বড়পুকুরিয়া খনি এলাকায় ১১ গ্রামের ক্ষতিগ্রস্তদের ৬ দফা দাবি
দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত ১১ গ্রামের মানুষ বিক্ষোভ মিছিল করেছেন। এছাড়া মানবন্ধনে ৬ দফা দাবি জানিয়েছেন।
রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামের বাসিন্দারা একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে খনি গেটে অবস্থান নেন। পরে সেখানে সড়কের দুই পাশে দাবি সম্বলিত ব্যানার-ফেস্টুন হতে দাঁড়িয়ে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন করেন।
ক্ষতিগ্রস্ত ১১ গ্রামের মধ্যে রয়েছে, চক মহেশপুর, বৈগ্রাম, কাশিয়াডাঙ্গা, মোবারকপুর, জব্বরপাড়া দক্ষিণ রসুলপুর (বড়), দক্ষিণ রসুলপুর (ছোট), পূর্ব জব্বরপাড়া, সাহাগ্রাম, দূর্গাপুর ও হামিদপুর।
মানববন্ধন ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামবাসীরা ৬ দফা দাবি জানান, দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- খনি কর্তৃপক্ষের সমঝোতা চুক্তি মোতাবেক ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিটি পরিবার হতে স্থায়ী চাকরি দিতে হবে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার ১১টি গ্রামের বাড়িঘর ফাটল, কাঁপুনি, ঝুঁকি-পূর্ণভাবে পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করছে তাদেরকে দ্রুত পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার ভূমিহীন প্রতিটি পরিবারকে মাইনিং সিটি অথবা উন্নতমানের বাসস্থান তৈরি করে দিতে হবে। ক্ষতিগ্রস্তদের এককালীন ক্ষতিপূরণের টাকা দিতে হবে। ক্ষতিগ্রস্তদের সুপেয় পানির ব্যবস্থা করতে হবে এবং ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় মসজিদ, মন্দির, স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল ও রাস্তা পুনর্নির্মাণ করে দিতে হবে। সেইসঙ্গে যেসব ক্ষতিগ্রস্তদের জমি থেকে কয়লা উত্তোলন করা হচ্ছে শতকরা ৫% হারে তাদেরকে কয়লা উৎপাদন বোনাস দিতে হবে।
মানববন্ধনে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ক্ষতিগ্রস্তদের দাবি আদায় বাস্তবায়ন সমন্বয় কমিটির সভাপতি গোলাম মোস্তফা বলেন, খনি এলাকা ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে, আমরা সবসময় আতঙ্কে থাকি। বর্তমানে বাড়িঘর ফাটলসহ কাঁপুনির কারণে রাতে শান্তিতে ঘুমাতে পারছি না। প্রতি মুহূর্তে সামনে বিপদ দেখছি। ঝুঁকি-পূর্ণভাবে পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করছি। এ বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে আমরা অধিকার আদায়ে আন্দোলন সংগ্রাম করে আসছি।
তিনি বলেন, কয়েক দফায় বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেড এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর লিখিতভাবে জানানো হলেও তিনি কোনও পদক্ষেপ নেয়নি। কর্তৃপক্ষ আমাদের প্রতি গুরুত্ব না দিয়ে টালবাহানা করছেন। সে কারণে আমরা বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার কাছে আমাদের ক্ষতিপূরণের জন্য হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
তিনি আরও বলেন, আগামী ৭ দিনের মধ্যে খনি কর্তৃপক্ষ আমাদের ৬ দফা দাবি বাস্তবায়নসহ সার্ভের মাধ্যমে পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে, আগামীতে খনি ঘেরাওসহ বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম সরকারের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলেও তিনি ফোনকল ধরেননি।
ইমরান আলী সোহাগ/এমএসএ