টাঙ্গাইলে হত্যার ঘটনায় নারীসহ দুইজনের যাবজ্জীবন
টাঙ্গাইলে ঝর্না নামে এক নারীকে হত্যার দায়ে অপর এক নারীসহ দুইজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। সেই সঙ্গে উভয়কে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও চার মাস করে সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়।
মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) টাঙ্গাইল দ্বিতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আফরোজা বেগম এই রায় ঘোষণা করেন। এ সময় দুইজন আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
দণ্ডিতরা হলেন, টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার বাসাইল পূর্বপাড়া গ্রামের শাহাদত বেপারীর স্ত্রী মনোয়ারা আক্তার (৩৬) এবং একই এলাকার মজিবর বেপারীর ছেলে উজ্জ্বল ইসলাম (৩৩)।
টাঙ্গাইলের সদ্য বিদায়ী অতিরিক্ত সরকারি কৌশলী মনিরুল ইসলাম খান মামলাটি রাষ্ট্র পক্ষে পরিচালনা করেন।
অ্যাডভোকেট মনিরুল ইসলাম খান বলেন, জেলার বাসাইল পূর্বপাড়া গ্রামের সুনীল কুমার দাসের স্ত্রী ঝর্ণা রানী দাস (৪৮) দণ্ডিত মনোয়ারা আক্তারের সঙ্গে প্রসাধন সামগ্রির ব্যবসা করতেন। সেই সূত্রে মনোয়ারার কাছে ২ হাজার ৬০০ টাকা পেতেন ঝর্ণা। বিগত ২০১৮ সালের ২৮ অক্টোবর সকাল সাড়ে ৯টার দিকে পাওনা টাকার জন্য ঝর্ণা মনোয়ারার বাড়িতে যাওয়ার কথা বলে বের হন। কিন্তু তিনি রাতেও বাড়ি ফিরে না আসায় তার স্বজনরা তাকে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। এক পর্যায়ে ওই রাতে তারা বাসাইল থানায় বিষয়টি জানান।
পরে পুলিশ মনোয়ারার বাড়িতে গিয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। এ সময় মনোয়ারা পুলিশকে জানায় সকালে পাওনা টাকা চাইতে আসার পর ঝর্ণা রানীর সঙ্গে তার কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে তার প্রতিবেশী ভাতিজা উজ্জ্বল ইসলামের সহায়তায় ঝর্ণাকে ঘরে নিয়ে গলায় ফিতা পেঁচিয়ে ও বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেন তারা। পরে ঝর্ণার গলায় থাকা স্বর্ণের চেইন ও কানের দুল খুলে নিয়ে মনোয়ারার বসতঘরে একটি কক্ষের মেঝেতে তার মরদেহ মাটিচাপা দিয়ে রাখা হয়। এরপর পুলিশ মনোয়ারার ঘর থেকে মাটি খুঁড়ে মরদেহটি উদ্ধার করে।
তিনি আরোও জানান, ঘটনার পরদিন ঝর্ণার স্বামী সুনীল কুমার দাস বাদী হয়ে দুইজনের নামে বাসাইল থানায় মামলা করেন। তদন্ত শেষে পুলিশ ২০১৯ সালের ৯ এপ্রিল আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়। মামলায় ১৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন আদালত। রায় ঘোষণার পর দণ্ডিত দুইজনকে কারাগারে পাঠানো হয়।
অভিজিৎ ঘোষ/এফআরএস