‘কুষ্টিয়া থানা আমি মাজেদ নেতৃত্ব দিয়ে ভেঙেছি’
‘শহীদদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে শেখ হাসিনার সরকার পালাতে বাধ্য হয়েছে। কুষ্টিয়ায় শেষের দিন, যেদিন ক্ষমতা হস্তান্তর হয়, এখানে আন্দোলনকারীরা আছে তাদের জিজ্ঞাসা করেন, কুষ্টিয়া থানা আমি মাজেদ নেতৃত্ব দিয়ে ভেঙেছি।’
কুষ্টিয়া সদর উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক আব্দুল মাজেদের এমন বক্তব্যের ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। এ নিয়ে চলছে নানা আলোচনা সমালোচনা। গত বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সদর উপজেলার খাজানগর ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসায় চাঁদাবাজি রোধে চালকল মালিক ও স্থানীয়দের নিয়ে অনুষ্ঠিত সমাবেশে এ বক্তব্য দেন আব্দুল মাজেদ।
ভিডিওতে মাজেদকে বলতে শোনা যায়, আমার তিনটা ছেলে, আমার পরিবার। আপনাদেরই ভাই, আপনাদেরই চাচি। সে নিজেও এই আন্দোলন-সংগ্রামে যুক্ত হয়েছে। আপনারা আপনাদের ছেলেপেলেদের মারেও ঠেকাতে পারেন নাই। রক্তে যখন টান দেয়, তখন জনগণের স্রোত ঠেকানো যায় না। তাই জনগণের স্রোতে হাসিনা চলে গেছে।
তিনি আরও বলেন, আমি আপনাদের বলব আপনারা এমন কিছু করবেন না, যাতে কুষ্টিয়ায় আমাদের দম বন্ধ হয়ে যায়। ক্ষমতা চিরস্থায়ী না। জনগণ ভোট না দিলে বিএনপি সরকার গঠন করতে পারবে না। কিন্তু আমাদের দম যেন বন্ধ না হয়। হানিফ, আতা ও খুনি হাসিনার মতো যেন পালাতে না হয়।
বক্তব্যের বিষয়ে জানতে সদর উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক আব্দুল মাজেদের মোবাইলে ফোন দিলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিন বলেন, এ ধরনের বক্তব্য যদি তিনি দিয়ে থাকেন, তাহলে ঠিক করেননি। বিষয়টি কেন্দ্রকে অবগত করা হবে। কেন্দ্র নির্দেশ দিলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হওয়ার পর কুষ্টিয়া মডেল থানায় ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়। অস্ত্র লুটপাট ছাড়াও থানায় অগ্নিসংযোগ করা হয়। এ ঘটনায় ৯ আগস্ট কুষ্টিয়া মডেল থানায় ৮ থেকে ১০ হাজার জনকে আসামি করে মামলা করেন থানার পরিদর্শক (অপারেশন) এস এম আব্দুল আলিম। এজাহারে থানায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ আনা হয়।
তবে ঘটনার এক মাস পার হলেও এই মামলায় পুলিশ এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি বলে জানিয়েছেন কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজুল হক চৌধুরী।
তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, থানা ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনায় মামলা হয়েছে। এ মামলায় এখনো পর্যন্ত কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
রাজু আহমেদ/আরএআর