বিজিএমইএ’র সিদ্ধান্তের পরেও আশুলিয়ার ৪০ পোশাক কারখানায় কর্মবিরতি
শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবিতে করা আন্দোলনের মুখে তাদের টিফিন বিল ও হাজিরা বোনাস বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)। আজ (মঙ্গলবার) থেকে ঢাকার সাভার ও আশুলিয়ায় সব তৈরি পোশাক কারখানা খুলে দেওয়ার আহ্বানও জানানো হয়। কিন্তু এ সিদ্ধান্তের পরেও আশুলিয়ায় ৪০ পোশাক কারখানায় কর্মবিরতি পালন করেছেন শ্রমিকরা।
তবে আশুলিয়ায় বেশিরভাগ পোশাক কারখানার শ্রমিকরা কাজে যোগ দিয়েছেন। এছাড়া কারখানার সামনে নিরাপত্তার জন্য মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ।
মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) সকালে আশুলিয়ার পল্লীবিদ্যুৎ, বাইপাইল, ডিইপিজেড, জামগড়া, নরসিংপুর, নিশ্চিন্তপুর এলাকায় পোশাক কারখানায় কাজে যোগ দিতে দেখা যায় শ্রমিকদের। এদিকে এদিন সকাল ৯টার দিকে নরসিংহপুর এলাকায় কর্মবিরতি শুরু করেন অনেক শ্রমিক। এরপর একে একে ৪০টি পোশাক কারখানা সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে কারখানা কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে, সোমবার বিকেলে বিজিএমইএ ভবনে কারখানার মালিক, সেনাবাহিনী, রাজনীতিবিদ ও স্থানীয় পোশাক খাত সংশ্লিষ্ট লোকজন সভায় উপস্থিত ছিলেন। সেখানে নেওয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আজ পোশাক কারখানায় শ্রমিকরা কাজে যোগ দেন। কিন্তু আশুলিয়া-ডিইপিজেড-আব্দুল্লাহপুর সড়কের নরসিংহপুর এলাকায় শারমিন গ্রুপ ও হা-মীম গ্রুপের বড় দুইটি পোশাক কারখানার ভেতরে কর্মবিরতি শুরু করেন শ্রমিকরা। পরে আল-মুসলিম ও ডেকো গ্রুপসহ অন্তত ৪০টি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা কর্মবিরতিতে যান। এরপরে কারখানাগুলোতে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়।
বাংলাদেশ গার্মেন্ট ও সোয়েটার্স শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের আইন বিষয়ক সম্পাদক খায়রুল মামুন মিন্টু বলেন, গতকাল বিজিএমইএ’তে বৈঠক হয়েছে। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়, হাজিরা-বোনাস বর্তমানে যা আছে তার থেকে আরও ২২৫ টাকা ও টিফিন ফি ১০ টাকা বাড়বে এবং নিয়োগের ক্ষেত্রে নারী পুরুষের বৈষম্য থাকবে না। সেখানে যোগ্যতার ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া এবং শ্রমিকদের কোনো কালো তালিকা থাকলে সেটা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এমন সিদ্ধান্তে আজ সকালে শ্রমিকরা কাজে যোগ দেন। কিন্তু তারপরেও দুইটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা কর্মবিরতি পালন করেন। পরে আরও কারখানার শ্রমিকরা কর্মবিরতি শুরু করেন বলে জানা যায়।
আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম ঢাকা পোস্টকে বলেন, সকালে শ্রমিকরা কারখানায় কাজে যোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ৪০টি পোশাক কারখানায় কর্মবিরতিতে যান শ্রমিকরা। পরে সেসব কারখানায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। তবে সড়ক কিংবা মহাসড়কে শ্রমিকরা কেউ অবস্থান নেননি। কারখানার ভেতরেই শ্রমিকরা অবস্থান করেন।
তিনি আরও বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন আছে। পাশাপাশি সেনাবাহিনীর টহলও অব্যাহত আছে।
লোটন আচার্য্য/এফআরএস