কাশিমপুর কারাগারে সাঈদী-মামুনুল-মাদানী, সাবরিনা-পাপিয়ার ঈদ
গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে অন্য বন্দিদের সঙ্গে ঈদ করেছেন জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, হেফাজতে ইসলামের নেতা মামুনুল হক, আলোচিত ‘শিশুবক্তা’ খ্যাত হাফেজ রফিকুল ইসলাম মাদানী, ডা. সাবরিনা চৌধুরী, বিএনপি নির্বাহী কমিটির সদস্য নিপুন রায় চৌধুরী ও নরসিংদীর যুব মহিলা লীগের সাবেক নেত্রী শামিমা নূর পাপিয়া।
করোনা মহামারির কারণে এ ঈদে স্বজনদের সঙ্গে বন্দির সাক্ষাৎ ও বন্দিদের বাইরে থেকে রান্না করার খাবার সরবরাহের অনুমতি দেওয়া হয়নি।
কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের জ্যেষ্ঠ জেল সুপার মো. গিয়াস উদ্দিন বলেন, কারাগারে মামুনুল হকসহ হেফাজতে ইসলামের ৪২ নেতা, সোনাগাজী থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনসহ প্রায় দুই হাজার ৮০০ বন্দি রয়েছেন। তাদের মধ্যে এক হাজারের মতো ফাঁসি, পাঁচশর মতো যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি রয়েছেন।
এ কারাগারের ভেতরে বন্দিদের জন্য ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ঈদের ২২টি জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বন্দিদের সকালে পায়েস-মুড়ি, দুপুরে পোলাও, মাংস, ডিম, মিষ্টি, কোল্ডড্রিংস পান-সুপারী আর রাতে সাদা ভাত, রুই মাছের মাথা দিয়ে রান্না করা মুড়িঘণ্ট ও মাছ ভাজা দেওয়া হয়েছে বলে জানান এই জেল সুপার।
কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার পার্ট ১-এর অতিরিক্ত দায়িত্ব পালনকারী কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের জ্যেষ্ঠ জেল সুপার মো. গিয়াস উদ্দিন বলেন, এ কারাগারে রয়েছেন জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলার আসামি সাবেক উইং কমান্ডার মো. শাহাবুদ্দিন, ডেসটিনির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসেন, সাবেক লে. কর্নেল দিদার হোসেন ও ডিআইজি প্রিজন গোপাল বণিকসহ দেড় হাজারের মতো বন্দি। তাদের মধ্যে ৬৮ জন ফাঁসির আসামি ও ৯০ জন যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত। এ কারাগারে ঈদের পাঁচটি জামাত হয়েছে বলে তিনি জানান। কারাগারটিতে বন্দিদের সকালে পায়েস-মুড়ি, দুপুরে পোলাও, মাংস, ডিম, মিষ্টি, কোল্ডড্রিংস পান-সুপারী আর রাতে সাদা ভাত, রুই মাছের মাথায় রান্না করা মুড়িঘণ্ট ও মাছ ভাজা দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার পার্ট ২-এর জেল সুপার মো. আব্দুল জলিল জানান, এ কারাগারে শিশুবক্তা খ্যাত রফিকুল ইসলাম মাদানী, পুলিশের সাবেক ডিআইজি খান সাইদ হাসান, নারায়ণগঞ্জের সেভেন মার্ডার মামলার আসামি লে. কর্নেল তারিক সাইদ, হলমার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. তানবীর মাহমুদসহ আড়াই হাজারের মতো বন্দি রয়েছেন। তাদের মধ্যে ১৩৪ জন ফাঁসির আসামি, ৫৩৭ জন সশ্রম ও ৫২ জন বিনাশ্রম সাজাপ্রাপ্ত আসামি রয়েছেন। এ কারাগারে ঈদের তিনটি জামাত হয়েছে বলে তিনি জানান।
এ কারাগারের বন্দিদের খাবার তালিকায় সকালে পায়েস-মুড়ি, দুপুরে পোলাও, মাংস, কোল্ডড্রিংস, মিষ্টি, পান-সুপারি, রাতে সাদা ভাত, মাছ, মুরগীর লটপটি (গিলা-কলিজা) ছিল বলে জানান তিনি।
কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগারের সুপার হালিমা খাতুন জানান, এখানে করোনা টেস্টের জাল সনদ দেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের সাবেক চিকিৎসক ডা. সাবরিনা চৌধুরী, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য নিপুন রায় চৌধুরী ও নরসিংদীর যুব মহিলা লীগের সাবেক নেত্রী শামিমা নূর পাপিয়াসহ সাত শতাধিক নারী বন্দি রয়েছেন। সেখানে বিভিন্ন বন্দির ৬৩ জন শিশুও রয়েছে।
এ কারাগারে ২৭ জন ফাঁসির আসামি ও ৬৩ জন যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত আসামি রয়েছে। ঈদ উপলক্ষে সেখানেও বিশেষ খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার পার্ট ২-এর জেল সুপার মো. আব্দুল জলিল জানান, করোনা মহামারিকালে কারাগারের বাইরে থেকে স্বজনদের আনা রান্না করা খাবার ও বন্দিদের সঙ্গে স্বজনদের সাক্ষাৎ নিষিদ্ধ থাকলেও বন্দিরা টেলিফোনে স্বজনদের সঙ্গে কথা বলতে পেরেছেন।
শিহাব খান/এসএসএইচ