পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মৃত্যু : শোকে স্তব্ধ নাঈমের পরিবার
গাজীপুরের শ্রীপুরে পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে নাঈম হোসাইন ফেনী শহরের মাষ্টারপাড়ায় বসবাসরত সাউথ ইস্ট ডিগ্রি কলেজের শিক্ষক মীর মোতাহার হোসেন শাহীনের ছেলে। নাঈমের এমন আকস্মিক মৃত্যু কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না স্বজনরা। তার মৃত্যুতে পরিবার ও প্রতিবেশীরা শোকে স্তব্ধ।
শনিবার (২৩ নভেম্বর) বিকেল ৫টার দিকে শহরের মাষ্টারপাড়ায় নিহত নাঈমের বাসায় আত্মীয়-স্বজনসহ প্রতিবেশীদের এসে তার পরিবারকে সান্ত্বনা দিতে দেখা গেছে। তবে পরিবারের কোনো সদস্য গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি। এদিন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে গাজীপুরের শ্রীপুরের তেলিহাটি ইউনিয়নের উদয়খালী গ্রামে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মারা যান নাঈম।
নিহত নাঈম ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজির মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে অধ্যয়নরত ছিলেন। তিনি ২০১৯ সালে ফেনী সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন।
নিহতের জেঠাতো বোন সুরভী ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা এ মুহূর্তে কথা বলার মতো অবস্থায় নেই। আকস্মিক এমন ঘটনায় পুরো পরিবার শোকাহত। এতো তাড়াতাড়ি ভাইকে হারাবো কখনো ভাবিনি।
নাঈমের ফুফাতো বোন সোহাগ বলেন, পরিবারে দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে নাঈম দ্বিতীয় সন্তান। তার বড় ভাই শারীরিকভাবে কিছুটা অসুস্থ। নাঈম খুবই নম্র-ভদ্র ও মেধাবী ছিল। ঘটনা শোনার পরপরই নাঈমের বাবা-মা মরদেহ আনার জন্য রওয়ানা দিয়েছেন। তাকে নিজ গ্রামের বাড়ি ফেনী সদর উপজেলার শর্শদি ইউনিয়নের ফতেহপুর এলাকায় দাফন করা হতে পারে। মরদেহ ফেনী পৌঁছালে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হবে।
নাঈমের প্রতিবেশী ফেনী সরকারি কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হাবিবুর রহমান বলেন, ২০০৯ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত প্রায় ১৪ বছর তাদের বাসায় ভাড়া ছিলাম। আমরা পাশাপাশি ফ্লাটে থাকতাম। নাঈমকে ছোটবেলা থেকেই দেখে আসছি। এত ভদ্র ও বিনয়ী ছিল যা বর্ণনাতীত।
এর আগে সকালে গাজীপুর মহানগরের বোর্ড বাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের প্রায় ৪৬০ জন শিক্ষার্থী বিআরটিসির ৬টি ডাবল ডেকার বাস ও ৩টি মাইক্রোবাসে করে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের উত্তর পেলাইদ গ্রামের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে যাচ্ছিলেন।
ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো আঞ্চলিক সড়ক ধরে রিসোর্টের দিকে যাওয়ার সময় উত্তর পেলাইদ গ্রামের উদয়খালী বাজারে পৌঁছালে বিআরটিসির একটি ডাবল ডেকার বাস পল্লী বিদ্যুতের তারের সঙ্গে লেগে যায়। এতে বাসটি বিদ্যুতায়িত হয়ে পড়ে এবং বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। তাদের উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তিনজনকে মৃত ঘোষণা করেন।
তারেক চৌধুরী/এএমকে