‘উস্কানি দিয়ে দেশটাকে অস্থিতিশীল করলে নিজেও অস্থিতিশীল হয়ে যাবেন’
রাজবাড়ী জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হারুন-অর-রশিদ বলেছেন, এদেশের জনগণ জেগেছে। এদেশের জনগণই আগামীতে দেশ পরিচালনা করবে। আমাদের বিরুদ্ধে এখনো ষড়যন্ত্র চলছে। সামনে আরও ষড়যন্ত্র চলবে। আপনাদের সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। বাংলাদেশে দীর্ঘকাল ধরে হিন্দু-মুসলিম আমরা একসঙ্গে বসবাস করছি। এতদিন কোনো সংঘাত হয়নি। আপনারা ভারতে বসে উস্কানি দেবেন না। আপনারা যদি উস্কানি দিয়ে দেশটাকে অস্থিতিশীল করেন তাহলে নিজেও অস্থিতিশীল হয়ে যাবেন।
মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজবাড়ীতে ভারতের আগরতলায় অবস্থিত বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলার প্রতিবাদে আয়োজিত জেলা বিএনপির বিক্ষোভ মিছিল শেষে সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
হারুন বলেন, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। হিন্দু, মুসলিমসহ সব ধর্মের মানুষ ভাই ভাই হয়ে বসবাস করেন। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুসলমানরা যে নির্যাতিত হচ্ছে, তা বর্ননা দিয়ে প্রকাশ করা যাবে না। পৃথিবীর অন্য যে কোনো দেশের চেয়ে বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি অনন্য উচ্চতায় আছে। বর্তমানে ইসকন নামের সংগঠনকে সামনে রেখে যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ আওয়ামী সন্ত্রাসীরা দেশকে আবারও অস্থীতিশীল ও নৈরাজ্য সৃষ্টির পরিবেশ তৈরি করতে চাইছেন। কিন্তু দেশের জনগণকে সঙ্গে নিয়ে বিএনপি সেই নৈরাজ্যের মোকাবিলা করবে।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট লিয়াকত আলী বাবু বলেন, ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে ভারতীয় উগ্রবাদী হিন্দুরা হামলা চালিয়ে তছনছ করেছে। ভারত সরকার একটি দেশের হাইকমিশনকে নিরাপত্তা দিতে পারল না এটা খুবই দুঃখজনক। ভারত বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করতে চাচ্ছে। বিগত ১৭ বছর এদেশে যত দুর্নীতি হয়েছে, লুটপাট হয়েছে তাতে ভারতের ইন্ধন আছে। ভারত এদেশেকে অর্থনৈতিক পঙ্গু করে দিতে চাই। আমরা ভারতের এই দুঃস্বপ্ন ভেঙে চুরমার করে দেব ইনশাআল্লাহ।
তিনি আরও বলেন, কোনো ব্যক্তির সঙ্গে সম্পর্ক করে বাংলাদেশের সঙ্গে বন্ধুত্ব করা যাবে না। আপনাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব হবে এই দেশের জনগণের সঙ্গে বন্ধুত্ব করলে। আপনি ১৭ বছর ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পর্ক রেখেছিলেন। যারা ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুথানে দেশে ছেড়ে পালিয়েছে।
এ সময় বক্তারা বাংলাদেশি হাইকমিশনে হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
এর আগে বিকালে ভারতের আগরতলায় অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশনে হামলার প্রতিবাদে রাজবাড়ী জেলা বিএনপির দলীয় কার্যালয় থেকে শহরে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। এ সময় ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা’ এবং ‘দালালী না রাজপথ, রাজপথ রাজপথ’ স্লোগান দেন নেতাকর্মীরা। মিছিলটি শহরের প্রধান সড়ক ও বড় বাজার এলাকা প্রদক্ষিণ করে রেলগেট সংলগ্ন মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভে এসে শেষ হয়। পড়ে সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
এতে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট লিয়াকত আলী বাবু, সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট কামরুল আলম, জেলা বিএনপির সাবেক সাধারন সম্পাদক হারুন অর রশিদ, যুগ্ম আহ্বায়ক রেজাউল করিম শিকদার পিন্টু, সদস সালাম মিয়া, সদর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবুল হোসেন গাজী, পৌর বিএনপির সভাপতি তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া, সাধারণ সম্পাদক এম এ খালেদ পাভেল,জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান লিখন, বালিয়াকান্দি উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গোলাম শওকত সিরাজ, জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম রোমান, সদস্য সচিব শাহিনুর রহমান শাহিন সহ জেলা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
মীর সামসুজ্জামান সৌরভ/আরকে