মতবিরোধের জেরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যুক্ত এক শিক্ষার্থীকে মারধর
ফরিদপুরে মতবিরোধের জেরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যুক্ত এক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। তাকে ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
শনিবার (২৩ নভেম্বর) দুপুর ২টার দিকে তাকে ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দেখা গেছে। এর আগে গতকাল শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের রসায়ন বিভাগের একটি কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।
আহত ওই শিক্ষার্থীর নাম রুবেল মিয়া ওরফে হৃদয় (২৭)। তিনি ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার চরমানাইর ইউনিয়নের ইসমাইল মাতুব্বরের ডাঙ্গী গ্রামের মো. মহিউদ্দিনের ছেলে।
রুবেল মিয়া শহরের পূর্ব খাবাসপুর মহল্লায় বসবাস করেন। তিনি সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের অনার্স শেষ বর্ষের শিক্ষর্থী।
ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালের পুরুষ সার্জিক্যাল ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রুবেল মিয়া বলেন, ফরিদপুরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন পরিচালনার জন্য প্রতিমাসে একজনকে মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়। বর্তমান মুখপাত্র নিরব ইমতিয়াজ শান্তর মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় নতুন মুখপাত্র নির্বাচনের জন্য শুক্রবার বিকেলে তারা ৩৫/৪০ জন সদস্য রাজেন্দ্র কলেজের রসায়ন বিভাগের একটি কক্ষে আলোচনার জন্য বসেন। ওই সময় তার ওপর হামলা করা হয়। তাকে বেধড়ক কিল-ঘুষি মারা হয়। এক পর্যায়ে কলেজের মাঠে এনে তাকে মারা হয়। তিনি বলেন, এ মারপিটে চার-পাঁচজন অংশ নেয়।
তবে কারা তার ওপর হামলা করে মারধর করেছে তাদের নাম তিনি সুনির্দিষ্টভাবে বলতে পারেনি। রুবেল মিয়া আরও বলেন, বিষয়টি তিনি পুলিশকে জানিয়েছেন এবং এ ব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
ফরিদপুরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত কয়েকজন সদস্যর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ৬ সেপ্টেম্বর একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ খোলা হয়। এ আন্দোলনের সঙ্গে শতাধিক শিক্ষার্থী যুক্ত থাকলেও ওই গ্রুপে ২৫/৩০ জনকে যুক্ত করা হয়। তবে এ ফরিদপুরের বর্তমান মুখপাত্র নিরব ইমতিয়াজকে ওই গ্রুপে যুক্ত করা হয়নি। পাশাপাশি ফরিদপুরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের প্রস্তাবিত কমিটির নামে ২১ সদস্য বিশিষ্ট একটি তালিকা কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের কাছে পাঠানো হয়। এটি করা হয় কোনো রকম আলাপ আলোচনা ছাড়াই। অনেকে ভেবে বসেন প্রস্তাবিত এই কমিটিই ঢাকা থেকে অনুমোদন হয়ে এসেছে। এ নিয়ে ক্ষোভ আধিপত্য বিস্তার ও নেতৃত্বের লোভ থেকে এ হামলার ঘটনা ঘটেছে।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ফরিদপুরের বর্তমান মুখপাত্র নিরব ইমতিয়াজ শান্ত বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন সফল হওয়ার পর অনেক ব্যক্তি এ আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল পেছন থেকে কলকাঠি নাড়ছেন। সবার মধ্যে নেতৃত্বের আকাঙ্ক্ষা এবং অনমনীয় আচরণ ও প্রভাব দেখানোর প্রবণতা দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ছাত্রদের চতুর্মূখী চাপের মধ্যে থাকতে হচ্ছে।
ফরিদপুর কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদউজ্জামান বলেন, যে ছেলেটা আহত হয়েছে তিনি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের একজন সক্রিয় কর্মী। শুক্রবার রাজেন্দ্র কলেজে তাদের এক সভা হয়। ওই সভায় সম্বয়কদের মধ্যে মত বিরোধের কারণে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে। আমি হাসপাতালে গিয়ে আহত ওই শিক্ষার্থীকে দেখে এসেছি। এ ব্যাপারে থানায় আজ শনিবার দুপুর ২টা পর্যন্ত কোনো অভিযোগ দেওয়া হয়নি।
জহির হোসেন/আরকে