সাবেক এমপি হারুনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও হত্যাচেষ্টার দুই মামলা
কুমিল্লা-৩ (মুরাদনগর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুনের বিরুদ্ধে দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। একটি মামলায় ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যাচেষ্টার পর চাঁদা আদায় এবং আরেকটিতে মাছের খামার থেকে চাঁদাবাজির অভিযোগ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) রাতে মুরাদনগর থানায় মামলা দুটি দায়ের করা হয়। বুধবার (৯ অক্টোবর) বিকেলে মুরাদনগর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুবুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
দুটি মামলার একটির বাদী মুরাদনগর উপজেলা সদরের নায়েব আলীর ছেলে মো. আলমগীর হোসেন। তিনি উপজেলা সদরের বাসস্ট্যান্ডের পাশে মেসার্স মোহাম্মদীয়া ইলেকট্রনিকসের স্বত্বাধিকারী। তার দায়ের করা মামলায় ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুনকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। এছাড়া নামসহ ১৫ জন এবং অজ্ঞাত ৪০-৪৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।
তার মামলায় অভিযোগ করা হয়, ২০২০ সালের ২০ মার্চ রাতে উপজেলা সদরের বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন মোহাম্মদীয়া ইলেকট্রনিকসের স্বত্বাধিকারী আলমগীর হোসেন তার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে অবস্থানকালে সাবেক সংসদ সদস্য ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুনের নির্দেশে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের ৪০ থেকে ৪৫ নেতা-কর্মী ও সন্ত্রাসী দেশীয় অস্ত্র নিয়ে দোকানে এসে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। এ সময় তিনি চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় তারা দেশীয় অস্ত্র দিয়ে তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে কুপিয়ে ও পিটিয়ে মাথা, হাত, পায়ে রক্তাক্ত জখম করেন। এ সময় হামলাকারীরা দোকানে থাকা ৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যান। এ ঘটনায় তিনি মামলাটি দায়ের করেছেন।
আরও পড়ুন
অপরদিকে, একইদিন হারুনকে প্রধান আসামি করে চাঁদাবাজির মামলা করেছেন মহসিন মিয়া নামে স্থানীয় এক আইনজীবী। তিনি উপজেলার ধামঘর ইউনিয়নের দড়িকান্দি গ্রামের মৃত আবদুল মালেকের ছেলে।
তার দায়ের করা মামলায় ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুনসহ ১০-১২ জনকে (অজ্ঞাত) আসামি করা হয়েছে।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, ২০১৯ সালে মুরাদনগর উপজেলার ধামঘর ইউনিয়নের দড়িকান্দি বিলে ‘মোল্লা ফিশারিজ’ নামের মাছের খামার গড়ে তোলেন তিনি। ওই খামার দাউদকান্দি উপজেলার বারপাড়া গ্রামের মিজানুর রহমানের কাছে বছরে ১৬ লাখ ৬৬ হাজার টাকায় ভাড়া দেন। খামারে মাছ চাষের পর ২০২০ সালের ১০ সেপ্টেম্বর মিজানুর রহমান যখন মাছ ধরতে আসেন, তখন সাবেক সংসদ সদস্য ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুনের নির্দেশে উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানার খামার গ্রামের রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে ১০ থেকে ১৫ সন্ত্রাসী এসে খামারে মাছ ধরা বন্ধ করে দেন। তারা ২৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা না দিলে খামারের মাছ ধরতে দেবেন না বলে হুমকি দেন। এ সময় বাধ্য হয়ে খামারের এক বছরের ভাড়ার ১৬ লাখ ৬৬ হাজার টাকা রূপালী ব্যাংকের একটি হিসাব নম্বর থেকে সাবেক সংসদ সদস্যের উপস্থিতিতে চেকের মাধ্যমে জোরপূর্বক আদায় করেন। এসব অভিযোগে মামলাটি দায়ের করেন তিনি।
ওসি মাহবুবুল হক বলেন, মঙ্গলবার রাতে মামলাগুলো নথিভুক্ত করা হয়েছে। মামলার আসামিরা সবাই গা ঢাকা দিয়েছেন। তাদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
আরিফ আজগর/এমজেইউ