দিনের সমস্যা হতে পারে। তবে ভারতের ব্যবসায়ীরা এসব মেনে নেবে না। তারা এই বাজারটাকে নষ্ট করবে না। তাই আমাদের চিন্তা করার কোনো কারণ নেই, ব্যবসা নষ্ট করলে তাদের বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
শনিবার (৭ ডিসেম্বর) দুপুরে সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ব্যবসা-বাণিজ্যে ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক না রাখলে তারাই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ভারত তো আমাদের বিনা পয়সায় মালামাল দেয় না। পয়সা নিয়েই দেয়। তারা যদি মনে করে ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ করবে বন্ধ করুক। তারা গরু বন্ধ করেছে। তাই বলে কি আমরা এখন গরু খাই না। ব্যবসা বন্ধ করলে ভারত অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
তিনি আরও বলেন, ভারতীয় মিডিয়ার অপপ্রচারের কারণে আমাদের থেকে তাদের বেশি ক্ষতি হচ্ছে। কারণ বাংলাদেশের মানুষ ভারতের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কে থাকতে চায়। কিন্তু এসব দেখলে তারা ভারতের বিপক্ষে দাঁড়িয়ে যায়। ভারতীয় মিডিয়া গুজব ছড়িয়ে তাদের টিআরপি বাড়াচ্ছে, তবে অন্যদিকে বাংলাদেশের মানুষের কাছ থেকে দূরে সরে যাচ্ছে।
জাতীয় ঐক্যের ব্যাপারে সাখাওয়াত হোসেন বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোই সরকার গঠন করবে। তবে স্বাধীনতার ৫২ বছরে সবগুলো রাজনৈতিক দল কোনো সময়ে এক টেবিলে বসেনি। এই সংকটকালীন সময়ে সব দল একসাথে বসেছে। এমনকি ধর্মীয় নেতারা বসেছে। আশা করি আগামীতে যারা ক্ষমতায় আসবে তারাও সংকটকালীন সময়ে এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখবে।
তিনি বলেন, ১ হাজার ১০০ কোটি টাকার চলমান উন্নয়নমূলক কাজ শেষ হলে ভোমরা স্থলবন্দর তার কার্যক্রম পুরোদমে চালাতে পারবে।
এর আগে দুপুর ১২টার দিকে ভোমরা স্থলবন্দরে পৌঁছে প্রথমে ভোমরা ইমিগ্রেশন পরিদর্শন করেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন। সেখানে তিনি ভারত ও বাংলাদেশের পাসপোর্ট যাত্রীদের কোনো হয়রানি হয় কিনা সে বিষয়ে সার্বিক খোঁজখবর নেন। পরে তিনি ভোমরা কাস্টমসের যাত্রীদের লাগেজ স্ক্যানার মেশিন, স্থলবন্দরের পণ্য পরিমাপ স্কেলসহ বন্দরের বিভিন্ন সেড পরিদর্শন করেন করেন। এরপর ভোমরা স্থলবন্দরের সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ স্থলবন্দর আয়োজিত ভোমরা স্থলবন্দরের অংশীজনদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
এ সময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ স্থলবন্দরের চেয়ারম্যান অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ মানজারুল মান্নান, যশোর বিজিবি সদর দপ্তরের রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির, সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ, সাতক্ষীরা ৩৩ ব্যাটেলিয়ন বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. আশরাফুল হক, ভোমরা কাস্টমসের ডেপুটি কমিশনার আবুল কালাম আজাদ, ভোমরা স্থলবন্দরের উপ-পরিচালক (ট্রাফিক) মোহাম্মদ রুহুল আমিন, ভোমরা সিএন্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আবু হাসান, সাধারণ সম্পাদক আবু মুসা, ভোমরা আমদানি-রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রামকৃষ্ণ চক্রবর্তী প্রমুখ।
ইব্রাহিম খলিল/আরএআর