বার্ধক্যে পেশাদার সাংবাদিকদের মাসিক ভাতা দেওয়া হবে : আবদুল্লাহ
বার্ধক্যজনিত কারণে অসহায় পেশাদার সাংবাদিকদের মাসিক ভাতা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মুহাম্মদ আবদুল্লাহ। তিনি বলেন, বার্ধক্যজনিত কারণে অসহায় পেশাদার সাংবাদিকদের মাসিক ভাতা দেওয়ার জন্য নীতিমালা প্রণয়ন করা হচ্ছে। আগামী অর্থবছরে এই কার্যক্রম শুরু হবে।
সোমবার (২ ডিসেম্বর) দুপুরে ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের আর্থিক সুবিধা ও কল্যাণে করণীয় শীর্ষক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মুহাম্মদ আবদুল্লাহ বলেন, বিগত ১৫ বছরে মতাদর্শ বিবেচনা করে আর্থিক অনুদান দেওয়া হতো। আওয়ামী বা ফ্যাসিবাদ সমর্থক না হওয়ার কারণে আবেদন করে মৃত্যুবরণ করার পরও অনেক সাংবাদিককে অনুদান দেওয়া হয়নি। এ কারণেই বিগত কয়েক বছরের আবেদন বিবেচনা করে চলতি অর্থবছরে ৩৫০ জনকে আর্থিক অনুদানের চেক বিতরণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে ৩০ জন ইতোমধ্যে মৃত্যুবরণ করেছেন। বাকিরা ক্যান্সারসহ নানা রোগে আক্রান্ত এবং ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আহতরা রয়েছেন। আমরা কোনো একটি মতাদর্শের সাংবাদিকদের আর্থিক অনুদান দিচ্ছি না, বরং বিগত ১৫ বছরে যারা বঞ্চিত ছিল তারা এখন পাচ্ছে এবং পাবে। এটাই স্বাভাবিক।
তিনি আরও বলেন, বোর্ডের বিধি-বিধানের কারণে চাইলেই তাৎক্ষণিক কোনো সাংবাদিককে আর্থিক সহযোগিতা করার সুযোগ হয় না। তবে আমরা সে বিষয়টি নিয়েও কাজ করছি। সেই সঙ্গে সাংবাদিকদের সাশ্রয়ী চিকিৎসার বিষয়েও আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে। এছাড়াও সাংবাদিকদের মেধাবী সন্তানদের লেখাপড়ার জন্য বৃত্তি প্রদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এজন্য আগামী ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে আবেদন করতে হবে। ৬ষ্ঠ শ্রেণি থেকে মেধাবী সন্তানদের জন্য মাস্টার্স পর্যন্ত এই বৃত্তি সহায়তা অব্যাহত থাকবে।
এ সময় সাংবাদিকদের উত্থাপিত পেশাগত নানা সমস্যার কথা তুলে ধরে মুহাম্মদ আবদুল্লাহ বলেন, ইতোমধ্যে গণমাধ্যম সংস্কারে মিডিয়া কমিশন গঠিত হয়েছে। আপনারা আপনাদের সমস্যা তুলে ধরে মিডিয়া কমিশনে প্রস্তাব দিন। আশা করছি আপনাদের যৌক্তিক প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়ন হবে।
সাংবাদিকদের ডাটা বেইজ তৈরির পরিকল্পনার কথা জানিয়ে জীবন বীমাসহ কল্যাণমূলক নানা ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণের কথাও জানান তিনি।
মতবিনিময় সভা শেষে ময়মনসিংহ বিভাগের ২০ জন অসুস্থ, আহত এবং মৃত্যুবরণ করা এক সাংবাদিক পরিবারের মধ্যে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের আর্থিক অনুদানের প্রথম কিস্তির চেক প্রদান করা হয়। এর মধ্যে মৃত সাংবাদিক পরিবারকে দুই লাখ এবং অন্যান্যদের ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা করে অনুদান প্রদান করা হয়।
এ সময় ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. মুফিদুল আলমের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসাবে আরও বক্তব্য দেন সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য শাহীন হাসনাত, সাংবাদিক ইউনিয়ন ময়মনসিংহের সভাপতি আইয়ুব আলী ও সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মো মুফিদুল আলম বলেন, সাংবাদিকরা রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ। তথ্য প্রমাণ দিয়ে সহযোগিতা করুন। তবেই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব। সত্যের সঙ্গে মিথ্যার মিশ্রণ করবেন না। বিবেক বিসর্জন দেবেন না। মনে রাখবেন জীবনের পরও আরও জীবন আছে। সেখানে জবাবদিহিতা করতে হবে।
আমান উল্লাহ আকন্দ/আরএআর