সংখ্যালঘুদের জানমাল, ইজ্জত ও ধর্মীয় স্বাধীনতার গ্যারান্টি দিচ্ছি
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের উদ্দেশে বলেছেন, বাংলাদেশকে যারা বন্দী করে রাখতে চেয়েছিল, বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে বিপন্ন করে যারা অঙ্গরাজ্যে পরিণত ও পরিচালিত করতে চেয়েছিল তাদের সেবাদাসী উৎখাত হওয়ায় মাথা খারাপ হয়ে গেছে। সন্ত্রাসী সংগঠন ইসকনকে নিষিদ্ধ করতে হবে। তাদের সকল জঙ্গি ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপ নিষিদ্ধ করতে হবে। তা না হলে এ দেশের তৌহিদী জনতা নিজেদের হাতে দায়িত্ব তুলে নেবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা সকল সংখ্যালঘুদের জানমাল, ইজ্জত ও ধর্মীয় স্বাধীনতার নিরাপত্তা দেওয়ার গ্যারান্টি দিচ্ছি। রাষ্ট্র ও প্রশাসনসহ আমরা সকলে মিলে তাদের ধর্মীয় স্বাধীনতা ও উপসনালয়গুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিতের দায়িত্ব নিচ্ছি। কিন্তু সন্ত্রাসী কার্যকলাপের মাধ্যমে বাংলাদেশে তৌহিদী আলো নিভিয়ে দেওয়ার চক্রান্ত বরদাস্ত করা হবে না। বাংলাদেশে হিন্দু সংখ্যালঘুদের সঙ্গে বৈষম্যের আচরণ করা যাবে না।
বুধবার (২৭ নভেম্বর) রাতে কুষ্টিয়া হাই স্কুল মাঠে ওলামা পরিষদ আয়োজিত ইসলামী মহাসম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, শহীদ আলিফদেরকে (অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফ) হত্যা করে তৌহিদের জাগরণ বন্ধ করা যাবে না। প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমাদের সন্তানেরা তৌহিদের চেতনা নিয়ে রাজপথে নেমে এসেছে। তাদের জোয়ার স্তব্ধ করে দিতে পারবে না। আলেমসমাজ বিপ্লবের জন্য তৈরি হন, জাতিকে নেতৃত্ব দিতে হবে। এ দেশ থেকে কোরআন ও ইসলামবিরোধী প্রতিটি অপশক্তির শিকড় উপড়ে ফেলতে হবে।
মামুনুল হক বলেন, সাংবিধানিকভাবে বাংলাদেশকে আল্লাহর সার্বভৌমত্বকে উপেক্ষা করে শিরকি আইন তৈরি করবার অভিশপ্ত ধারায় বাংলাদেশের ১৮ কোটি মসুলমানদেরকে বন্দী করে রাখা হয়েছে। আমরা বন্দিত্ব থেকে মুক্তি চাই। বাংলাদেশের সংবিধান যখন সংস্কার হবে তখন একটি ধারা সংযুক্ত করতে হবে। আল্লাহর আইনের বিরুদ্ধে কোনো আইন চলবে না, কোনো নীতিমালা চলবে না, কোনো বিধান চলবে না। এসব থাকলে তা বাতিল ও অকার্যকর বলে গণ্য হবে। আল্লাহর কোরআন ও নবীর সুন্নাহবিরোধী কোনো আইন বাংলার মাটিতে থাকবে না। এই বাংলাদেশ আগামী দিনের ইসলামের বাংলাদেশ হবে। বাংলাদেশের চিরন্তন গন্তব্য হবে ইসলাম।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকার প্রসঙ্গে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব বলেন, ২০০৮ সালে বাংলাদেশের কাঁধের ওপর ফ্যাসিবাদ চেপে বসলো। ৭২ থেকে ৭৫ এর সেই কালো শাসন আবারও এ দেশের মানুষের ওপর এলো। এবার আর তিন বছর নয়, এবার থাকলো ১৫ বছর। এই ১৫ বছরে আল্লাহর ওপর অবিচল আস্থা ও বিশ্বাসকে সংবিধান থেকে উৎখাত করে দিয়ে কুফরি ধর্ম নিরপেক্ষতাকে সংবিধানে ফিরিয়ে আনা হলো। আর ধীরে ধীরে ইসলাম প্রতিষ্ঠার ও ইসলামী শাসন প্রতিষ্ঠার সবগুলো প্রচেষ্টাকে গলা চেপে হত্যা করার পাঁয়তারা চালানো হলো।
মামুনুল হক বলেন, ইসলামী শাসনতন্ত্র নাম নিয়ে বাংলাদেশে রাজনীতির পথগুলো বন্ধ হয়ে গেল। আল্লাহর সার্বভৌমত্বের কথা সংবিধানে থাকায় ইসলামী দলকে হাইকোর্ট থেকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলো। বাংলাদেশটাকে একটা শিরকের অভয়ারণ্যে পরিণত করা হলো। গোটা বাংলাদেশকে শিরকের সংস্কৃতি তথা মূর্তি দিয়ে ভরে ফেলা হলো। মসজিদের নগরী ঢাকার মোড়ে মোড়ে মূর্তি বসিয়ে, মূর্তির শহরে পরিণত করার পাঁয়তারা করলেন। আমরা যখনই মূর্তির বিরুদ্ধে কথা বলা শুরু করলাম, তখনই ক্ষিপ্ত হলেন মূর্তি পূজারিরা, শুরু করলেন নানা ষড়যন্ত্র। আলেম-ওলামাদের লাঞ্ছিত করার অপতৎপরতা চালালেন। ফেরাউন-নমরুদরা যা করে, বাংলাদেশের স্বৈরাচারী লেডি ফেরাউন আলেমদের সঙ্গে তাই করেছে।
রাজু আহমেদ/এমজেইউ