সাবেক রেলমন্ত্রীসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে হত্যা ও গুমের মামলা
পঞ্চগড় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক রেলমন্ত্রী অ্যাডভোকেট নূরুল ইসলাম সুজনসহ ১১ জনকে অভিযুক্ত করে হত্যা ও গুমের মামলা করা হয়েছে। এ মামলায় আরও ১৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
শনিবার (৯ নভেম্বর) রাতে পঞ্চগড় সদর থানায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নিয়ে গুম হওয়া যুবক আল-আমিনের বাবা পঞ্চগড় পৌরসভার দর্জিপাড়া এলাকার বাসিন্দা মো. মনু মামলাটি করেছেন।
মামলার উল্লেখযোগ্য অন্য আসামিরা হলেন- পঞ্চগড়-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নাঈমুজ্জামান ভুঁইয়া মুক্তা, সাবেক সংসদ সদস্য মজাহারুল হক প্রধান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আনোয়ার সাদাত সম্রাট, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আবু মো. নোমান হাসান ও সাধারণ সম্পাদক সাদমান সাকিব পাটোয়ারী প্লাবন, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফুল ইসলাম পল্লব, পঞ্চগড় পৌর আওয়ামী লীগের লীগের সভাপতি কাজী আল তারিক ও সাধারণ সম্পাদক এস এম হুমায়ুন কবীর উজ্জ্বল প্রমুখ।
পুলিশ ও মামলা সূত্রে জানা যায়, মো. মনুর ছেলে আল-আমিন পেশায় রিকশাচালক হলেও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে একজন সক্রিয় যোদ্ধা ছিলেন। এজন্য তাকে শুরু থেকেই বিভিন্ন হুমকি-ধামকি দেওয়া হত। এরই ধারাবাহিকতায় গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর আল-আমিন জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান সাকিব পাটোয়ারীর বাড়ির সামনে দিয়ে যখন বাড়ি ফিরছিলেন তখন কতিপয় আসামির পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষ মদদে অন্য আসামিরা তাদের হাতে থাকা ধারালো অস্ত্র দিয়ে আল-আমিনকে জখম করে। এতে রক্তাক্ত হয়ে আল-আমিন সড়কে লুটিয়ে পড়লে তার নিথর দেহ টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যায় তারা। ওই সময় আল-আমিনের সঙ্গে থাকা রায়হানুল ইসলাম রিফাত ও সুজন ইসলাম নামের দুই তরুণ আহত হন। তবে তাদের দুজনকে স্থানীয় লোকজন আহত অবস্থায় উদ্ধার করে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করলেও আল-আমিনকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। এরপর থেকে আল-আমিনকে খোঁজাখুজি করে না পেয়ে গত ১৪ আগস্ট পঞ্চগড় সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে পরিবার। এদিকে আহত ওই দুই তরুণের মাধ্যমে ঘটনা জানতে পেরে নিখোঁজের তিন মাস পর আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের আসামি করে মামলা করলেন আল-আমিনের বাবা।
মামলার বাদী মো. মনু বলেন, সেদিন আল-আমিনের সঙ্গে যারা ছিল তাদের সঙ্গে কথা বলেই মামলা করেছি। প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণীতে আমি ধারণা করছি আমার ছেলেকে হত্যার পর মরদেহ গুম করে ফেলা হয়েছে। আমি এর ন্যায়বিচার চাই।
রোববার পঞ্চগড় সদর থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) রঞ্জু আহমেদ জানান, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে উপপরিদর্শক মানিক মিয়াকে নিযুক্ত করা হয়েছে। সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে আসামিদের ধরতে অভিযান চলছে।
এসকে দোয়েল/এমজেইউ