বেড়িবাঁধে ভাঙন, আতঙ্কে তিন ইউনিয়নের ৫০ হাজার মানুষ
সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার আনুলিয়া ইউনিয়নে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বেড়িবাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) ইউনিয়নের কাকবসিয়া গ্রামের খেয়াঘাট সংলগ্ন ৩০০ ফুট এলাকাজুড়ে এ ভাঙন দেখা দেয়।
তবে এই ভাঙন দেখা দিলেও ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ মেরামতে এখনো কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় আতঙ্কে রয়েছেন আনুলিয়া, প্রতাপনগর ও খাজরা ইউনিয়নের অন্তত ৫০ হাজার মানুষ।
খেয়াঘাটের মাঝি আব্দুল খালেক গাজী ও মো. মফিজুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, আজ রোববার ফজরের নামাজ আদায় করে খেয়াঘাটে আসি। রাতের জোয়ারের পানি নামার সঙ্গে সঙ্গেই ফাটল ধরা শুরু হয়। তার কিছুক্ষণ পরেই ইটের সোলিংয়ের রাস্তা ও যাত্রী ছাউনিসহ ঘাটের পাড়ের ৩০০ ফুট জায়গা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। দ্রুততম সময়ের মধ্যে বাঁধ সংস্কার না করলে নদী রক্ষা বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করবে।
কাকবসিয়া গ্রামের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ আইলা, আম্পান, বুলবুলসহ একাধিক দুর্যোগের আঘাতে ক্ষতবিক্ষত এসব এলাকার নদী রক্ষা বেড়িবাঁধ। আমরা ত্রাণ চাই না, টেকসই বেড়িবাঁধ চাই।
তিনি আরও বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে প্রবাল জোয়ারের আঘাতে খোলপেটুয়া নদীর কাকবসিয়া খেয়াঘাট এলাকায় ৩০০ ফুট বাঁধ ভেঙে নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। পরে নদীর পাড়ের বাসিন্দাদের চেঁচামেচিতে ঘুম ভেঙে যায়।
চেউটিয়া গ্রামের মৎস্য ব্যবসায়ী রোকন সানা অভিযোগ করে ঢাকা পোস্টকে বলেন, একই স্থানে গত তিন বছরে তিনবার ভেঙেছে। যখনই ভাঙে তখন পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা পরিদর্শন করে, সে স্থানে মাটি দিয়ে যায়। আগে থেকে কোনো কাজ তারা করে না। ভাঙনের পর দুই দিন পার হলেও পানি উন্নয়ন উন্নয়ন বোর্ডের লোক বা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের এখনো দেখা যায়নি।
আনুলিয়া ইউপির চেয়ারম্যান রুহুল কুদ্দুস বলেন, খেয়াঘাট সংলগ্ন ভাঙনকবলিত বেড়িবাঁধ দ্রুত সংস্কার না করলে আনুলিয়া, প্রতাপনগর ও খাজরা ইউনিয়নের প্রায় ৪০ গ্রামের পঞ্চাশ হাজার মানুষের প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
আশাশুনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কৃষ্ণা রায় ঢাকা পোস্টকে বলেন, খোলপেটুয়া নদীর কাকবসিয়া খেয়াঘাট এলাকায় ভাঙনের কথা শোনা মাত্রই পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অবহিত করা হয়েছে। দ্রুততম সময়ে কাজ শুরু হবে।
এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের এসও মোমেন আলী বলেন, আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ভাঙন প্রতিরোধে নকশা তৈরি করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কাছে আবেদন করা হয়েছে।
ইব্রাহিম খলিল/এমজেইউ