হাজারো জনতার উপস্থিতিতে জুড়ীতে কিরাত সম্মেলন
মৌলভীবাজারের জুড়ীতে হাজী ইনজাদ আলী স্মৃতি পরিষদের আয়োজনে আন্তর্জাতিক কিরাত সম্মেলন ও নাশিদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। গোয়ালবাড়ী ইউনিয়নের হাজী ইনজাদ আলী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) রাতে অনুষ্ঠিত কিরাত সম্মেলনে কয়েক হাজার জনতার উপস্থিতি ঘটে। এতে দেশি-বিদেশি কারিদের তেলাওয়াত ও দেশের শিল্পীরা নাশিদ পরিবেশন করেন।
হাজী ইনজাদ আলী স্মৃতি পরিষদ প্রতি বছর কিরাত সম্মেলন ও নাশিদ মাহফিল আয়োজন করে। ঐতিহ্যবাহী এই সম্মেলনকে কেন্দ্র করে গোয়ালবাড়ী ইউনিয়ন ও জুড়ী উপজেলায় উৎসবের আমেজ বিরাজ করে। সম্মেলনে উপস্থিত হন জুড়ী, বড়লেখাসহ মৌলভীবাজার জেলার বিভিন্ন এলাকার মানুষ।
কিরাত সম্মেলনে দর্শকদের আকর্ষণে ছিলেন তানজানিয়ার শায়খ কারি ঈদী শাবান। ঈদী শাবানের তেলাওয়াত মুগ্ধ হয়ে শোনেন দর্শকরা। হৃদয় বিগলিত কুরআন তেলাওয়াত শুনে আপ্লুত হয়ে পড়েন সবাই।
এ ছাড়াও সম্মেলনে তেলাওয়াত করেন মিশরের কারি শায়খ ড. সালাহ মুহাম্মাদ সোলাইমান, কারি শায়খ মুহাম্মদ ছানাদ আব্দুল হামিদ, আফ্রিকার কারি শায়খ আহমেদ হিজা ও বাংলাদেশের কারি শায়খ আব্বাস উদ্দীন।
সম্মেলনে নাশিদ পরিবেশন করেন কবি মুজাহিদ বুলবুল, ফয়েজ আহমদ শাহরুখ, আবির হাসান ও সায়নান সায়েম।
কিরাত সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মৌলভীবাজার-১ আসন থেকে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী মাওলানা আমিনুল ইসলাম, মৌলভীবাজার জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির মাওলানা আব্দুর রহমান, জুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মুরশেদুল আলম ভূঁইয়া, গোয়ালবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আব্দুল কাইয়ুম ও বরুনা মাদরাসার নায়েবে মুহতামিম ও আঞ্জুমানে হেফাজতের নায়েবে আমির নুরে আলম হামিদী।
হাজী ইনজাদ আলী স্মৃতি পরিষদের সদস্য সোহান মুনতাছির বলেন, ব্যতিক্রমী এই উদ্যোগ বিগত চার বছর থেকে আয়োজন করা হচ্ছে। এই সম্মেলনে মৌলভীবাজারের বিভিন্ন জেলা থেকে লোকজন আসেন। সম্মেলনকে প্রাণবন্ত করতে সাড়া জাগানো কারি ও নাশিদ শিল্পীদের উপস্থিত করার চেষ্টা করা হয়।
হাজী ইনজাদ আলী স্মৃতি পরিষদের অপর সদস্য খালেদ মাসুদ বলেন, হাজী ইনজাদ আলীর পরিবার বিগত কয়েক বছর ধরে এ ধরনের আয়োজন করছে। এলাকার মানুষ এই ধরনের মাহফিলে সর্বাত্মক সহযোগিতা করে। এই অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে আমাদের এলাকায় তৈরি হয় উৎসবের আমেজ।
তিনি বলেন, সংগঠনের সভাপতি শরীফ উদ্দিন আহমদ ও সাধারণ সম্পাদক হাফেজ সিদ্দিক আহমেদ রাহাতের একান্ত আয়োজনে এই মাহফিল বাস্তবায়ন করা হয়। ইনজাদ আলী পরিবার এই আয়োজনে সমস্ত অর্থায়ন করে থাকে।
অনুষ্ঠান উপভোগ করতে আসা এমরান হোসেন মনিয়ার বলেন, অনুষ্ঠানটি খুব মনোমুগ্ধকর হয়েছে। দেশ-বিদেশের কারিদের তেলাওয়াত সবাইকে মুগ্ধ করেছে। এলাকার হাজারো জনতার উপস্থিতিতে মুখরিত ছিল স্কুল প্রাঙ্গণ। কানায় কানায় পূর্ণ ছিল পুরো মাঠ। সবাই অনুষ্ঠানটি খুব উপভোগ করেছে। আমি নিজেও উপভোগ করেছি।
আবিদ হোসাইন নামের একজন দর্শক বলেন, এরকম অনুষ্ঠান খুব একটা হয় না। যার জন্য দর্শক যারা উপস্থিত হন তাদের আলাদা একটা আবেগ থাকে। কিরাত সম্মেলনের মতো আয়োজন মৌলভীবাজার জেলায় তেমন একটা হয় না। যার ফলে মানুষ বিভিন্ন এলাকা থেকে এখানে আসেন অনুষ্ঠান উপভোগ করতে। বিশেষ করে কারি ঈদী শাবানের তেলাওয়াত হৃদয়কে বিগলিত করে।
আশরাফ আলী/এএমকে