১৫ বছর যারা বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব বিক্রি করেছে, তাদের রুখতে হবে
বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট এম. রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেছেন, বিগত ১৫ বছর যারা দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে অন্য দেশের কাছে বিক্রি করে দিয়েছিল, আমরা তাদের বলে দিতে চাই- কোনো ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তে বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্রকে বিপন্ন করতে আমরা দেব না। তাদের রুখতে হবে, বাংলাদেশের মানুষ তাদের রুখে দেবে।
মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) বিকেলে নাটোর শহরের কানাইখালীতে নিহত নাটোর পৌর ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক সুজনের স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে দুলু এসব কথা বলেন।
রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেন, যত দুর্যোগ এসেছে বাংলাদেশে মুসলিমরা হিন্দুদের পাশে দাঁড়িয়েছে। হিন্দুরাও মুসলমানদের বিপদে পাশে দাঁড়িয়েছে। অথচ গতকাল ভারতে বাংলাদেশের হাই কমিশনে আক্রমণ করা হলো। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক, এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই। ১৯৭১ সালে ৩০ লাখ শহীদের বিনিময়ে অর্জিত এই বাংলাদেশ।
বিএনপি এই নেতা বলেন, আগের পুলিশ এখনো আছে যারা বিএনপির নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করেছিল, বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে তছনছ করে দিয়েছিল। এই পুলিশ-প্রশাসনের মাথায় এখনো আওয়ামী লীগের ভূত আছে। কারণ আওয়ামী লীগ তাদের অবৈধ সুযোগ-সুবিধা দিয়েছে।
৫ তারিখের পর দেশের বিভিন্ন জেলায় ডিসি অফিস, এসপি অফিস আগুন ধরিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু নাটোরের কোনো সরকারি অফিসে একটি ঢিলও কেউ দেয়নি। আমাদের নেতাকর্মীরা কোনো ক্ষতি হতে দেননি। এটা তাদের মনে রাখতে হবে যে আমরা তাদের পাশে রয়েছি।
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশ্য দুলু বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আমাদের সমর্থন রয়েছে, আমাদের নেতা তারেক রহমান সেটা বারবার বলেছেন। কিন্তু আপনারা দেশ ভালোভাবে চালাতে পারছেন না। যতক্ষণ না পর্যন্ত নির্বাচিত সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করবে ততদিন আওয়ামী লীগের ষড়যন্ত্র, শেখ হাসিনার ষড়যন্ত্র বন্ধ হবে না। তারেক রহমান বাংলাদেশের আগামীর প্রধানমন্ত্রী। ২১ আগস্ট মামলায় তাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হলো। তারেক রহমান আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, ফলে এতো বছর পর তাকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমার অনেক নেতাকর্মী ও আত্মীয়-স্বজনকে আওয়ামী লীগ হত্যা করেছে। কোনো হত্যার বিচার হয়নি। এসবের বিচার যদি এখন আমরা না করতে পারি তাহলে ভুক্তভোগী পরিবারগুলোকে কি জবাব দেব? আওয়ামী লীগের সর্বহারারা যত বিএনপির মানুষকে হত্যা করেছে, এর উপহারস্বরূপ পাবনায় আওয়ামী লীগের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তাদের লাখ লাখ টাকা দিয়ে পুনর্বাসিত করেছে।
বিএনপির নির্বাহী কমিটির এই সদস্য বলেন, আওয়ামী লীগ নাটোরে এতো লুটপাট করেছে যে কোনো ইন্ডাস্ট্রি নাটোরে আর আসেনি। নাটোরে কোনো গ্যাস নেই। নাটোরের ওপর দিয়ে পাশের জেলায় গ্যাস দেয়। আমি ক্ষমতায় থাকলে কোদাল দিয়ে কেটে হলেও নাটোরে গ্যাসের ব্যবস্থা করতাম। আগামীতে যদি তারেক রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশের ক্ষমতায় বিএনপি আসে তাহলে প্রথমেই নাটোরে গ্যাসের ব্যবস্থা করবো। কলকারখানায় গ্যাসের ব্যবস্থা করব, হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি হবে।
জেলা ছাত্রদলের সভাপতি কামরুল ইসলামের সভাপতিত্বে সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন নাটোর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম বাচ্চু, সদস্যসচিব রহিম নেওয়াজ, যুগ্ম আহ্বায়ক ফরহাদ আলী দেওয়ান শাহীন, কাজী শাহ আলম, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি অধ্যক্ষ রফিকুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আলম আবুল প্রমুখ।
গোলাম রাব্বানী/এমজেইউ