জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে দুই ধর্মের পুরোহিত দিলেন শান্তির বার্তা
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কলাপাড়া উপজেলা দক্ষিণ জোনের কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে সাম্প্রদায়িক সৌন্দর্যের দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন হিন্দু ও বৌদ্ধ ধর্মের দুই পুরোহিত। সব ধর্মের মানুষকে একসঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সমাজে বসবাস করার আহ্বান জানান তারা।
বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে কুয়াকাটা পর্যটন কর্পোরেশন মাঠে বাংলাদেশ জামায়েতে ইসলামী কলাপাড়া উপজেলা দক্ষিণ জোনের কর্মী সম্মেলনে মেহমান হিসেবে উপস্থিত হন তারা দুজন। এ সময় তাদেরকে বিশেষ অতিথি হিসেবে মঞ্চে ডেকে নেওয়া হয়।
কুয়াকাটা মিস্ত্রিপাড়া সীমা বৌদ্ধ বিহারের ভিক্ষু অধ্যক্ষ উত্তম মহাথেরো অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বলেন, একটি গাড়িতে যেমন ব্রেক না থাকলে দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা থাকে। ঠিক তেমনি কোনো সরকারও যখন ব্রেক না ধরে তখন এ রকম দুর্ঘটনার শিকার হয়। বিগত সরকারের লোকজন এত পরিমাণে অবৈধ সম্পদ তৈরি করেছে যে জনগণের ভোগান্তি তাদের চোখেই পড়েনি। এই দুনিয়ায় যাহা কিছু আছে তা আমরা কেউই নিয়ে যেতে পারব না তাহলে এত সম্পদের পিছনে ছুটে কি লাভ।
তিনি আরও বলেন, নারীরা আমাদের সমাজে চলাফেরা করে। সবাই কোনো না কোনো পোশাক পরে। তবে আমার পরামর্শ সবাই যেন একটু বেশি পোশাক গায়ে জড়িয়ে চলাফেরা করবেন। তাহলে সেটা সমাজেরও সৌন্দর্য এবং ধর্মেরও সৌন্দর্য। আমরা যে ধর্মেরই হই না কেন আমরা সবাই তো মানুষ। এটাই আমাদের সবচেয়ে বড় পরিচয়।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত কুয়াকাটা শ্রী শ্রী রাধা কৃষ্ণ মন্দিরের পুরোহিত ইঞ্জিনিয়ার নেহার রঞ্জন মন্ডল বলেন, আজকে আমাকে এই অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ করা হয়েছে,এটা আমার কাছে নতুন অভিজ্ঞতা। আমি মন্দিরে কাজ করছিলাম তখন আমার কাছে এই অনুষ্ঠানের আমন্ত্রিত চিঠি পৌঁছে দেওয়া হয়। গত ৫ আগস্টের পরে দেশের এই ক্লান্তি লগ্নে আমাদের হিন্দু সম্পদের মন্দিরগুলো যেভাবে আপনারা পাহারা দিয়েছেন এবং আমাদের মনের সাহস ও জোর বাড়িয়েছেন তা সত্যিই প্রশংসনীয়। সারাজীবন আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকব।
তিনি আরও বলেন, বিগত দিনে প্রতিটি ঈদের সময় আমার কাছে একটি প্যাকেট আসত। প্যাকেটে সেমাই চিনি দুধ কিচমিচসহ আরও অনেক কিছু থাকত। পরে জানতে পারি কুয়াকাটা পৌর জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা মাঈনুল ইসলাম মান্নান এগুলো উপহার স্বরূপ আমাকে পাঠিয়েছেন। আসলে এটাই আমাদের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অন্যতম সৌন্দর্য। আমাদের মন্দিরের পাশে একটি মসজিদ রয়েছে। সেই মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন এবং কমিটির লোকজনের সঙ্গে আমাদের মন্দিরের সবার খুব ভালো সম্পর্ক।
পরে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বাংলাদেশ জামায়েতে ইসলামী ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি ড.শফিকুল ইসলাম মাসুদ এর বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।
এসএম আলমাস/আরকে