৫ বছর পর ফিরলেন পালিয়ে যাওয়া স্ত্রী, প্রাণ গেল স্বামীর
সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জে স্ত্রীর পরকীয়ার জেরে দিলোয়ার হোসেন (৪৩) নামে এক ব্যক্তি খুন হয়েছেন। শুক্রবার (১১ অক্টোবর) দিবাগত রাতের কোনো এক সময় এ ঘটনা ঘটে। শান্তিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আক্রাম আলী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
নিহত দিলোয়ার হোসেন উপজেলার জয়কলস ইউনিয়নের কামরুপদলং গ্রামের নিম্বর আলীর ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শনিবার (১২ অক্টোবর) সকাল ৭টার দিকে পান্তা ভাত নিয়ে তার সাবেক স্ত্রী ঘরে ঢুকে দেখেন মাটিতে দিলোয়ারের নিথর দেহ পড়ে রয়েছে। এ সময় চিৎকার দিলে পার্শবর্তী লোকজন জড়ো হয়ে মরদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেন।পরে পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে সুরতহাল তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। নিহত দিনমজুর দিলোয়ারের কোনো বসতবাড়ি না থাকায় তিনি কামরুপদলং গ্রামের মস্তাই মিয়ার বাংলো বাড়িতে ছেলেকে নিয়ে থাকতেন। দিনমজুরের কাজ করে সংসার চালাতেন দিলোয়ার।
পরিবারিক সূত্রে জানা যায়, দিলোয়ার হোসেন ১৫ বছর আগে সুনামগঞ্জ সদর থানার আফতানগর ইউনিয়নের আলমপুর গ্রামের রশিদ আলীর মেয়ে তারাবানুকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর তাদের দুই মেয়ে ও এক ছেলের জন্ম হয়। তিন সন্তানের জন্মের পর তারাবানু পরকীয়ায় আসক্ত হন উপজেলার শিমুলবাঁক ইউনিয়নের বাহাদুরপুর গ্রামের মাধব আলীর ছেলে জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে। বিষয়টি জানাজানি হলে বছর পাঁচেক আগে প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়ে যান তারাবানু। পালানোর পাঁচ বছর পর গত ৭ অক্টোবর পুনরায় চলে আসেন সাবেক স্বামীর বাড়িতে। সামাজিকভাবে ১৩ অক্টোবর সাবেক স্বামীকে বিয়ে করার জন্য সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেন। এ খবর পেয়ে প্রেমিক সিএনজিচালক জাহাঙ্গীর দুই দিন আগে কামরুপদলং গ্রামে এসে তারাবানুর কাছে তার রেখে দেওয়া মোবাইল ফোনের সিম নিতে চান। কিন্তু দিলোয়ার সেই সিমটি ভেঙে ফেলেছেন বলে তারাবানু তাকে জানিয়ে দেন। তারপর চলে যান জাহাঙ্গীর।
এলাকাবাসী ও নিহতের পরিবারের লোকজন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রকৃত খুনিদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার জোর দাবি জানিয়েছেন।
শান্তিগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আক্রাম আলী ঢাকা পোস্টকে জানান, খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েছি। মরদেহের সুরতহাল তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠিয়েছি। নিহতের পরিবারের কেউ এখনো মামলা করেনি। ঘটনার সঙ্গে জড়িত প্রকৃত খুনিদের আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।
তামিম রায়হান/আরএআর