কুয়াশার চাদরে শীতের হাতছানি
গত কয়েকদিন ধরেই দিনের ভোর শুরু হচ্ছে শীতের আমেজে। চারপাশে কুয়াশার আস্তরণ। বাতাসে হিমেল অনুভূতি। সন্ধ্যা রাতে হালকা গরম অনুভব হলেও ভোরের দিকে কাঁথামুড়ি দিতে হচ্ছে। বাইরের আবহাওয়াও ছিল বেশ ঠান্ডা। সব মিলিয়ে সকালের প্রকৃতিতে লক্ষ্য করা যাচ্ছে শীতের আমেজ।
দেশের উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা লালমনিরহাটে ঝড়-বৃষ্টি আর খরা শেষে শীতের আগাম বার্তা নিয়ে এলো হিমেল বাতাস আর কুয়াশা। কয়েকদিন আগেও ছিল ভ্যাপসা গরম। আর এখন প্রকৃতিতে ঋতুবদলের আয়োজন। শরৎ শেষে হেমন্ত এসেছে। এরপর শীতকাল আসবে। কিন্তু এখনই প্রকৃতি জানান দিচ্ছে শীতের আগমনী বার্তা। ভোরের কুয়াশার সাথে দেখা যায় শিশির ভেজা ঘাস। ধানের শিষে কুয়াশা ভেজা পানি জমে থাকতে দেখা যায়। আর কয়েকদিনের মধ্যে পুরোদমে ঠান্ডার প্রভাব বাড়বে।
লালমনিরহাটে গত কয়েকদিন আগে টানা বৃষ্টিপাতে কিছু নিচু জমির শীতকালীন শাক-সবজির ক্ষতি হয়েছিল বলে জানান কৃষকরা। এখন আবার নতুন করে চাষাবাদ করছেন তারা।
কৃষক রুবেল মিয়া বলেন, ক্ষেতে ভাইরাসের জন্য বিভিন্ন ধরনের কীটনাশক ব্যবহার করতে হয়। তাই এই সময় সবজির দাম বেশি। এদিকে দিনে গরম থাকলেও মাঝরাতে মৃদু বাতাস এই ঠান্ডা লেগে যায়। তাই মাঝরাতের পর থেকে হালকা শীতের কাপড় গায়ে না দিলেই ঠান্ডার অনুভূতি বাড়তে থাকে। শেষ রাত থেকে গায়ে কম্বল দিয়ে ঘুমাতে হয়।
আরও পড়ুন
স্থানীয় বাসিন্দা রুনা খান বলেন, আজকের সকাল টার আলাদা একটা বিশেষত্ব আছে মনে হচ্ছে। ঘুম ঘুম চোখে খুব সকালে বারান্দায় দাঁড়িয়ে বোঝার চেষ্টা করছিলাম মেঘ নাকি কুয়াশা! নিশ্চিত হলাম কুয়াশা। সাথে শীত শীত অনুভূত হচ্ছিল। কয়েকদিন আগের টানা বৃষ্টির কারণে মৃদু ঠান্ডা শীতের আগাম বার্তা জানিয়ে দিয়ে যাচ্ছে। তাই এখন থেকে আমাদের শীতের প্রস্তুতি নিতে হবে। পুরোদমে শীত শুরু না হতেই সরকার যদি শীতবস্ত্র বিতরণ করেন তাহলে হয়ত নিম্নশ্রেণির মানুষেরা শীতের সাথে মোকাবিলা করতে পারবে।
লালমনিরহাট জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. সাইখুল আরেফিন বলেন, কয়েকদিন ধরে ভারী বৃষ্টি হওয়া উঁচু-নিচু জমির সবজি চাষে বৃষ্টির পানি ও শীতের কারণে বিভিন্ন ধরনের ভাইরাস দেখা দিতে পারে। কৃষি বিভাগের মাঠপর্যায়ে কর্মীরা কারিগরি সহায়তাসহ বিভিন্ন রকমের পরামর্শ দিচ্ছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে শীতকালীন সবজি বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করেন কৃষি বিভাগ।
রাজারহাট আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার জানায়, কুয়াশার সাথে শীতের তীব্রতা বাড়ছে। হিমালয়ের কাছাকাছি হওয়ায় এ অঞ্চলে একটু আগেই শীত নামতে শুরু করে। গত কয়েকদিন ধরে এখানে দিন ও রাতের তাপমাত্রা ৩২ ডিগ্রি থেকে সর্বনিম্ন ২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠা-নামা করছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে শীত বাড়বে।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক (ডিসি) এইচ এম রকিব হায়দার বলেন, উত্তরের জেলা লালমনিরহাটে প্রতি বছর শীতের তীব্রতা একটু বেশি থাকে। শীত মোকাবিলার প্রস্তুতি হিসেবে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। শীত বাড়লে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে তালিকা করে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হবে।
নিয়াজ আহমেদ সিপন/পিএইচ