সেই নাজিম উদ্দিনকে ইউএনও হিসেবে পদায়নের পরদিনই প্রত্যাহার
মধ্যরাতে ঘরের দরজা ভেঙে সাংবাদিককে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্যাতনের ঘটনায় করা মামলায় অভিযুক্ত কুড়িগ্রামে তৎকালীন জেলা প্রশাসনের রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর (আরডিসি) নাজিম উদ্দিনকে কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে (ইউএনও) হিসেবে পদায়ন করা হয়। মামলার বিষয়টি প্রকাশ্যে এলে এর এক দিন পর ওই কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
রোববার (০৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় সিনিয়র সহকারী সচিব মোহাম্মদ মামুন শিবলী স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে প্রত্যাহারের বিষয়টি জানানো হয়।
এর আগে, শনিবার (০৭ সেপ্টেম্বর) ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী কমিশনার কাউছার হামিদ স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে নাজিম উদ্দিনকে পদায়ন দেওয়া হয়েছিল।
জানা গেছে, কুড়িগ্রামের তৎকালীন জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীনের নামে সরকারি পুকুরের নামকরণ নিয়ে সংবাদ প্রকাশের জেরে ২০২০ সালের ১৩ মার্চ দিনগত মধ্যরাতে অনলাইন সংবাদমাধ্যম বাংলা ট্রিবিউনের কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি আরিফকে তার বাড়ির দরজা ভেঙে তুলে নিয়ে যান জেলা প্রশাসনের কয়েকজন ম্যাজিস্ট্রেট ও আনসার সদস্য। সেখানে নেতৃত্ব দেন তৎকালীন আরডিসি নাজিম উদ্দিন।
আরও পড়ুন
পরে ওই সাংবাদিককে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে নিয়ে বিবস্ত্র করে নির্যাতন করে মাদক মামলায় কারাগারে পাঠানো হয়। এ ঘটনায় দেশজুড়ে প্রতিবাদের ঝড় উঠলে এক দিনের মাথায় জামিনে মুক্তি পান আরিফ। পরবর্তীতে আরডিসি নাজিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে সাংবাদিক আরিফকে হেনস্থার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে নিম্নধাপে নামিয়ে দেওয়া হয়। সে সময় নাজিম উদ্দিনের নামে একটি মামলাও করেন আরিফ।
ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার মো. সাবিরুল ইসলামের কাছে ফৌজদারি মামলার আসামি হওয়া সত্ত্বেও ইউএনও হিসেবে পদায়নের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নাজিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে মামলা চলমান থাকার বিষয়টি আমার জানা ছিল না। পরে মামলাটি পিবিআই-এ তদন্তাধীন আছে বলে জানতে পেরে আমি ফোনে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে বিষয়টি জানাই। এর পরিপ্রেক্ষিতে তার পদায়নের বিষয়টি প্রত্যাহার করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে জানা গেছে, কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলার ইউএনওর পদ থেকে প্রত্যাহারের পর নাজিম উদ্দিনকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের উপ-পরিচালক হিসেবে বদলি করা হয়েছে।
মোহাম্মদ এনামুল হক হৃদয়/এফআরএস