গাইবান্ধায় ‘জনতার বাজারে’ কম দামে গরুর মাংস বিক্রি
গাইবান্ধায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের আয়োজিত জনতার বাজারে ন্যায্যমূল্যে পণ্য বিক্রির উদ্যোগে এবার যোগ হলো গরুর মাংস। শুক্রবার (২২ নভেম্বর) দিনব্যাপী শহরের পুরাতন জেলখানা মোড়ের এই বাজারে সবজির পাশাপাশি গরুর মাংস বিক্রি শুরু করেছেন তারা। প্রতি কেজি মাংসের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৬২০ টাকা, যা স্থানীয় বাজারমূল্যের তুলনায় ৬০ থেকে ৮০ টাকা কম।
বাজারে গিয়ে দেখা যায়, মাংস কেনার জন্য ক্রেতারা সারিবদ্ধভাবে টোকেন নিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন। আয়োজকরা জানান, বিশৃঙ্খলা এড়াতে আগেই টোকেন ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। ক্রেতাদের সুবিধার জন্য সর্বনিম্ন ২৫০ গ্রাম এবং সর্বোচ্চ দুই কেজি পর্যন্ত মাংস দেওয়া হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা মিজানুর রহমান বলেন, এখানে বাজার থেকে ৬০ টাকা কমে মাংস বিক্রি হচ্ছে। এজন্য টোকেন নিয়ে লাইনে দাঁড়িয়েছি।
আরেক ক্রেতা লাল মিয়া বলেন, দেড় কেজি মাংস কিনব। আমরা চাই ছাত্রদের এই উদ্যোগ অব্যাহত থাকুক। বাজারের সিন্ডিকেট ভাঙতে তাদের সহযোগিতা করা উচিত।
ছাত্র প্রতিনিধি আবুজর গিফারি রাফি জানান, স্থানীয় এক যুবক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ৭০ হাজার টাকা ধার নিয়ে আরও কিছু টাকা যোগ করে ৯৩ হাজার টাকায় একটি গরু কেনা হয়েছে। তবে মাংসের পরিমাণ সীমিত থাকায় চাহিদা পূরণ করা যাচ্ছে না।
তিনি বলেন, প্রতি সপ্তাহে মাংস বিক্রির আয়োজন চালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে, যদি স্থানীয়দের সহযোগিতা পাওয়া যায়।
এদিন জনতার বাজারে সবজিও বিক্রি হয়েছে তুলনামূলক কম দামে। কুমড়া ৪০ টাকা, বেগুন ৩০ টাকা, বাঁধাকপি ৪০ টাকা, করলা ৪৫ টাকা, মুলা ৩০ টাকা এবং পেঁয়াজ ৯০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে।
গাইবান্ধা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহামুদ আল হাসান জানান, কাঁচাবাজারের সিন্ডিকেট ভাঙার লক্ষ্যে ছাত্রদের এই উদ্যোগ। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের পাশে থাকা হচ্ছে।
জেলা প্রশাসক চৌধুরী মোয়াজ্জম আহমদ বলেন, ছাত্রদের উদ্যোগে ন্যায্যমূল্যের বাজারে সবজি বিক্রি শুরুর জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এক লাখ টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছিল। আজ তাদের মাংস বিক্রির কার্যক্রম দেখে আমরা আনন্দিত। ভবিষ্যতে এ ধরনের কার্যক্রমে আরও সহযোগিতা করা হবে।
প্রসঙ্গত, গত ৩০ অক্টোবর গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক চৌধুরী মোয়াজ্জম আহমদ ‘জনতার বাজার’ উদ্বোধন করেন। স্থানীয় বাজারে সবজির দাম স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত এই কার্যক্রম চলবে বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা।
রিপন আকন্দ/এমজেইউ