বিএনপি নেতাকে দুই মিনিট অপেক্ষা করতে বলায় হেনস্তার শিকার ওসি
ফেনীর সোনাগাজীতে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র জামাল উদ্দিন সেন্টুকে ঠিক মতো সময় না দেওয়ার অভিযোগে থানায় যোগদানের প্রথম দিনেই হেনস্তার শিকার হয়েছেন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুজ্জামান। শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যার দিকে থানায় এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) রাতে সোনাগাজী মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিসেবে যোগ দেন মো. কামরুজ্জামান। শনিবার বিকেলের দিকে প্রথম কর্মদিবসে উপজেলায় কর্মরত সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে এক সেবাপ্রত্যাশীর সঙ্গে কথা বলছিলেন নবাগত ওসি। এ সময় উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দিন সেন্টু ওসির কক্ষে প্রবেশ করে নিজের পরিচয় দিয়ে কথা বলতে চান। ওসি তাকে পরে আসতে বলায় ক্ষিপ্ত হয়ে থানাত্যাগ করেন সেন্টু।
কিছুক্ষণ পর উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব সোহাগ নূর ও সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মেজবাহ উদ্দিন পিয়াসের নেতৃত্বে ১০-১৫ জনের একটি দল থানায় গিয়ে ওসির কক্ষে সরাসরি ঢুকে পড়েন। তারা ওসিকে শাসিয়ে জামাল উদ্দিন সেন্টুকে অসহযোগিতা ও অসম্মানের কারণ জানতে চান। একপর্যায়ে বাকবিতণ্ডায় ওসির কক্ষে হট্টগোল শুরু হয়। পরে থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাকসুদ কামাল ও সদ্য বিদায়ী ওসি সুদ্বীপ রায় এগিয়ে এসে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের শান্ত করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করেন।
আরও পড়ুন
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দিন সেন্টু ঢাকা পোস্টকে বলেন, পুলিশ, ডিসি, এসপিসহ অন্যান্য কর্মকর্তা এখনও আওয়ামী লীগের লোকজন। বিএনপি বা জামায়াত মাইন্ডের লোকজন এখনও আসেনি। ভাইয়ের টান ভাইয়ের প্রতি তো থাকবেই। থানায় ওবায়দুল কাদেরের ঘনিষ্ঠ লোক আসায় ওসি তাকে নিয়ে অনেক ব্যস্ত হয়ে পড়েন। তিনি (ওসি) নিজেও আওয়ামী লীগের লোক। সেখানে আমার চেয়েও ওবায়দুল কাদেরের ওই লোক ওসির কাছে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তাকে সময় দিলেও তিনি আমাকে দেননি।
থানায় হট্টগোল প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিএনপির এ নেতা বলেন, নেতাকর্মীরা ওসির কাছে সালিশ করতে পারেন কি না, জানতে চেয়েছেন। কোনো হট্টগোল করেননি। পারিবারিক সমস্যা নিয়ে ওসি সালিশ করবেন, এটি হয় নাকি। সালিশে গুরুত্ব দিলে রাজনৈতিক দলের নেতারা আসলে তাদের গুরুত্ব দেবে কীভাবে?
এ বিষয়ে সোনাগাজী মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান ঢাকা পোস্টকে বলেন, সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষ করার পর এক সেবাপ্রত্যাশীর অভিযোগ শুনছিলাম। এমন সময় আমার কক্ষে জামাল উদ্দিন সেন্টু আসলে হ্যান্ডশেক করে বসতে বলি। সেবাপ্রত্যাশী ওই ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলতে উনাকে (সেন্টু) আমি দুই মিনিট অপেক্ষা করতে বলি।
‘পরবর্তীতে উনি না বসে থানা থেকে চলে যাওয়ার পরপরই ১০-১৫ জনের একটি দল এসে হট্টগোল শুরু করে। একপর্যায়ে আমার কক্ষে এসে উচ্চ স্বরে বাক্যবিনিময় করে। বিএনপিনেতাকে সময় না দেওয়া বা কথা না বলার অভিযোগ সত্য নয়।’
তারেক চৌধুরী/