‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে দৃষ্টি হারিয়েছে ৭০০, আহত ৩০ হাজার’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ৭০০ যুবক দৃষ্টি হারিয়েছেন এবং ৩০ হাজার আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব এমএ আকমল হোসেন আজাদ।
তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আহতদের জন্য সরকারের দিক থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হবে। জনসংখ্যার ৬৫% কর্মক্ষম লোকের কাজের সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে দেশ এগিয়ে যাবে। এ দেশ তারুণ্যের উৎসবে মেতে উঠবে। যুবক-যুবতীর স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ে উঠবে।
শনিবার (৯ নভেম্বর) দুপুরে ময়মনসিংহ জেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর ময়মনসিংহ কার্যালয় আয়োজিত 'মাদক ও সন্ত্রাসবিরোধী কর্মকাণ্ডে যুবদের ভূমিকা’ শীর্ষক জনসচেতনতামূলক অনুষ্ঠান ও যুব উদ্যোক্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়' সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এমএ আকমল হোসেন আজাদ বলেন, দেশের মোট জনসংখ্যার একটি বড় অংশ হচ্ছে যুব সমাজ। এখানে যুবক ও যুবতীরা রয়েছেন। দেশ গঠনে তাদের ভূমিকা অপরিহার্য। দেশের প্রায় ৫ কোটি ৩০ লাখ যুবক ও যুবতী যদি একসঙ্গে কাজ করে তাহলে আমরা কোথায় পৌঁছবো, সেটা আমাদের ভাবা উচিত। আমাদের দেশে যুব সমাজের মধ্যে যুবতী নারী সবচেয়ে কঠিন সময় পার করেন। বাল্যবিবাহ থেকে শুরু করে অল্প বয়সে সন্তানের মা হওয়া, ঘরের ভেতরে ও বাইরে নির্যাতনের শিকার হওয়ার ঘটনা প্রায়ই ঘটে। প্রাতিষ্ঠানিকভাবে শিক্ষা ক্ষেত্রে এবং কর্মক্ষেত্রে ইভটিজিংয়ের শিকার হচ্ছেন তারা। এসব থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে। তা নাহলে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। নির্যাতন প্রতিরোধ করতে যুবসমাজকে এগিয়ে আসতে হবে। এ কাজে সহযোগিতায় পিছিয়ে থাকলে হবে না সাংবাদিক ও শিক্ষকমণ্ডলীদেরও।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদী বলেন, তরুণরা যে লক্ষ্য নিয়ে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, তা আগামীর চ্যালেঞ্জকে মোকাবিলা করবে। আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে নতুন বিশ্বের সঙ্গে তাল মেলাতে তরুণদের প্রস্তুত থাকতে হবে। তারুণ্যের শক্তির ভূমিকা দেশকে আরও সমৃদ্ধশালী করে গড়ে তুলবে।
তরুণ সমাজকে মূলধারার শক্তিতে নিয়ে আসার কথা বলে তিনি বলেন, তরুণদের অংশগ্রহণ ও ভাবনাকে আমরা প্রাধান্য দিচ্ছি। ৬৪ জেলায় ৬৪টি খাল পরিষ্কারের মতো নানান জনমুখী কাজের উদ্যোগ হাতে নেওয়া হয়েছে। এসব উদ্যোগে যুবক ও যুবতী ভাই-বোনেরা সরাসরি ভূমিকা রাখছেন। সামাজিক সচেতনতামূলক আরও অনেক কাজ আমাদের বাকি রয়েছে। আগে যারা কোনো প্রশিক্ষণ নেয়নি তাদের মধ্য থেকে প্রায় ৯ লাখ যুব ও যুব নারীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। আমরা এখানেই স্থির থাকবো না, নতুন নতুন কর্মসূচি নিয়ে আসবো। তরুণ-তরুণীদের মাঝে দক্ষতার গণজোয়ার সৃষ্টি করা হবে। তারা আজকের বাংলাদেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে, সে প্রত্যাশা ব্যক্ত করি।
এ সময় জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলমের সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. গাজী মো. সাইফুজ্জামান, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার তাহমিনা আক্তার, রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ের প্রতিনিধি মোহাম্মদ শরিফুর রহমান বিপিএম, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের ময়মনসিংহ কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. হারুন-অর-রশীদ প্রমুখ।
মো. আমান উল্লাহ আকন্দ/এএমকে