শেখ হাসিনা ও তার পরিবার আর কখনো এই দেশে রাজনীতি করতে পারবে না
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ বলেছেন, ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বরের সৃষ্টি না হলে বাংলাদেশের পতাকা ও স্বাধীনতা যে হুমকির মুখে ছিল এবং স্বাধীন বাংলাদেশের অস্তিত্ব থাকত কি না সেটা আল্লাহ ভালো জানে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর শেখ মুজিবুর রহমান রাষ্ট্রক্ষমতায় আসার মাত্র তিন মাসের মধ্যে বাংলাদেশকে নরকে পরিণত করেছিল। শেখ মুজিব বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর রক্ষীবাহিনী সৃষ্টি করে বাংলাদেশের হাজার হাজার তরুণ, যুবক, ছাত্র, মুক্তিযোদ্ধা ও গণতন্ত্রকে হত্যা করে একদলীয় বাকশাল কায়েম করেছিল।
বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) বিকেলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার সুন্দরপুর ইউনিয়নের কালীনগর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ প্রাঙ্গণে নির্বাচন ও সংস্কারের রোড ম্যাপের দাবিতে এবং ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বরের জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত বিশাল জনসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা তার বাবার মতো এই দেশে জুলুমের শাসন কায়েম করেছিল। গত ১৫ বছরে শেখ হাসিনা অনেক মানুষকে গুম, খুন, বিনা বিচারে ক্রসফায়ারের নামে হত্যা করেছিল এবং সাধারণ মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছিল। এ ছাড়া গত ১৫ বছরে শেখ হাসিনার সরকার সকল রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিয়েছে। আর এই জুলুমের কারণে শেখ হাসিনাকে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে হয়েছে।
ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বরের প্রসঙ্গ টেনে হারুনুর রশীদ বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ১৯৭৫ সালের সংকটময় সময়ে রাষ্ট্রের দায়িত্ব গ্রহণ করে বাংলাদেশকে বিপদমুক্ত করেছিলেন এবং দেশের গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। তিনি বাংলাদেশের মানুষের অধিকার ফিরিয়ে দিয়েছেন এবং সকল রাজনৈতিক দলের রাজনীতি করার সুযোগ সৃষ্টি করেছিলেন। জিয়াউর রহমান কোনো স্বজনপ্রীতি ও দুর্নীতি করেননি বরং তার পরিবারের জন্য একটু জমিও রেখে যাননি। এমনকি ব্যাংকে এক হাজার টাকাও তার ছিল না। বাংলাদেশে এমন রাষ্ট্রপতি আর কখনো পাওয়া যাবে না।
আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনাকে নিয়ে তিনি বলেন, দেশটা আমাদের তাই এই দেশটাকে আমাদেরকেই গড়তে হবে। যারা আওয়ামী লীগ করতেন তারাও এই দেশে থাকবে, যারা জামায়াতে ইসলামী করে তারাও এই দেশে থাকবে। একে অপরকে নিষিদ্ধ করে সমাধান হবে না। তবে আওয়ামী লীগের ভাইদের আমরা বলব, আপনাদের রাজনীতি ভুল রাজনীতি। শেখ হাসিনা ও তার পরিবার আর কোনোদিন এই দেশের রাজনীতিতে ফিরে আসতে পারবে না। আওয়ামী লীগ নাম দিয়ে বাংলাদেশে রাজনীতি করার আর কারও অধিকার নেই। কারণ গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ যে অপকর্ম করেছে তার বিচার এই দেশেই হবে।
অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে নির্বাচনের দাবি জানিয়ে এই বিএনপি নেতা বলেন, বাংলাদেশকে ঠিক করতে হলে দরকার নির্বাচিত সরকার। বাংলাদেশে এখন কোনো সংসদ নেই, নির্বাচিত সরকার নেই। তাই অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আমাদের মূল দাবি যত দ্রুত সম্ভব কমিশনের কাজগুলো সম্পূর্ণ করুন এবং শান্তিপূর্ণ ও অবাধ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের হাতে দেশকে তুলে দিন।
সুন্দরপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি আলতাব আলীর সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক তসিকুল ইসলাম তসি, সাবেক উপজেলা ভাইস-চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম, জেলা যুবদলের আহ্বায়ক তাবিউল ইসলাম তারিফ, জেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার ইসলাম অনু, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মজিবুর রহমান মজু, উপজেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক আ.ক.ম শাহেদুল আলম বিশ্বাস পলাশ, জেলা সেচ্ছাসেবক দলের সহ-সভাপতি দুরুল ইসলাম, সুন্দরপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি সারোয়ার জাহান ও সাবেক সহ-সভাপতি মীম ফজলে আজিম, সাবেক ছাত্রদল নেতা আব্দুল আহাদসহ আরও অনেকে।
মো. আশিক আলী/এমজেইউ