নরসিংদীতে ছাত্রদল নেতাকে হত্যার প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ
নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার মরজাল ইউনিয়নে ছাত্রলীগের সাবেক নেতাকর্মীদের ছুরিকাঘাতে আহত ছাত্রদল নেতা জুনায়েদ আল হাবিবের (২২) মৃত্যুর ঘটনায় মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন নিহতের স্বজন ও স্থানীয়রা। মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) সকাল থেকে রায়পুরা উপজেলার মরজাল এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে বেলা ১১টায় তারা মহাসড়কে গিয়ে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করেন।
এ সময় বিক্ষুব্ধরা রাস্তার পাশে থাকা একটি দোকানে ভাঙচুর শেষে অগ্নিসংযোগ করেন। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে দোকানের আগুন নেভায়। এছাড়াও মহাসড়কে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করায় সড়কে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।
নিহত জুনায়েদ নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার মরজাল ইউনিয়নের বটিয়ারা এলাকার মো. জসিম উদ্দিনের ছেলে। তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সমন্বয়ক ছিলেন বলে মিছিল করেন বিক্ষোভকারীরা। টানা এক ঘণ্টারও বেশি সময় অবরোধ চলার পর দুপুর ১২টায় আয়োজকরা জুনায়েদ হত্যায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়ে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে মহাসড়ক থেকে চলে যান। এরপর স্বাভাবিক হয় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে যান চলাচল।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২৮ সেপ্টেম্বর উপজেলার বটিয়ারা মোড়ে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা স্বাধীন ও পিয়ালের নেতৃত্বে জুনায়েদকে ছুরিকাঘাত করেন কয়েকজন। ছুরিকাঘাতে আহত জুনায়েদকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ ঘটনায় ৩০ সেপ্টেম্বর জুনায়েদের চাচা মো. শফিক বাদী হয়ে স্বাধীন ও পিয়ালসহ ১৪ জনকে আসামি করে রায়পুরা থানায় মামলা করেন। পরে পুলিশ একজনকে গ্রেপ্তার করে। টানা ৯ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর সোমবার দুপুরে জুনায়েদের অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় চিকিৎসকরা আইসিইউতে ভর্তির পরামর্শ দেন। এদিকে ঢামেকে আইসিইউ খালি না থাকায় তাকে রাজধানীর গ্রিন লাইফ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে ভর্তির প্রস্তুতিকালে সোমবার সন্ধ্যায় তার মৃত্যু হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক উত্তরা আনোয়ারা মডেল কলেজের ছাত্র সাইফুল ইসলাম ফয়সাল বলেন, জুনায়েদ আল হাবিব নামে নরসিংদীতে কোনো সমন্বয়ক নাই। সে ছাত্রদলের দেখেই সমন্বয়ক দাবি করছে। এসব ব্যাপার নিয়ে কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক সারজিস আলমের সঙ্গে কথা বলবেন বলেও জানান তিনি।
এ ব্যাপারে রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ আব্দুল জব্বার বলেন, মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে এ ঘটনার সৃষ্টি। পুরোপুরি পুলিশিং কার্যক্রম শুরু না হওয়ায় এবং অফিসার ফোর্স কম থাকায় পুরোপুরি ভাবে কাজ করা যাচ্ছে না। সকালে কিছুক্ষণ বিক্ষোভ করে তারা চলে গেছে। এখন যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।
তন্ময় সাহা/আরএআর