মুন্সীগঞ্জে ডেঙ্গুর দাপট কমছে না
মুন্সীগঞ্জে বর্ষা পেরিয়ে হেমন্তের শেষে এসেও ডেঙ্গুর দাপট কমছে না। প্রতিদিনই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা।
গেল শনিবার শুধু মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন ৪৫ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী। এ বছর এখন পর্যন্ত শুধু মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ৪৬০ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। শুধু অক্টোবর মাসে ২৪২ জন ডেঙ্গু রোগী মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন।
একই হাসপাতালে সেপ্টেম্বর মাসে চিকিৎসা নিয়েছেন ১৪৮ জন। এ ছাড়া এ বছর জানুয়ারি মাসে ৮ জন, ফেব্রুয়ারি মাসে ১ জন, মার্চ মাসে ১ জন, মে মাসে ৭ জন , জুন মাসে ৬ জন ,জুলাইয়ে ১৩ জন, আগস্ট মাসে ৩১ জন ডেঙ্গু রোগী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। ভর্তির বাইরেও ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা কয়েক গুণ। জেনারেল হাসপাতাল ছাড়াও মুন্সীগঞ্জের ৬টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে বৃদ্ধি পেয়েছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে ভর্তি হয়ে এ বছর চিকিৎসা নিয়েছেন শতাধিক ডেঙ্গু রোগী।
এদিকে গ্রাম এলাকায় মশক নিধনে কোনো কার্যক্রম নেই বললেই চলে। তবে এডিস মশার প্রজননক্ষেত্র নিয়ে পৌর কর্তৃপক্ষও উদাসীন আর রোগী নিয়ে চিকিৎসাকরা হিমশিম খাচ্ছে। বিছানার অভাবে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মেঝেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন অনেকে। সদরের মুন্সীগঞ্জ পৌরসভা ইসলামপুর ও মুন্সীগঞ্জ পৌরসভা মিরকাদিম পৌরসভার মাঝখানের পঞ্চসার এলাকায় ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বেশি। এসব এলাকায় সড়ক, মাঠ-ঘাট, বাড়ির আঙ্গিনাসহ বিভিন্ন স্থানে জমে থাকা পানি আর আবর্জনা মশা তৈরির কারখানায় পরিণত হয়েছে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বড় অভাবে খোদ জেলা শহরের প্রধান সড়কের আশপাশেও ময়লার ভাগারের সৃষ্টি হয়েছে।
মাত্র ১০ দশমিক ৮৫ কিলোমিটারের মুন্সীগঞ্জ পৌরসভায় মশা নিধনে তেমন কার্যক্রম না থাকায় অনেক এলাকায় ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলছে। আর পাশের মিরকাদিম ও পঞ্চাসারের অবস্থা আরও নাজুক। এডিস মশার প্রজননক্ষেত্র নিয়ে কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় ক্ষুব্ধ মানুষ।
আরও পড়ুন
মুন্সীগঞ্জের ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আবু হেনা মো. জামাল বলেন, অসময়ের বৃষ্টিতে পানি জমে থাকাসহ অসচেতনতার কারণে অস্বাভাবিকভাবে ডেঙ্গু রোগী বাড়ছে। তিনি আরও বলেন, শনিবার হাসপাতালটিতে নতুন করে ভর্তি হয়েছে ৮ ডেঙ্গু রোগী। বর্তমানে হাসাপাতালে ৪৫ জন রোগী ভর্তি রয়েছে। তিনি আরও বলেন, মানুষ এখনও ডেঙ্গুর ব্যাপারে সচেতন নয়। আমাদের আরও সাবধান হতে হবে। নিজের বাড়ি ও আশপাশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। এ ছাড়া এ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোকেও তাদের ভূমিকা পালন করতে হবে।
ব.ম শামীম/এনএফ