পদ্মা সেতু হয়ে পরীক্ষামূলক ট্রেন পৌনে ৪ ঘণ্টায় খুলনা পৌঁছাল
ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু পেরিয়ে নড়াইল হয়ে পৌনে চার ঘণ্টায় খুলনা পৌঁছেছে পরীক্ষামূলক ট্রেন। রোববার (২৪ নভেম্বর) সকাল ৯টা ১০ মিনিটে ঢাকার কমলাপুর স্টেশন থেকে ছেড়ে ট্রেনটি খুলনায় পৌঁছায় দুপুর ১ টা ৫ মিনিটে। ১২টি বগি ট্রেনটি রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়ে ঘণ্টায় ৯৫ থেকে ১০০ কিলোমিটার গতিতে ঢাকা থেকে খুলনা স্টেশনে এসে পৌঁছায়। ট্রেনটির এটি তৃতীয় ট্রায়েল।
ওই ট্রেনে রেলপথ বিভাগের সচিব আবদুল বাকি, রেলওয়ের মহাপরিচালক সরদার শাহাদাত হোসেন, রেলওয়ের পশ্চিম অঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক মামুনুল ইসলামসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা যাত্রী হিসেবে ছিলেন। ট্রেনটি খুলনায় এসে পৌঁছালে রেলপথ বিভাগের সচিব আবদুল বাকি ও রেলওয়ের মহাপরিচালক সরদার শাহাদাত হোসেনকে ফুলেল শুভেচ্ছায় বরণ করে নেন খুলনা রেলস্টেশনের কর্মকর্তারা।
খুলনা রেলস্টেশন মাস্টার মো. মাসুদ রানা বলেন, ঢাকা থেকে পরীক্ষামূলক ট্রেনটি সকাল ৯টার পর ছেড়ে আসে। খুলনায় দুপুর ১টা ৫ মিনিটে এসে পৌঁছায়। পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেনটি খুলনায় আসতে পৌনে চার ঘণ্টা সময় লেগেছে। তবে এই রুটে ট্রেন চলাচলে আরও ৩০ মিনিট সময় কম লাগবে। ট্রেনটি আজ আসার পথে বেশ কিছু স্থানে থেমেছিল। যে কারণে সময় লেগেছে। পরে বিকাল ৫টার দিকে ট্রেনটি ছেড়ে যায়। আগামী ২ ডিসেম্বর থেকে ট্রেনটি বাণিজ্যিকভাবে চলাচল করার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে আমাদের এখনও কোনো কিছু জানানো হয়নি।
রেলপথ বিভাগের সচিব আবদুল বাকি বলেন, আমরা সফলভাবে তিনটি ট্রায়াল সম্পন্ন করেছি। আমরা দেখলাম ৩ ঘণ্টা ৪৫ থেকে ৫০ মিনিটে সময় লেগেছে। আমাদের এখানে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এবং টেকনিক্যাল কর্মকর্তা সবাই উপস্থিত ছিলেন। আমাদের পরিকল্পনা আছে ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে বাণিজ্যিকভাবে এ রুটে ট্রেনের যাত্রা শুরু করা।
রেলওয়ের মহাপরিচালক সরদার শাহাদাত হোসেন বলেন, পদ্মা হয়ে ঢাকা-খুলনা রুটে কতটি ট্রেন চলবে তা এখনো চূড়ান্ত করতে পারিনি। আমাদের পর্যাপ্ত কোচের সংকট আছে। যে পরিমাণ চাহিদা তা পূরণ করতে হলে সমন্বয় করে চালাতে হবে। আমরা চেষ্টা করব আমাদের সীমিত সম্পদ নিয়ে মানুষের সর্বোচ্চ সেবাটা করা।
জানা গেছে, ফরিদপুরের ভাঙ্গা জংশন থেকে যশোরের পদ্মবিলা স্টেশন পর্যন্ত ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেনটি চলবে। যশোরের পদ্মবিলা থেকে সিঙ্গিয়া হয়ে খুলনা পর্যন্ত ৭৫ কিলোমিটার গতিতে ট্রেনটির চলার কথা রয়েছে। পদ্মা রেল সংযোগ প্রকল্পের আওতায় ডিসেম্বরের শুরুতে ঢাকা-ভাঙ্গা-যশোর-খুলনা রুটে বাণিজ্যিক ট্রেন চলাচল শুরু হওয়ার কথা।
এর আগে, ২০২৩ সালের ১০ অক্টোবর পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের আংশিক খুলে দেওয়া হয়। তখন ঢাকা থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত ৮২ কিলোমিটার রেলপথ চালু হয়। এবার ভাঙ্গা থেকে যশোর পর্যন্ত ৮৭ কিলোমিটার যোগ হচ্ছে। এতে ঢাকা থেকে যশোরের ১৬৯ কিলোমিটার রেলপথে সরাসরি যোগাযোগ চালু হতে যাচ্ছে। ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ভাঙ্গা-নড়াইল-যশোর হয়ে নতুন রেলপথে খুলনায় যাবে ট্রেন। ঢাকা থেকে রেলপথে খুলনার দূরত্ব কমবে। ইতিপূর্বে এ রুটে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচলে খুলনা ও যশোরে আন্দোলন হয়েছে।
মোহাম্মদ মিলন/এএমকে