বিএনপি থেকে বহিষ্কারের পরও নদী থেকে বালু উত্তোলন, ড্রেজার জব্দ
দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং দলের সুনাম ক্ষুণ্ন করার অভিযোগে মুন্সীগঞ্জের টংগিবাড়ী উপজেলা বিএনপির নেতা শামীম মোল্লাকে দল থেকে বহিষ্কারের পরও তিনি পদ্মার শাখা নদীতে ড্রেজার বসিয়ে বালু তুলে বিক্রি করছিলেন। পরে এলাকাবাসী ক্ষিপ্ত হয়ে তার বালু তোলার ড্রেজার সাফা মারওয়া সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) রাতে আটক করে পুলিশে দিয়েছে। ড্রেজারটি রাত ১২টার দিকে জব্দ করেছে পুলিশ।
শামীম মোল্লা টংগিবাড়ী থানার দীঘিরপাড় ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য। গত বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তাকেসহ বিএনপির আরেক নেতা কামাল বেপারীকে বহিষ্কারের কথা জানান জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মো. কামরুজ্জামান রতন।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও দলের সুনাম ক্ষুণ্ন করায় তাদের বিরুদ্ধে এই শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর শামীম মোল্লা উপজেলার দিঘিরপাড় ও কামারখাড়া এলাকার পদ্মা নদীতে অবৈধভাবে ড্রেজার বসিয়ে নদী থেকে অবাধে বালু কেটে বিক্রি করছিলেন। এতে ওই এলাকার মানুষের বাড়িঘর হুমকির মুখে পড়ে। এলাকাবাসী প্রতিবাদ করলে ওই এলাকার বালু দস্যুরা এলাকার মানুষের মনে ভীতির সঞ্চারের জন্য দিঘিরপার বাজারে অস্ত্রের মহড়া দেয়। এ নিয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হলে এবং বিভিন্ন দপ্তরে এলাকাবাসীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিএনপি নেতা শামীম মোল্লাকে বাহিষ্কার করা হয়। কিন্তু বহিষ্কারের পরও তিনি তার ব্যবহৃত ড্রেজার সাফা মারওয়া বসিয়ে সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৯ টার দিকে টংগিবাড়ী উপজেলার দিঘিরপাড় এলাকার পদ্মা নদীতে বালু তোলার চেষ্টা করলে স্থানীয়রা ড্রেজার আটক করে দিঘিরপাড় বাজার এলাকায় নিয়ে আসলে সেটি জব্দ করে পুলিশ।
ড্রেজারের চালক নেয়ামত বলেন, দিঘিরপারের মোল্লারা ড্রেজারটি ভাড়া এনে এই এলাকার নদী হতে বালু কাটছেন।
কোন মোল্লা কাটছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, শামীম মোল্লাসহ অন্যান্য অনেক মোল্লারা মিলেই বালু কাটছেন।
এ ব্যাপারে স্থানীয় বাসিন্দা জনি মোল্লা বলেন, দীর্ঘদিন যাবৎ নদী থেকে বালু কেটে শামীম মোল্লা আমাদের বাড়িঘর ও জমি নষ্ট করেছে। আমাদের নদীর নিচে তলিয়ে থাকা জমির মাটিগুলো কেটে বিক্রি করে দিয়েছে। আমাদের এলাকার বাড়িঘর নদীতে ভাঙছে। তার ড্রেজার এলাকার লোকজনসহ হাতেনাতে ধরছি।
তবে অভিযুক্ত শামীম মোল্লা নদী থেকে বালু কাটার বিষয়টি অস্বাীকার করে কালা শামীম নামে তার এলাকার অপর এক ব্যাক্তি অবৈধভাবে বালু কেটে বিক্রি করছেন বলে জানান।
এ ব্যাপারে চর আবদুল্লাহপুর নৌ পুলিশ ফাড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত ইনচার্জ এসআই মজিবুর রহমান বলেন, নদীতে অবৈধভাবে মাটি কাটার সময় এলাকাবাসী একটি বালু কাটার ড্রেজার আটক করে আমাদের জানালে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে রাত ১২টার দিকে ড্রেজারটি জব্দ করে নিয়ে এসেছি। এ সময় ড্রেজারের মালিক কর্মচারী কাউকে পাওয়া যায়নি।
ব.ম শামীম/আরএআর