সাড়ে ৩ কোটি টাকার চাল নিয়ে লাপাত্তা খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা
প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকার সরকারি চাল নিয়ে লাপাত্তা লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী খাদ্যগুদামের পরিদর্শক ফেরদৌস আলম। এ ঘটনায় শুক্রবার (৪ অক্টোবর) থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। আর আজ সকালে ঘটনা তদন্তে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন জেলা প্রশাসক এইচ এম রকিব হায়দার।
জানা গেছে, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী খাদ্যগুদামের কর্মকর্তা খাদ্য পরিদর্শক (ওসি এলএসডি) ফেরদৌস আলম বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) ভোররাতের আঁধারে ২৫টি ট্রলিযোগে গুদাম থেকে চাল সরিয়ে ফেলেন। যার মূল্য সাড়ে তিন কোটি টাকা। পরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জেলা খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে তাৎক্ষণিক গুদামে অভিযান চালান কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জহির ইমাম। এ সময় উপজেলার চলবলা ইউনিয়নের সুকানদিঘী এলাকার চালকল মালিক একরামুল হকের গুদাম থেকে ৩০ মেট্রিক টন ওজনের ৬০০ বস্তা চাল উদ্ধার করা হয়। এ সময় গুদাম মালিক পলাতক থাকায় তাকে পাননি অভিযানিক দলটি। এ ঘটনা তদন্তে শুক্রবার সকালে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন জেলা প্রশাসক এইচ এম রকিব হায়দার। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে আহ্বায়ক ও জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রককে (ভারপ্রাপ্ত) সদস্য সচিব করে গঠিত তদন্ত কমিটিকে আগামী ৫ কর্মদিবসের মধ্যে সুপারিশসহ প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়।
এদিকে শুক্রবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসক এইচ এম রকিব হায়দার। তদন্ত কমিটিও তদন্ত শুরু করেছে। একইসঙ্গে তছরুপকৃত চাল উদ্ধার ও লাপাত্তা গুদাম কর্মকর্তা ফেরদৌস আলমের সন্ধানে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এ ঘটনায় লাপাত্তা গুদাম কর্মকর্তা ফেরদৌস আলমকে আসামি করে কালীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেছেন উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা এনামুল হক।
কালীগঞ্জ উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা এনামুল হক বলেন, সরকারি কর্মকর্তা হয়ে তিনি যে কাজ করেছেন তা কোনোভাবেই মেনে নেওয়ার মতো নয়। আমরা থানায় মামলা দায়ের করেছি। এ ছাড়া একটি তদন্ত টিম গঠন হয়েছে। আশা করছি তাকে দ্রুত আইনের আওতায় নিয়ে আসব।
কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জহির ইমাম বলেন, ট্রলিতে করে রাতের আঁধারে গুদাম থেকে চাল সরানো হচ্ছে এমন একটি গোপন খবরে গুদাম পরিদর্শনে যাই। সেখানে গুদাম কর্মকর্তাকে পাওয়া যায়নি। পরে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পরামর্শে গুদাম সিলগালা করা হয়েছে। পরে অভিযান চালিয়ে ৬০০ বস্তা চাল উদ্ধার করা হয়েছে। গুদাম কর্মকর্তার সন্ধান পেতে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। তছরুপকৃত চাল উদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত থাকবে।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক এইচ এম রকিব হায়দার বলেন, গুদামের ২৫০ মেট্রিক টন চাল তছরুপ করে নিখোঁজ রয়েছেন গুদাম কর্মকর্তা ফেদৌস আলম। আমরা অভিযান চালিয়ে ৬০০ বস্তা অর্থাৎ ৩০ মেট্রিক টন চাল উদ্ধার করেছি। বাকিটা উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ঘটনা তদন্তে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
নিয়াজ আহমেদ সিপন/এমজেইউ