হত্যার পর মরদেহ গুম, সাবেক গণপূর্তমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা
সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এবং তার ব্যক্তিগত দুই সহকারীসহ ১০ জনের নামে হত্যার পর মরদেহ গুম করার অভিযোগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানায় মামলা হয়েছে। রোববার (১ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে মরদেহ গুমের শিকার হওয়া ওই ব্যক্তির স্ত্রী নাছিমা ইসলাম বাদী হয়ে এই মামলা করেন।
সাবেক গণপূর্তমন্ত্রীর নির্দেশে ২০১২ সালের ১৩ অক্টোবর জেলা শহরের কাজীপাড়ার বাসিন্দা আতিকুল ইসলামকে হত্যা করে তার মরদেহ ঘুম করা হয়েছে অভিযোগ এনে তার স্ত্রী নাছিমা ইসলাম বাদী হয়ে এই মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও সাত-আটজনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন—সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক গণপূর্তমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী এম এ এইচ মাহবুব আলম ও আরেক ব্যক্তিগত সহকারী আবু মুসা আনসারী, মোকতাদিরের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিতি ও তার গাড়ি বহরের সঙ্গে চলাফেরা করা ব্যক্তি চিনাইনর গ্রামের বাসিন্দা ঠিকাদার হামদু মিয়া, কাজীপাড়ার সেলিম মিয়া ও তার ভাই জসিম মিয়া, একই এলাকার বাসিন্দা ফাইভ স্টার ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও ব্যাংক কর্মকর্তা আতাউর রহমান ভুঁইয়া ওরফে শাহীন, কলেজপাড়ার আবুল কাশেম, মধ্যপাড়ার জিলানী, মেড্ডার জাকির মিয়া।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, মোকতাদির চৌধুরী তৎসময়ে দিনের ভোট রাতে ছিনতাই করে ব্যালট বাক্স ভরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর ও বিজয়নগর) সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। তৎকালীন সময়ে ৩ নম্বর আসামি সেলিম মিয়ার সঙ্গে কাজীপাড়ার বাসিন্দা আতিকুল ইসলামের জমি-সংক্রান্ত বিরোধ দেখা দেয়। সেলিম ২০১১ সালের ১৭ অক্টোবর সাবেক গণপূর্তমন্ত্রী মোকাতদিরের নির্দেশে সদর থানায় একটি মামলা হয়। ২০১২ সালের ১৩ অক্টোবর বেলা ৩টার দিকে মোকতাদিরের নির্দেশে অন্যান্য আসামিরা (আসামি সেলিম ও জসিম) দুটি সাদা মাইক্রোবাসে এসে কাজীপাড়ায় আতিকুলের বাসায় যান। সেখানে গিয়ে তারা বলেন, সাবেক গণপূর্তমন্ত্রী মোকতাদির সালাম দিয়েছেন এবং আতিকুলকে তাদের সঙ্গে মোকতাদিরের বাসায় যেতে বলেছেন। বাড়ি থেকে বের হয়ে রাস্তায় গেলে মোকতাদিরের ব্যক্তিগত সহকারী আবু মুছা আনসারীসহ অন্যান্য আসামিরা আতিকুলকে মুখে চেপে ধরে একটি সাদা মাইক্রোবাসে তুলি নিয়ে যান। ভুক্তভোগীর পরিবারের সদস্যরা সদর থানায় অভিযোগ দিতে গেলেও মোকতাদিরের হস্তক্ষেপে পুলিশ বিষয়টি আমলে নেয়নি। দীর্ঘ ১২ বছর পর আতিকুল ইসলামকে পাওয়া যায়নি। মোকতাদিরের নির্দেশে মামলার আসামিরা আতিকুলকে নির্জন স্থানে নিয়ে নির্যাতন করে হত্যার পর মরদেহ গুম করেছেন। স্বৈরাচারী সরকারের পতন হওয়ায় মামলা করতে বিলম্ব হয়েছে বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।
সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোজাফফর হোসেন বলেন, সাবেক গণপূর্তমন্ত্রীসহ ১০ জনের নামে এক ব্যক্তিকে অপহরণের পর হত্যা করে মরদেহ গুমের অভিযোগ এনে থানায় মামলা হয়েছে।
মাজহারুল করিম অভি/এএমকে