দাওয়াত না পেয়ে বিএনপি নেতার বাধায় জামায়াতের মাহফিল বন্ধের অভিযোগ
লক্ষ্মীপুরে দাওয়াত না পেয়ে বিএনপি নেতার বাধায় জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের আয়োজিত তাফসিরুল কুরআন মাহফিল বন্ধ করা হয়েছে।
শুক্রবার (২২ নভেম্বর) দুপুরে সাংবাদিকদের কাছে এ অভিযোগ করেন মাহফিলের আয়োজকরা।
স্থানীয়দের দাবি, পৌরসভার দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর (বিএনপি-জামায়াত) রাজনৈতিক প্রতিহিংসাই মাহফিল বন্ধ হওয়ার প্রধান কারণ। মূলত এটি মাহফিলের নামে জামায়াতে ইসলামীর দলীয় প্রোগ্রাম ছিল।
অভিযোগ আছে, লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আলমগীর হোসেন বিএনপি নেতা শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানির নাম ভাঙিয়ে মাহফিলের আয়োজনে বাধা দেন। এতে মাহফিল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। একই ওয়ার্ড জামায়াত ইসলামীর সভাপতি মাহাবুবুর রহমান, মাহফিল বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি জামাল উদ্দিন কবির ও মোহাম্মদিয়া জামে মসজিদের খতিব আহছান হাবিবসহ মাহফিল সংশ্লিষ্টরা এ বিষয়ে অভিযোগ করেন।
অভিযোগকারী মাহবুবুর রহমান, জামাল উদ্দিন কবির ও আহছান হাবিব জানান, শুক্রবার বিকেল ৩টা থেকে লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডে আলমগীর কমিশনার বাড়ির সামনে মোহাম্মদিয়া জামে মসজিদ মাঠে তাফসিরুল কুরআন মাহফিল ও ইসলামী সংগীত সন্ধ্যার কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) রাতে আলমগীর কমিশনার এসে মাহফিল বন্ধ রাখার জন্য বলেন। এ্যানি চৌধুরীকে দাওয়াত না দেওয়ায় তিনি এমন ঘটনা ঘটান। তার (আলমগীর) দাবি ছিল, এ্যানি চৌধুরী তাকে ফোনে জানিয়েছেন মাহফিল বন্ধ করে দিতে। এতে তিনি মাহফিলের প্যান্ডেলের কাপড় খুলে দিয়েছেন, বিদ্যুতের সংযোগ ও মাইকের জন্য লাগানো তার কেটে দেওয়া হয়েছে। তাই বিশৃঙ্খলা এড়াতে মাহফিল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন
আলমগীর হোসেন বলেন, বিএনপির যুগ্মমহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি ও ঢাকা মহানগরী উত্তর জামায়াতের সেক্রেটারি ড. রেজাউল করিম লক্ষ্মীপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী। মাহফিলে রেজাউলকে অতিথি করা হয়। এছাড়া এলাকার প্রতিনিধি হিসেবে আমাকে প্রতি বছর দাওয়াত দেওয়া হয়। এবার আমাকে কোনো কিছুই জানানো হয়নি। আমি যেহেতু বিএনপির রাজনীতি করি, এ জন্য আমাকে বিষয়টি জানাতে পারতো। তখন কে বা কাকে রাখা যায় তা নিয়ে সমন্বয় করা যেতো। এ্যানি চৌধুরীকেও দাওয়াত দেওয়া যেতো। আমি এসব বলেছি। তবে মাহফিলের কার্যক্রম চালিয়ে যেতে বলেছি। এ্যানি চৌধুরী মাহফিলের বিষয়ে কিছুই জানেন না। এনিয়ে তার সঙ্গে কোনো কথা হয়নি।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় চারজন বাসিন্দা জানান, বিএনপি নেতা আলমগীর ও জামায়াত নেতা মাহাবুব স্থানীয় কাউন্সিলর প্রার্থী। মাহফিলের নামে দলীয় প্রোগ্রাম বাস্তবায়ন ও মাহাবুব তার পক্ষে গণজমায়েত সৃষ্টির পরিকল্পনা করেন। তাই কৌশলে প্রতিপক্ষ আলমগীরকে সেখানে দাওয়াত দেওয়া হয়নি। আলমগীর এ নিয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে মাহফিল বন্ধ রাখতে বলেন। পরে মাহফিলের কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়।
প্রসঙ্গত, যুবসমাজ ও এলাকাবাসীর ব্যানারে মাহফিলে জামায়াতের ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. রেজাউল করিমের প্রধান অতিথি হিসেবে থাকার কথা ছিল।
হাসান মাহমুদ শাকিল/এফআরএস