সঙ্গে থাকার জেদ করেছিলেন নববধূ, হাত বেঁধে নদীতে ফেলে দেন স্বামী
লালমনিরহাটের আদিতমারীর তিস্তার চরে মেহেদি রাঙানো হাত পেছনে বাঁধা অবস্থায় জোসনা বানু (১৮) নামে নববধূর মৃত্যুর রহস্য উদ্ঘাটন হয়েছে। দুই হাত বেঁধে সেতু থেকে ধাক্কা দিয়ে নদীতে ফেলে হত্যা করেন তার স্বামী জাহিদ ইসলাম (২০)। জিজ্ঞাসাবাদে জাহিদ বিষয়টি স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
গত রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার চৌরাহা মাদরাসা এলাকার তিস্তার চর থেকে জোসনার মেহেদি রাঙানো হাত বাঁধা অবস্থায় মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় তার স্বামী জাহিদকে আটক করা হয়। এরপর তাকে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে তিনি এ হত্যার কথা স্বীকার করেন।
নিহত জোসনা নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের জহর আলীর মেয়ে। সম্প্রতি একই উপজেলার ঝুনাগাছ চাপানি ইউনিয়নের পূর্বপাড়া গ্রামের বাসিন্দা জাহিদের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। জাহিদ দিনাজপুর শহরে ভেকু গাড়ি চালান বলে জানা গেছে।
আরও পড়ুন
জাহিদের স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, জাহিদ দিনাজপুরে কাজ করতেন। কিন্তু বিয়ের পরপরই জোসনা তার সঙ্গে ঢাকা যাওয়ার জন্য জেদ ধরেন। তিনি জাহিদের সঙ্গে ঢাকায় গিয়ে থাকতে চান বলে জানিয়েছিলেন। তাকে ঢাকায় না নেওয়া হলে আত্মহত্যা করবেন বলেও হুমকি দেন জোসনা। এ কথা শুনে জোসনাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন জাহিদ। পরিকল্পনা অনুযায়ী গত শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ঘুরতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে জোসনাকে রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার মহিপুরে শেখ হাসিনা সেতুতে বেড়াতে নিয়ে যান জাহিদ। এরপর সেখানে তার হাত বেঁধে ওই সেতু থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন তিনি।
ডিমলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেবাশীষ রায় ঢাকা পোস্টকে বলেন, জোসনা নিখোঁজ হওয়ার দুই দিন পর জাহিদ একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে থানায় আসেন। পরে উদ্ধার হওয়া মরদেহের ছবি দেখে সেটি তার স্ত্রী জোসনা বলে নিশ্চিত করেন। তার স্ত্রী নিখোঁজ হওয়ার সময় তিনি দিনাজপুরে ছিলেন বলেও জানিয়েছিলেন জাহিদ।
ওসি আরও বলেন, তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় জাহিদের অবস্থান নির্ণয় করা হয়। এরপর তাকে আরও ব্যাপকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করার একপর্যায়ে তিনি তার স্ত্রীকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। এরপর জাহিদকে ঘটনাস্থলে নেওয়া হলে তিনি নিজেই হত্যার ঘটনার বর্ণনা দেন।
শরিফুল ইসলাম/এফআরএস