ভর্তি নিয়েও রেজিস্ট্রেশন হলো না একাদশ শ্রেণির ১০০ শিক্ষার্থীর
বিদ্যালয়ে নিয়োগ হয়নি একজন শিক্ষকও। তবুও একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি করা হয়েছে ১০০ শিক্ষার্থীকে। তাই গেল তিন মাসেও হয়নি একটি ক্লাস। অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ রাসেল মডেল স্কুলের একাদশ শ্রেণির প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা। এমন অবস্থায় মানবিক ও বিজ্ঞান বিভাগের ১০০ শিক্ষার্থীরা পড়েছেন বিপাকে।
শিক্ষার্থীদের ও অভিভাবকরা বলছেন, যথাযথ প্রক্রিয়া মেনে তাদের সন্তানরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিতে ভর্তি হয়েছে। কিন্তু ভর্তি হওয়ার পর রেজিস্ট্রেশন না দিয়ে এখন স্কুল কর্তৃপক্ষ বলছেন তাদের স্কুল থেকে বাইরের কলেজে ট্রান্সফার করে দেওয়া হবে। অন্য সব কলেজগুলোতে ভর্তি সম্পন্ন হয়েছে সিট ফাঁকা নাই। এমন অবস্থায় পড়াশোনা নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়েছেন ১০০ শিক্ষার্থী।
জানা গেছে, এবারই প্রথম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি একাদশ শ্রেণিতে বিজ্ঞান ও মানবিক বিভাগে শিক্ষার্থী ভর্তি নিয়েছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ রাসেল মডেল স্কুল কর্তৃপক্ষ বোর্ডের যথাযথ প্রক্রিয়া মেনে অনলাইনে আবেদনের মাধ্যমে ভর্তির সুযোগ পায় ১০০ জন শিক্ষার্থীরা। তারা ভর্তির জন্য ৫০০০ ও এক মাসের বেতন ২০০০ টাকা দিয়ে স্কুলে ভর্তি হন। কিন্তু ভর্তির পর থেকে তিন মাস অতিবাহিত হলেও তাদের কোনো ক্লাস নেওয়া হয়নি। ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রেজিস্ট্রেশনের মেয়াদ থাকলেও রেজিস্ট্রেশন করা হয়নি। উল্টো তাদের ট্রান্সফার নিয়ে অন্য কলেজে ভর্তির জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সাকিলা ইসলাম নামের শিক্ষার্থীর অভিভাবক বলেন, তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে অন্য কোনো কলেজে ভর্তি হতে চান না। তাদের এই স্কুলে কিংবা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল ও কলেজে ট্রান্সফার করা হোক।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোনো শাখা খুলতে হলে প্রথমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির অনুমোদন নিতে হয়, এরপর শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট, বোর্ড অব গর্ভনর ও সবশেষে সিন্ডিকেটের অনুমোদন নিতে হয়। কিন্তু শেখ রাসেল মডেল স্কুলে ম্যানেজিং কমিটি কারও অনুমোদন ছাড়াই শুধুমাত্র বোর্ডের অনুমোদন নিয়েই একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি করিয়েছে। শেখ রাসেল মডেল স্কুলে একাদশ শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তির কোনো অনুমোদন নাই। সেখানে কলেজ সেকশনে শিক্ষকও নেই।
রাবির শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. আকতার বানু বলেন, উচ্চ মাধ্যমিক শাখা খোলার ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের যে বিধিবিধান মানার কথা ছিল সেটি মানা হয়নি। বিধায় শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন করার জটিলতা দেখা দিয়েছে। বিষয়টি শিক্ষাবোর্ডকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন জটিলতার কথাও জানানো হয়েছে। আমরা এই জটিলতা নিরসনে চেষ্টা করছি।
তিনি আরও বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিতে একাদশ শ্রেণিতে একটি শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়নি। মজার বিষয় হচ্ছে, রাস্তার দুই পাশে দুটি কলেজ। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল অ্যান্ড কলেজ আগে থেকে রয়েছে। কলেজটি হাওয়ার ওপরে হয়েছে। ভর্তির তিন মাস পরও একটা ক্লাস হয়নি। তারা বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ভর্তি নিয়েছে। অথচ তাদের ল্যাব নেই।
রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডের কলেজ পরিদর্শক এনামুল হক বলেন, এটার জন্য প্রতিষ্ঠানই দায়ী। তারা ভর্তি করেছে রেজিস্টেশন করবে না কেন। পার্ট টাইম টিচার নিয়োগ দিয়ে চালিয়ে নেন। না হয় আমরা পরেরবার বন্ধ করে দেব। এতগুলো শিক্ষার্থী আমরা শিফট করব কিভাবে।
শাহিনুল আশিক/আরকে