শেষ সময়ে জমেছে পূজার কেনাকাটা
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা। এ সময়ে পূজারি ও ভক্তদের ব্যস্ততার যেন শেষ নেই। মণ্ডপ সাজানোর পাশাপাশি নিজ নিজ কেনাকাটায় ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। রাজশাহী নগরীর বিপণি বিতানগুলোতে ক্রেতাদের উপস্থিতি বাড়ার পাশাপাশি বেড়েছে বিক্রি।
শহরের মার্কেট ও শপিংমলে সনাতন ধর্মাবলম্বীর নারী-পুরুষসহ সব বয়সের মানুষ তাদের পছন্দ মতো পোশাক কিনছেন। পাশাপাশি কেনাকাটা করছেন খাবার ও পূজার জিনিসপত্র ছাড়াও উৎসবের সময় সেরা হওয়ার সব অনুষঙ্গ।
জানা গেছে, ০৯ অক্টোবর মহাষষ্ঠীতে দেবী দুর্গার বোধন, আমন্ত্রণ ও অধিবাসের মধ্যে দিয়ে শুরু হবে পাঁচদিনের শারদীয় দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা। এ বছর দুর্গার আগমন হবে দোলায় বা পালকিতে ও গমন করবেন গজ বা হাতিতে। এই বিশেষ ক্ষণের জন্য অপেক্ষার কমতি নেই ভক্ত অনুরাগীদের। তাই পূজার কেনাকাটা করছেন তারা।
মঙ্গলবার (০৮ অক্টোবর) সন্ধ্যায় নগরীর রেডিমেড পোশাকের দোকানগুলোতে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। তরুণীরা পছন্দের তালিকায় রেখেছেন লাল, কমলা ছাড়াও উজ্জ্বল বাহারি রঙের ও বিভিন্ন ডিজাইনের কামিজ, কুর্তি, গাউন, ঘের দেওয়া জামা। তবে নারীরা কিনছেন জামদানিসহ সফট কাতান, তসর ও সিল্ক শাড়ি। শুধু তাই নয়, অনেকেই কিনছেন জর্জেট শাড়ি ও হাফসিল্ক এবং দেশি তাঁতের শাড়ি। আর পুরুষরা শার্ট, প্যান্টের পাশাপাশি বেশি কিনছেন পাঞ্জাবি।
নগরীর সাহেব বাজারের শাড়ি ব্যবসায়ী রাকিব জানান, দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে তাদের বিক্রি ভালো হচ্ছে। নারীরা বেশি শাড়ি কিনছেন। তারা পছন্দ করে কিনছেন দেশি, ইন্ডিয়ান ও টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ি। শেষ মুহূর্তে ভিড় বেড়েছে। সনাতন ধর্মাবলম্বী ছাড়াও সাধারণ ক্রেতারাও আসছেন তাদের দোকানে।
পূজার কেনাকাটা করতে আসা আলুপট্টি এলাকার শ্যামলী রায় বলেন, পূজার কেনাকাটা হয়েছে। তবে অতিথি আপ্যায়নের কেনাকাটা এখনও হয়নি। সেগুলো কেনার পরে প্রসাদের জিনিসপত্র কিনব। এরপরে পরিবারের দু’জন সদস্যের কেনাকাটা বাকি আছে। তাদের পছন্দের পোশাক-স্যান্ডেল, জুয়েলারি কিনতে হবে। শেষে মায়ের জন্য নতুন শাখা, সিঁদুর কিনতে হবে।
এদিকে, স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বিক্রি ভালো বলে জানান বিক্রেতারা। নগরীর সাহেববাজার ছাড়াও নিউমার্কেট এলাকার পোশাক ও সু এর শো-রুমগুলোতে বিক্রি বেড়েছে। শো-রুমগুলোর পক্ষ থেকে দেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন অঙ্কের মূল্য ছাড়। ছাড়ে পছন্দের জিনিসপত্র কিনতে পেরে খুশি ক্রেতারা।
বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান কল্যাণ ফ্রন্ট রাজশাহী মহানগর শাখার সভাপতি অচিন্ত্য কুমার বিশ্বাস জানান, দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। প্রশাসনের পাশাপাশি মন্দির কমিটির পক্ষ থেকে প্রতিটি মণ্ডপে নিরাপত্তার জন্য স্বেচ্ছাসেবক থাকবে। এবার উৎসবমুখর ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে পূজা অনুষ্ঠিত হবে।
রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান বলেন, ডিউটিতে থাকাকালীন পূজা কমিটি ও স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে সমন্বয় করে ডিউটি পালন করবে প্রশাসন। অপ্রীতিকর কোনো কিছু পরিলক্ষিত হলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাতে বলা হয়েছে। এছাড়াও আরএমপির তথ্য সেবা কেন্দ্রের হটলাইন নম্বরে ও পুলিশ কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। আরএমপির বিভিন্ন নিরাপত্তা ডিউটিতে নিয়োজিত সদস্যদের নিজ নিজ দায়িত্বে তৎপর থাকতে হবে।
প্রসঙ্গত, রাজশাহী জেলায় গত বছর ৪৬৮ মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে জেলায় ৩৮৯টি ও মহানগরীতে ৭৯টি মণ্ডপে শারদীয় দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হয়।
শাহিনুল আশিক/এফআরএস