গোপালগঞ্জ উন্নত হয়েছে কিন্তু আশপাশের জেলার অবস্থা খারাপ
যুব ও ক্রীড়া এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, গত ১৫ বছর ধরে উন্নয়ন উন্নয়ন গেলানো হয়েছে। তবে, সেটা খুব নির্দিষ্ট কিছু জায়গায়। যার বাড়ি যেখানে সেভাবেই উন্নয়নটা হয়েছে। যেমন— গোপালগঞ্জ উন্নত হয়েছে কিন্তু তার আশপাশের জেলাগুলোর অবস্থা খুবই খারাপ।
সাতক্ষীরা জেলার উন্নয়নের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এখানকার রাস্তাগুলো আমি দেখেছি। রাস্তাগুলো দিয়ে আমি যাতায়াত করেছি। আমি বাই রোডে এসেছি। অবস্থা খুবই খারাপ এবং এটার উন্নয়ন প্রয়োজন। এক্ষেত্রে আমি অবশ্যই সড়ক পরিবহন ও সেতু এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের, আমাদের মাননীয় উপদেষ্টা ফজলুল কবির খান স্যার আছেন, ওনার সঙ্গে কথা বলব।’
সাতক্ষীরায় দুই দিনের সফর শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে প্রেস ব্রিফিংয়ে আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এমন মন্তব্য করেন। শনিবার (১২ অক্টোবর) রাতে জেলা সার্কিট হাউসে সাতক্ষীরা জেলা সফর সম্পর্কিত বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন তিনি।
উপদেষ্টা বলেন, ‘দেশে অনেক বড় একটা পরিবর্তন এসেছে। আমরাও শেখার চেষ্টা করছি। আসলে আন্দোলন করতে করতে আন্দোলনের একটা অভ্যস্ততা তৈরি হয়েছে। দীর্ঘ ছয় বছর ক্যাম্পাসের বিভিন্ন কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলাম। কিন্তু এখন প্রশাসনের জায়গা থেকে, সরকারের জায়গা থেকে, দায়িত্বের জায়গা থেকে এখানে ল্যান্ড করা সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি অভিজ্ঞতা। একইসঙ্গে শিখছি এবং সর্বোচ্চ পর্যায়ে কাজ করার চেষ্টা করে যাচ্ছি।’
শ্যামনগর উপজেলার যশোরেশ্বরী কালীমন্দিরের স্বর্ণের মুকুট চুরি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ওই ঘটনাটির কারণে সাতক্ষীরায় আসা। আমি গিয়ে সেখানে যেটা দেখেছি, মন্দিরের সভাপতি আছেন, তিনি নিজেই বলেছেন যে সেখানে রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের গাফিলতি ছিল। দরজা বন্ধ না করেই চলে গেছিল। ফলে মুকুট চুরি করার মতো ঘটনাটি ঘটেছে।’
‘সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পাওয়া গেছে এবং সেখানে মামলা হয়েছে। আমি এসপি সাহেবের মাধ্যমে জেনেছি যে সন্দেহভাজন চারজনকে ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যাকে সিসি ক্যামেরায় দেখা গেছে তাকে শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। এখন পর্যন্ত স্থানীয় কেউ তার ছবি দেখে শনাক্ত করতে পারেনি। ধারণা করা হচ্ছে সে বাইরের কোথাও থেকে এসেছে। প্রয়োজনে এটা আমরা জাতীয় দৈনিকে দিয়েও তাকে শনাক্ত করার প্রচেষ্টা করব।’
শেখ হাসিনার সরকারের সমালোচনা করে আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘আমরা তো নতুন কিছু গড়ে তুলি নাই। যা পেয়েছি শেখ হাসিনার কাছ থেকে। সরকারের কাঠামোটা আসলে যেটা আওয়ামী লীগ রেখে গেছে, সেটাই পেয়েছি। শুধু উপরের মাথাগুলো চেঞ্জ হয়েছে। আমরা যদি সব জায়গায় লোকজন পরিবর্তন করেও দিই, তারপরও যে সিস্টেমে তারা অভ্যস্ত, সেভাবে চলবে।’
‘এখন তো আমি চাইলেই কাউকে দুই দিনের ভিতরে, একটা বিসিএস দিয়ে ডিসির পদে কাউকে বসাই দিতে পারব না। অবশ্যই একটা জার্নি আছে, একটা লার্নিং প্রসেস আছে। চলমান সিস্টেমটাকে কীভাবে সংস্কার করা যায়, সংস্কার কমিশনগুলো আশা করি এক্ষেত্রে ভালো প্রস্তাবনা রাখতে পারবে।’
‘দেশের সার্বিক পূজার পরিস্থিতি খুবই ভালো’— উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘সাতক্ষীরায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির যে চিত্র আমি দেখেছি এবং সবার মধ্য যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক, এই উৎসব সফল করার জন্য সবাই এক হয়ে কাজ করছেন, এটি আমাকে অভিভূত করেছে।’
তিনি উদ্যোক্তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘উদ্যোক্তাবান্ধব বাংলাদেশ কীভাবে গড়ে তোলা যায়, সে বিষয়ে আমরা কাজ করব। আধুনিক ও যুগোপযোগী ট্রেনিং ব্যবস্থা চালু করব। কয়েকটি বিষয়ে আমরা পরিকল্পনা করেছি। বিশেষ করে আমাদের যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের একটি কেন্দ্রীয় তহবিল আছে। সেখান থেকে আপনারা যারা উদ্যোক্তা হবেন তাদের ঋণ দেওয়া হয়। ঋণের পরিমাণ বাড়ানোর জন্য আমরা চেষ্টা করছি।’
সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলামসহ জেলার বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
ইব্রাহিম খলিল/