ফেসবুকে এক নারীকে পেটানোর ভিডিও ভাইরাল, দুই আসামি গ্রেপ্তার
রংপুরের বদরগঞ্জে এক নারীর চুলের মুঠি ধরে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে লাঠিপেটা করার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। মারধরে বাধা দেওয়ায় ওই নারীর বৃদ্ধ মাকেও মারপিট করা হয়।
এ ঘটনায় গতকাল রোববার (১৭ নভেম্বর) দায়ের করা মামলায় পুলিশ দুইজন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে। আজ সোমবার (১৮ নভেম্বর) দুপুরে দিকে তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেপ্তার দুজন হলেন- ওই নারীর প্রতিবেশী সাইফুল ইসলাম (৫০) ও গোলজার হোসেন (৬০)। মামলায় ওই দুজনসহ ছয়জনকে আসামি করা হয়েছে।
ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, ওই নারীর চুল ধরে টেনেহিঁচড়ে বাড়ি থেকে বাইরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এ সময় তাকে তিনজন পুরুষ ও দুইজন নারী লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটাচ্ছিলেন। পেটানোর দৃশ্য দেখে আশপাশে থাকা শিশুদের ভয়ে দৌঁড়ে চলে যেতে দেখা যায়।
এ ঘটনায় গত শনিবার (১৬ নভেম্বর) সকালে বদরগঞ্জ থানা পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন ভুক্তভোগী নারী। কিন্তু পুলিশ রোববার বিকেল পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। পরে লাঠিপেটা করার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ছড়িয়ে পড়লে পুলিশ রাতেই মামলাটি নথিভুক্ত করেন এবং দুজনকে গ্রেপ্তার করে।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ওই নারীর স্বামী অনেক বছর আগে মারা গেছেন। বৃদ্ধ মা ও ছেলেকে নিয়ে তিনি থাকেন। গত শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) দুপুরের দিকে বাড়ির পাশে ওই নারীর জমিতে কেটে রাখা ধান গরু ঢুকে নষ্ট করে। একে কেন্দ্র করে প্রতিবেশী গোলজার হোসেনের সঙ্গে ওই নারীর ঝগড়া হয়। পরে ওই দিন বিকেলে গোলজার হোসেন কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে বাড়ির ভেতরে ঢুকে তাকে লাঞ্ছিত ও লাঠিপেটা করেন। বাধা দেওয়ায় ওই নারীর বৃদ্ধ মাকেও পেটান আসামিরা। পরে অন্য প্রতিবেশীরা তাদের উদ্ধার করে বদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
বদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক শাকির মোবাশ্বির বলেন, দুই নারীকে লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটানো হয়েছে। এতে ভুক্তভোগী নারীর মায়ের মাথা ফেটে যায়। আর ভুক্তভোগী নারীর মাথা ও শরীরের বিভিন্নস্থানে ফোলা জখম হয়েছে। তারা শঙ্কামুক্ত, তবে তাদের সুস্থ হতে খানিকটা সময় লাগবে।
বদরগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম আতিকুর রহমান বলেন, ওই ঘটনায় পাওয়া লিখিত অভিযোগ রোববার থানায় মামলা হিসেবে নেওয়া হয়েছে। রাতেই ওই দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তার করা হবে।
ফরহাদুজ্জামান ফারুক/আরকে