পঞ্চগড়ে বাড়ছে শীতের পরশ
ঘাসের ডগায় টলমল শিশির ও কুয়াশা বাড়াচ্ছে শীত। উত্তরাঞ্চলের হিমালয়কন্যা খ্যাত জেলা পঞ্চগড়ে হেমন্তে শিহরিত করছে শীত। শীত ঘিরে বাংলার ঘরে ঘরে শুরু হয়েছে নবান্নের আয়োজন।
শনিবার (১৬ নভেম্বর) ভোর ৬টায় ১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে প্রথম শ্রেণির তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিস। গতকাল শুক্রবার রেকর্ড হয়েছিল ১৬ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কয়েকদিন ধরেই ১৬ থেকে ১৭ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড হচ্ছে বলে ঢাকা পোস্টকে জানিয়েছে তেঁতুলিয়ার আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ।
বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ভোর থেকেই দেখা যায় ঘন কুয়াশার আবরণে পথঘাট ও মাঠ। ঘাসের ডগায় চিকচিক করছে শুভ্র শিশির। কুয়াশা জড়ানো প্রকৃতি। নবান্নের আয়োজনে কৃষকরা শিশির মাড়িয়ে ছুটছেন মাঠে। এ সময়ে ক্ষেতে ধান কাটা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। পাথর, চা শ্রমিক, ভ্যানচালক জীবিকার তাগিদে কাজে বের হয়েছেন। অনেকে কুয়াশার সকালে পুকুরে বরশিতে মাছ ধরতে দেখা গেছে।
স্থানীয়রা জানান, দিন দিন শীতের মাত্রা অনুভূত হচ্ছে। সন্ধ্যার পর থেকেই উত্তরের ঠান্ডা বাতাসে শীত লাগতে শুরু করেছে। শীতের হালকা গরম কাপড় বের করতে হয়েছ। মাঝরাত থেকেই শীত অনুভব হতে থাকে। টিনের চালে টিপটিপ করে শিশির পড়তে শোনা যায়। ভোর পর্যন্ত গায়ে কম্বল ও কাঁথা নিতে হচ্ছে। বিশেষ করে উত্তরের জেলাটি বরফের পাহাড় হিমালয়-কাঞ্চনজঙ্ঘার বিধৌত এলাকা হওয়ায় উত্তরের এ জেলায় অন্যান্য জেলার আগেই এ অঞ্চলে শীতের আগমন ঘটে। নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে জানুয়ারী পর্যন্ত শীতের দাপট বেশি হয়ে থাকে। শীতকে কেন্দ্র করে নবান্ন উৎসব শুরু হয়েছে ঘরে ঘরে।
আরও পড়ুন
এদিকে তেঁতুলিয়ায় কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে আসা পর্যটকরা উপভোগ করছেন শীত। ঢাকা থেকে আসা মশিউর রহমান খোকন, তানভীর, সুস্মিতা রায় ও তন্ময় আবীরসহ কয়েকজন পর্যটক বলেন, আমরা কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে এসেছিলাম। কিন্তু আবহাওয়া খারাপ হওয়ার কারণে দেখতে পারিনি। পাহাড় দেখতে এসে পাহাড়ের শীতল পরশ অনুভব করতে পারছি। এখানকার প্রকৃতিও বেশ শান্তনীবির ও সুন্দর। দর্শনীয় স্থান উপভোগ্যের সঙ্গে এখানে শীতের পরশও উপভোগ্য।
আবহাওয়াবিদদের মতে, আশ্বিন মাসে মৌসুমি বায়ু কম সক্রিয় থাকায় এবং উত্তরীয় বায়ুর কিছুটা প্রভাব থাকায় শেষ রাতে শীত নেমে এলে ঠান্ডা অনুভূত হয়। বিশেষ করে মৌসুমি বায়ু যখন বাংলাদেশের ওপর আর সক্রিয় থাকবে না। অক্টোবর থেকে উত্তরাঞ্চলে কুয়াশা পড়া শুরু হয়। এখন থেকেই উত্তরের জেলাগুলোতে তাপমাত্রা কমতে থাকবে। নভেম্বরের শুরু হয়ে ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে পুরোপুরি শীতের প্রভাব পড়বে।
এদিকে এখনো সেভাবে শীত না পড়ায় দিনে গরম ও রাতে হালকা শীতের কারণে বেড়েছে শীতজনিত বিভিন্ন রোগব্যাধি। পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে শিশু ও বয়স্করা সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
পঞ্চগড়ের প্রথম শ্রেণির তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ জানান, শীত পড়ে গেছে। ভোর থেকে সকাল কুয়াশা দেখা যাচ্ছে। আজ শনিবার ভোর ৬টায় তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগের দিন রোববার রেকর্ড হয়েছিল ১৬ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এখন দিন যত যাবে তাপমাত্রা কমতে শুরু করবে।
এসকে দোয়েল/আরকে