বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ২ হাজার প্রান্তিক মৎস্য চাষি পেলেন মাছের পোনা
স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় নোয়াখালীর ক্ষতিগ্রস্ত দুই হাজার প্রান্তিক মৎস্য চাষিদের মাঝে মাছের পোনা বিতরণ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) দুপুরে বেগমগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আরিফুর রহমান বিভিন্ন ইউনিয়নের ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে এসব মাছের পোনা বিতরণ করেন। এর আগে, সেনবাগ, কবিরহাট ও সদর উপজেলাসহ বিভিন্ন উপজেলায় মাছের পোনা বিতরণ করা হয়।
জানা গেছে, সদর, সুবর্ণচর, কবিরহাট, কোম্পানীগঞ্জ, বেগমগঞ্জ, সেনবাগ, সোনাইমুড়ী ও চাটখিল উপজেলার বন্যায় ৮৫ হাজার মাছের পুকুর-ঘের বন্যায় ভেসে গেছে। এতে ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৬১৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে প্রায় ২ হাজার ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্য চাষিদের মধ্যে রাজস্ব বাজেটের আওতায় মাছের পোনা বিতরণ কার্যক্রম শুরু করেছে মৎস্য অধিদপ্তর। মঙ্গলবার বেগমগঞ্জে এবং সোমবার (১১ নভেম্বর) কবিরহাটে প্রান্তিক মৎস্য চাষিদের মাঝে মাছের পোনা বিতরণ করা হয়েছে।
বেগমগঞ্জের ক্ষতিগ্রস্ত প্রান্তিক খামারি মো. মাসুদুল হক বলেন, স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় আমাদের বেগমগঞ্জের চাষিদের সব শেষ হয়ে গেছে। সরকার বর্তমানে মাছের পোনা দিচ্ছে। যদি আরও বৃহৎ আকারে বা ঋণের সুযোগ করে দিতে তাহলে আমরা ঘুরে দাঁড়াতে পারতাম। আমরা চাই সরকার যেন দ্রুত চাষিদের পাশে দাঁড়ায়। সরকার যদি সহযোগিতা না করে তাহলে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারবো না।
বেগমগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আরিফুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, বন্যায় বেগমগঞ্জ উপজেলার সব পুকুর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমরা চেষ্টা করেছি একবারে প্রান্তিক এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের মাঝে ছয় কেজি করে মাছের পোনা বিতরণ করতে, যাতে করে তারা কিছুটা হলেও ঘুরে দাঁড়াতে পারেন। পোনাগুলো রাজস্ব খাতের আওতায় প্রাতিষ্ঠানিক পুকুরে দেওয়ার কথা। কিন্তু বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের কথা চিন্তা করে সেগুলো প্রান্তিক চাষিদের মাঝে বিতরণ করা হচ্ছে। পরবর্তীতে কোনো বরাদ্দ এলে তা চাষিদের মাঝে বিতরণ করা হবে।
আরও পড়ুন
জেলা মৎস্য অফিস নোয়াখালীর সিনিয়র সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ জিয়া উদ্দিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, নোয়াখালী জেলায় ৮৫ হাজার মাছের ঘের ভেসে গেলেও কোনো প্রণোদনা পাওয়া যায়নি। তাই মৎস্য অধিদপ্তরের নিজস্ব বাজেট থেকে আমরা প্রায় দুই হাজার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত প্রান্তিক চাষিদের মাঝে মাছের পোনা বিতরণ করছি৷ ইতোমধ্যে সাত উপজেলায় বিতরণ শেষ হয়েছে। কেবল চাটখিল সোনাইমুড়ী উপজেলায় বিতরণ বাকি আছে। আগামীতে যদি কোনো বরাদ্দ বা প্রণোদনা পাই, তাহলে সেভাবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন বেগমগঞ্জ উপজেলার সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মাসুমা আক্তার, সদর উপজেলার সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মানস মণ্ডল, বেগমগঞ্জ উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আহমেদ উল্যাহ সবুজ, প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. শাহ পরান প্রমুখ।
হাসিব আল আমিন/এফআরএস