আসামি ছিনিয়ে নিতে পুলিশের ওপর হামলা, আহত ৪
বরগুনায় সাতজন রিমান্ডের আসামিকে ছিনিয়ে নিতে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে পুলিশের এসআইসহ চার সদস্য আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় জড়িত তিনজনকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করেছে পুলিশ।
সোমবার (১১ নভেম্বর) দুপুর ১টার দিকে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
বরগুনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোজাম্মেল হোসেন ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
আহতরা হলেন—বরগুনার তালতলী থানার এসআই শহিদুল ইসলাম, রিয়াজুল ইসলাম, অন্তর ও ফোরকান।
আটককৃতরা হলেন—সদর উপজেলার ঘটবাড়ীয়া নামক এলাকার মিজানুর রহমানের ছেলে আশ্রাফুর রহমান অন্তু (২০) বরগুনার তালতলী উপজেলার মালিপাড়া এলাকার আ. ছত্তরের ছেলে মো. ছগির মিস্ত্রি (৫০), ও তার স্ত্রী হামিদা বেগম।
পুলিশ সূত্রে ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই শহিদুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, গত ১৫ অক্টোবর বরগুনার তালতলী থানায় আইনশৃঙ্খলা বিঘ্ন করার অপরাধে একটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলায় অভিযুক্তরা তালতলী বন্দরের জিয়া মঞ্চ ও বিএনপি অফিস ভাঙচুরসহ কুপিয়ে বিনষ্ট করেন। বাদী পক্ষের জাকির হোসেন নামের একজনের কাছে চাঁদা দাবি করে না পেয়ে তার অফিসে ভাঙচুর চালায়। এ ছাড়াও দেশি অস্ত্র নিয়ে বিভিন্ন সময় মহড়া ও বিভিন্ন মানুষের ওপর হামলার অভিযোগে এ মামলা দায়ের করা হয়। পরে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন ও অন্য কোনো মদদদাতা রয়েছে কি-না তা বের করতে আদালেতে আসামিদের রিমান্ড চাইলে অভিযুক্ত সাতজনের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়। পরে তাদেরকে নিয়ে শারীরিক পরীক্ষার জন্য বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে গেলে হাসপাতালে থাকা আসামিদের স্বজনরা আসামিদেরকে ছিনিয়ে নিতে পুলিশের ওপর হামলা চালান। এতে পুলিশের চার সদস্য আহত ও হাসপাতালে কর্মরত পাঁচজন স্টাফ আহতের ঘটনা ঘটে। পরে বরগুনা গোয়েন্দা পুলিশ ও সদর থানায় জানালে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে হামলার ঘটনায় জড়িত তিনজনকে আটক করেন গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা। তবে এ ঘটনায় আদালতের রিমান্ড প্রাপ্ত কোনো আসামি ছিনিয়ে নিতে পারেননি হামলাকারীরা।
অভিযুক্ত রিমান্ডের আসামিরা হলেন—মো. মিজানুর রহমান ওরফে টাচ মিজান (৩০), মো. রাকিব (২৫), মো. জাহিদ (২৫), মো. খলিল (৩০), মো. ইমরান হোসেন ওরফে টাচ ইমরান (২২), মো. আরিফুর রহমান (২০) ও মো. ইউসুফ (২৬)।
বরগুনা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. বশির আলম ঢাকা পোস্টকে বলেন, রিমান্ডে থাকা সাতজন আসামিকে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। পরে খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহত পুলিশ সদস্যদের উদ্ধার ও হামলাকারীদের মধ্যে তিনজনকে আটক করতে সক্ষম হই। এ ছাড়াও এ ঘটনায় জড়িত পালিয়ে যাওয়া সবাইকে ধরতে গোয়েন্দা পুলিশের অভিযান চলমান রয়েছে।
এ বিষয়ে বরগুনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোজাম্মেল হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, তালতলী থানা পুলিশের সদস্যরা সাতজন আসামিকে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসেন। এ সময় হাসপাতালে থাকা আসামি ও স্বজনরা পুলিশের ওপর হামলা করেন। হাসপাতালে কর্মরত কয়েকজন এ ঘটনায় বাধা দিলে তাদের ওপরেও হামলা চালানো হয়। যে-সব আসামিরা পুলিশের হেফাজতে ছিল তাদেরসহ ঘটনায় জড়িত আরও তিনজনকে আটক করা হয়েছে। আটককৃতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান তিনি।
মো. আব্দুল আলীম/এএমকে